জল কমেনি ফুলহারের। উল্টে গত ২৪ ঘন্টায় ৩ সেন্টিমিটার জল বেড়েছে। মঙ্গলবারও মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর ও রতুয়ায় বিপদসীমার উপর দিয়েই বইছে ফুলহার। দুটি এলাকার ১০টি গ্রামের বাসিন্দাদের জলবন্দি দশাও কাটেনি। জল ঢুকে পড়ায় হরিশ্চন্দ্রপুরের দিয়ারা এলাকার ৫০টি পরিবার বাড়ি ছেড়ে উঁচু রাস্তার উপর আশ্রয় নিয়েছে। চলছে নদী ভাঙনও। হরিশ্চন্দ্রপুরের মিহাহাটে বাঁধে ভাঙন রোধের কাজ গত মাসেই ফুলহারের ভাঙনে তলিয়ে যায়। এবার জল সরাসরি বাঁধে ধাক্কা দিতে শুরু করায় বাঁধ বিপন্ন হয়ে পড়েছে। রতুয়ার দেবীপুরে বাঁধের ভাঙন শুরু হওয়ায় বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। উন্নতি হয়েছে ডুয়ার্সের ওদলবাড়ির পরিস্থিতি। সেচ দফতরের তরফে সেখানে বাঁধ মেরামতির কাজ চলছে। সেনা বাহিনীর সাহায্যে ঘুরিয়ে দেওয়া সম্ভব হয়েছে ঘিস নদীর অভিমুখ। সেচ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন ফুলহারের জলস্তর দাঁড়িয়েছে ২৭.৭৪ মিটারে। |
অসংরক্ষিত এলাকায় বিপদসীমা এবং সংরক্ষিত এলাকায় হলুদসীমা থেকে ৩১ সেন্টিমিটার বেশি। সেচ দফতরের এক আধিকারিক বলেছেন, অসংরক্ষিত এলাকায় নদী এদিনও বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে। তবে গত দুদিনের তুলনায় জল স্থিতিশীল। দেবীপুরে ভাঙন রোধের চেষ্টা চালানো হচ্ছে। গত মাসেই ফুলহারের উপচে পড়া জলে জলবন্দি হয়ে পড়েছিলেন হরিশ্চন্দ্রপুর ও রতুয়ার ১০টি এলাকার বাসিন্দারা। ফের বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন ওই বাসিন্দারা। জল বাড়তে থাকায় রতুয়ার দেবীপুর, কমলপুর, লক্ষীপুর, সূর্যাপুর এলাকায় ভাঙন চলছে। সূর্যাপুর এলাকায় কিছু আমবাগান ও জমি তলিয়ে গিয়েছে। মিহাহাটে ভাঙন রোধে সেচ দফতর কোনও ব্যবস্থা না নেওয়ায় ক্ষুব্ধ হরিশ্চন্দ্রপুরের ফরওয়ার্ড ব্লকের বিধায়ক তজমূল হোসেন। তিনি বলেন, “এই বাঁধ ভাঙলে সংরক্ষিত এলাকা প্লাবিত হয়ে যাবে। ভাঙনরোধে যা কাজ হয়েছিল তা ফুলহারে তলিয়ে গিয়েছে।” জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানান, দুটি ব্লকের কর্তাদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। অন্য দিকে বন্যা পরিস্থিতি ক্রমশ স্বাভাবিক হচ্ছে ডুয়ার্সের ওদলাবাড়িতে। এদিন ওদলাবাড়ির বন্যা কবলিত এলাকাগুলির ত্রাণ শিবির থেকে বাসিন্দারা বাড়িতে ফিরতে শুরু করেছেন। ঘিস নদীর অভিমুখকে ঘোরানোর কাজ পুরোপুরি শেষ হওয়ায় সেনাবাহিনীও ফিরে গিয়েছে। ঘিস নদীর ভেঙে যাওয়া বাঁধের মেরামতের কাজ শুরু হয়েছে। উত্তরবঙ্গ বন্যা নিয়ন্ত্রণ কমিশনের নির্বাহী সদস্য দৌতম দত্ত জানান, নদীকে ফের তার নিজ গতিপথে পাঠানো সম্ভব হয়েছে। এবার বাঁধ মেরামতির কাজও দ্রুততার সঙ্গে শুরু হয়েছে। মালবাজারের বিডিও প্রেমবিভাস কাঁসারি এই দিন বলেন, “ওদলাবাড়ির বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে এলেও কোনও ঝুঁকি না নিয়ে প্রশাসন এখনও সজাগ রয়েছে।” |