বাস ধর্মঘটে যাত্রী দুর্ভোগ
তদিন খানাখন্দে ভরা জাতীয় সড়কে যানজটের নরক যন্ত্রণা ছিলই। সোমবার থেকে উত্তরবঙ্গ জুড়ে সড়ক সংস্কারের দাবিতে বেসরকারি বাস ধর্মঘটের ফলে নিত্যযাত্রীদের ভোগান্তি চরমে উঠল। জলপাইগুড়ি থেকে শিলিগুড়ি, ডুয়ার্স, শিলিগুড়ি-কোচবিহার, উত্তরবঙ্গের কোনও রুটে বেসরকারি বাস চলেনি। ধর্মঘটের জন্য ৪৬টি বাড়তি বাস চালান উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগম কর্তৃপক্ষ। এমনিতে গড়ে ৪৪০টি বাস রাস্তায় চললেও এ দিন বিকাল পর্যন্ত ৪৮৬টি বাস রাস্তায় নামানো হয়। নিগমের ম্যানেজিং ডাইরেক্টর সি মুরুগন বলেন, “সাধারণ যাত্রীদের সাধ্যমতো পরিষেবা দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে।” ডিজেলের মূল্য বৃদ্ধির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বাসের বাড়া বৃদ্ধির পাশাপাশি বেহাল জাতীয় সড়ক মেরামতির দাবিতে অর্নিদিষ্টকালের ধর্মঘট শুরু করেছেন বাস মালিকেরা। উত্তরবঙ্গের ইন্টার ডিস্ট্রিক্ট বাস ও মিনিবাস ওর্নাস অ্যাসোসিয়েশন সম্পাদক প্রণব মানি বলেন, “আমাদের পিঠ দেওয়ালে ঠেকেছে। এই হাল ৬ মাস ধরে চলছে। কারও হুঁশ নেই। বাসগুলির যন্ত্রপাতি ভেঙে শেষ। রাস্তা ঠিক না হলে বাস নামবে না।” এ দিন সকাল থেকে নিউ ময়নাগুড়ি, জলপাইগুড়ি রোড, নিউ দোমহনি, বেলাকোবা সহ বিভিন্ন স্টেশনে ছিল উপচে পড়া ভিড়। ট্রেনের অপেক্ষায় থাকা যাত্রীদের অভিযোগ, বেশিভাগ যাত্রীর অফিস স্টেশন থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে। বাস না থাকায় ট্রেন থেকে নেমে কেমন করে গন্তব্যে পৌছবেন সেটাই বুঝতে পারছেন না। কোচবিহারে স্টেশন মোড়, পাওয়ার হাউস, চৌপতি, নিউ টাউন, কাছারিমোড় সর্বত্র বাসের জন্য যাত্রীদের ভিড় ছিল। অধিকাংশকেই ট্রেন, ছোট গাড়িতে গন্তব্যে পৌঁছতে হয়েছে। এনবিএসটিসি-র বাসগুলিতে গাদাগাদি করে যাতায়াত করতে বাধ্য হন নিত্যযাত্রীরা। তুফানগঞ্জ, মাথাভাঙা, দিনহাটার বিভিন্ন রুটেও বাসে উপচে পড়া ছিল। বাস মালিকদের সঙ্গে পরিবহণ ধর্মঘটে সামিল হয়েছে উত্তর দিনাজপুরের বাস, ট্রেকার ও অটো মালিকদের সংগঠনও। প্রতিদিন রায়গঞ্জ, ইটাহার, কালিয়াগঞ্জ ও ইসলামপুর থেকে জেলার বিভিন্ন রুটে ও বিভিন্ন জেলার ৫০০ বেশি বেসরকারি বাস, ট্রেকার ও অটো যাতায়াত করে। এ দিন কিছুই চলেনি। রাধিকাপুর-কাটিহার রুটের তিনজোড়া প্যাসেঞ্জার ট্রেনেও যাত্রীর ভিড় ছিল অত্যন্ত বেশি। জলপাইগুড়ি-শিলিগুড়ি রুটে