|
|
|
|
সম্পাদক সমীপেষু ... |
শুধু নিরাপত্তা কর্মীদের দোষ নয় |
সাউথ সিটি আবাসনের ছাদ থেকে মরণঝাঁপ (১-৯) খবরের প্রেক্ষিতে কিছু বিষয়ের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণের উদ্দেশ্যে এই চিঠির অবতারণা। খবরের গতি প্রকৃতিতে মনে হচ্ছে, শেষ পর্যন্ত সিকিউরিটি গার্ডদের বলির পাঁঠা করে এ ব্যাপারে হাত ধুয়ে ফেলা হবে। আবাসনে চুরি, ডাকাতি বা এ ধরনের দুর্ঘটনা থেকে পরিত্রাণের জন্য বিষয়টির গভীরে না-ঢুকে নীতি প্রণেতারা বা পুলিশ প্রশাসন দায় এড়াতে চাইছেন। অথচ এ ক্ষেত্রে সমস্যার গভীরে গিয়ে এ ধরনের দুর্ঘটনা থেকে বাঁচার উপায় খুঁজতে হবে। অপেক্ষাকৃত ভাল লোকেশনে, নির্ঝঞ্ঝাট বসবাসের স্বার্থে, নানা বাধ্যবাধকতার শর্ত মেনেও অ্যাপার্টমেন্ট-নির্ভর জীবন যাপনই এখন রীতি। এই জোটবদ্ধ বসবাস-পদ্ধতিতে আবাসন মালিকানা পরস্পর নির্ভরশীল। বেশ কিছুটা শর্তাধীনও বটে। নিজ অ্যাপার্টমেন্টে আপাতস্বাধীন হলেও, সমগ্র আবাসনের প্রেক্ষিতে যৌথ বোঝাপড়ার জীবনযাপনই হল এখানে বসবাসের অন্যতম শর্ত। বসবাসের নিরাপত্তারও একমাত্র শর্ত হচ্ছে সমিতিকে মেনে চলা। প্রয়োজনে সমিতিকে সক্রিয় করে তোলা। এ ধরনের আবাসনের ভিতরটা নিজস্ব আর বাইরেটা এজমালি হলেও, সুস্থ বসবাসের স্বার্থে সেই ভিতরের অধিকারও শেষ বিচারে অবাধ নয়।
আইনের ভাষায়, অ্যাপার্টমেন্ট মালিকানা আ্যাবসলিউট (অনিয়ন্ত্রিত) নয়, এক্সক্লুসিভ (সংরক্ষিত অধিকার)। রবীন্দ্রনাথের ভাষায়, ইংরেজিতে যাকে ‘ফ্রিডম’ বলে তা আমাদের নেই। বাংলায় যাকে ‘স্বাধীনতা’ বলে তা আমাদের আছে। এই হচ্ছে আবাসন জীবন। তাই, এখানে আবাসের মালিকানা অবাধ নয়। নিজ সম্পত্তির (একক) ক্ষেত্রে যে অর্থে মালিকানা নিরঙ্কুশ হয়, তেমন অবাধ মালিকানা এই অ্যাপার্টমেন্ট মালিকানায় নেই (WBAOA ১৯৭২ দ্রষ্টব্য)। মূলত এজমালি এলাকা বা সবার ব্যবহার্য এলাকা ও সুযোগসুবিধার ক্ষেত্রগুলির জন্য অ্যাপার্টমেন্ট মালিকানা অবাধ নয়। নিরাপত্তার জন্য করণীয় মূল বিষয়গুলি এখানেই লুকিয়ে রয়েছে।
আবাসনে বসবাসের নিরাপত্তা নিয়ে এ যাবৎ যত প্রশ্ন উঠেছে, তা মূলত দি ওয়েস্ট বেঙ্গল অ্যাপার্টমেন্ট ওনারশিপ অ্যাক্ট ১৯৭২-এর খামতির জন্যই দেখা দিয়েছে। এই আইনে অ্যাপার্টমেন্ট মালিক ও তাঁর পরিবার-পরিজনের বসবাসের সুযোগ ছাড়াও ভাড়াটিয়া, পেয়িং গেস্ট ইত্যাদির বসবাসে বাধা নেই। এমনকী গেস্ট হাউস বা সার্ভিস অ্যাপার্টমেন্ট যা হোটেল ব্যবসার সমতুল্য, তাতেও বাধা দেওয়ার উপযুক্ত ব্যবস্থা রাখা হয়নি। |
|
একটি আবাসনে যদি ভিন্ন প্রয়োজনে, ভিন্ন সময়কালের জন্য মানুষের বসবাসের অবাধ সুযোগ দেওয়া হয় শেষ বিচারে আসল মালিকদের নিরাপত্তাই তাতে বিঘ্নিত হয়। মালিক ও তাঁর পরিবারের ‘ইজমেন্ট রাইট’ এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কারণ, মালিকরা ছাড়া, অন্য কারও দায় নেই বাই-লজ মেনে চলার বা নিরাপত্তার জন্য পারস্পরিক স্বার্থরক্ষার শর্তগুলি মেনে চলার। কোথাও কখনও নিরাপত্তারক্ষীদের গাফিলতি থাকলেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ফাটল তৈরি হয় এ ধরনের নানা উদ্দেশ্যে অ্যাপার্টমেন্ট ব্যবহারের জন্য।
অন্যান্য রাজ্যেও, সংশ্লিষ্ট এই আবাসন আইনের খামতির জন্য মালিক-সমিতিকে আদালতের হস্তক্ষেপ চাইতে হচ্ছে। বিশেষত, সার্ভিস অ্যাপার্টমেন্ট বসবাসের নিরাপত্তার ক্ষতি করছে। বিশেষ ধরনের জোটবদ্ধ বসবাস অর্থাৎ মালিকানাভিত্তিক অ্যাপার্টমেন্ট-নির্ভর বসবাসের ক্ষেত্রে বিশেষ মালিকানার প্রশ্নটি ট্রান্সফার অব প্রপার্টি অ্যাক্ট ১৮৮২-র চাপে মাথা তুলতে পারেনি। এই বিশেষ বসবাস ক্ষেত্রে মালিকানা প্রথাটি কী ভাবে বিচার করা হবে বা তার জন্য বাস্তব প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট আইনগুলির কোথায় সংশোধন দরকার তা নিয়ে আইন প্রণেতারাও বিশেষ নজর দিচ্ছেন না। তাই, আবাসনের নানা রকম ব্যবহার, বাণিজ্যিক ব্যবহার ওই মালিকানার শক্তিতে চাপা পড়ে যাচ্ছে। তাই, আমার নির্দিষ্ট প্রস্তাব জানাচ্ছি
১) মালিকানা-ভিত্তিক সব আবাসনই সংশ্লিষ্ট আইন (WBAOA ১৯৭২)-এর আওতায় এনে নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করা হোক।
২) উক্ত আইনটি উপযুক্ত সংশোধন করে অ্যাপার্টমেন্টের বাণিজ্যিক ব্যবহার বন্ধ করা হোক।
৩) অ্যাপার্টমেন্ট ভাড়া দেওয়া, পেয়িং গেস্ট রাখা, গেস্ট হাউস বা সার্ভিস অ্যাপার্টমেন্ট বন্ধের ব্যবস্থা হোক।
৪) এই ধরনের বাণিজ্যিক অ্যাপার্টমেন্টগুলিতে (যে অ্যাপার্টমেন্ট থেকে রোজগার হয়) নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য দৈনন্দিন আবাসিকের নাম, ঠিকানা-সহ লোকাল থানায় বিবরণ জমা দেওয়ার ব্যবস্থা হোক। এ সব ক্ষেত্রে লাইসেন্স প্রথা চালু হোক।
৫) বাড়তি পুরকর ও রাজস্ব আদায়ের জন্য এই সব অ্যাপার্টমেন্ট চিহ্নিত করে বর্ধিত কর আদায় করা হোক।
পরিশেষে জানাই, বহু ক্ষেত্রে একই আবাসন কমপ্লেক্সে বহু ধরনের ব্যবহারের জন্য অ্যাপার্টমেন্ট থাকায়, শুধু মাত্র মালিক-আবাসিকদের নিরাপত্তাই ব্যাহত হচ্ছে না, শহরের নিরাপত্তা বা দেশের নিরাপত্তারও বিঘ্ন ঘটছে।
পুলিশ-প্রশাসনের পক্ষে আরও নিরাপত্তার জন্য যে সব পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে, তাতে খরচ বাড়ছে, কার্যকর ব্যবস্থা গড়ে উঠছে না। কারণ, গোড়ায় গলদ। যে কেউ, যে ভাবেই হোক যত দিন বসবাস করতে পারবে, তত দিনই আবাসনে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা সম্ভব নয়।
আবাসন এখন শান্তির নীড় নয়। নানা ধরনের বাণিজ্যিক ফায়দা তোলাই এখন স্বার্থান্বেষীদের একমাত্র উদ্দেশ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর জন্য, কতিপয় অ্যাপার্টমেন্ট মালিকও যেমন দায়ী, তেমনই নীতি প্রণেতারাও বসবাসের এই সমস্যার প্রতি এখনও মনোযোগ দিচ্ছেন না। সহজ রাস্তায় কিস্তিমাত করার জন্য, সিকিউরিটি রক্ষী বদলানো আর সিসিটিভি বসানোর কাজই একমাত্র করণীয় বলে ধারণা দেওয়া হচ্ছে। দয়া করে শুধুমাত্র নিরাপত্তা রক্ষীদেরই বলির পাঁঠা করবেন না।
সুব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়। কলকাতা-৭০০ ০০৩
|
এ ভাবেও অটো চালানো যায়! |
অটোরাজ’ প্রতিবেদনটির (২৯-৮) প্রেক্ষিতে বলি, কিছু দিন আগে বেঙ্গালুরুতে যাই। রাত ১১টার সময় এয়ারপোর্টে পৌঁছে চিন্তায় পড়ি এত রাতে অটো বা ট্যাক্সি পাব? এয়ারপোর্ট থেকে বেরিয়ে দেখি, বুকে ‘প্যাসেঞ্জার গাইড ব্যাজ’ পরে অনেকে দাঁড়িয়ে আছেন। এক জন গাইডের কাছে অটোতে হোটেলে যাব বলার সঙ্গে সঙ্গেই ওই গাইড একটি অটোর কাছে নিয়ে গেলেন। রওয়ানা হওয়ার আগে একটি কার্ডে আমাদের সমস্ত বিবরণ লিখে নিয়ে অটোচালকের কাছে জমা দিলেন। এবং অটোচালকের কাছ থেকে একটি কার্ড নিয়ে আমাদের দিলেন। ওই কার্ডে অটোচালকের নাম, ঠিকানা, মোবাইল নং, গাড়ির নং, প্রয়োজনে যে নম্বরের সঙ্গে যোগাযোগ করা যাবে, সব দেওয়া ছিল।
গাড়ি ছাড়ার কয়েক মিনিটের মধ্যে মোবাইলে ফোন এল। জিজ্ঞাসা করা হল, আমার কোনও অসুবিধা হচ্ছে কি না। পনেরো মিনিট পর আবার ফোন, আবারও সেই প্রশ্ন। হোটেলে নেমে অটোচালক আমার জিনিসপত্র নামিয়ে দিলেন। আমি ২০ টাকা বখশিস দিতে গেলে প্রত্যাখ্যান করলেন। যাওয়ার সময় বলে গেলেন, প্রয়োজনে তাঁকে যেন ডাকা হয়।
বেঙ্গালুরুতে যে ক’দিন ছিলাম, অটোতেই যাতায়াত করি। অটোচালকদের অমানবিক ব্যবহার, সওয়ারি বা পথচারীদের সঙ্গে আপত্তিকর ব্যবহার, বেশি ভাড়া দাবি, ট্রাফিক আইন না-মেনে বেপরোয়া গাড়ি চালানোর কোনও সমস্যাই দেখিনি। অটোচালকরা প্রত্যেক দিন কিছু টাকা ইউনিয়নের কাছে জমা রাখেন। সুস্থ জীবনের জন্য অটো চালকদের সহযোগিতা করা হয়। ওয়েলফেয়ার ফান্ডের মাধ্যমে ছোট ছেলেমেয়েদের বিভিন্ন উপহার দেওয়া হয়। অটোচালক বা তাদের পরিবারের কেউ অসুস্থ হলে চিকিৎসার ভাল বাবস্থা করা হয়। কেউ অসুস্থ হয়ে অটো চালাতে না-পারলে তাদের আর্থিক সাহায্য দেওয়া হয়। ওঁদের সুন্দর জীবনযাত্রা দেখে মুগ্ধ হলাম। ওঁরা পারলে আমরা কেন পারব না?
বীরেন সরকার। অরবিন্দনগর, বাঁকুড়া
|
বুকিং কাউন্টার |
মেদিনীপুর শহরের উপর দিয়ে রেললাইন চলে গেছে। লাইনের পুব দিকে আদি মেদিনীপুর শহর। আর পশ্চিম দিকে নতুন শহর।
মেদিনীপুর স্টেশনে বুকিং কাউন্টার কিন্তু পুব দিকে। পশ্চিম দিকের লোকেদের ট্রেনে কোথাও যেতে হলে প্রথমে ওভারব্রিজ পেরিয়ে বুকিং কাউন্টারে আসতে হবে। এর পর যদি নির্ধারিত ট্রেন ২ নং বা ৩ নং প্ল্যাটফর্মে আসে, তবে আবার ওভারব্রিজ পেরিয়ে ট্রেন ধরতে হবে। রেল কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ, পশ্চিম দিকে একটা বুকিং কাউন্টার খোলা হোক।
সঞ্জয় চৌধুরী। ইন্দা, খড়্গপুর |
|
|
|
|
|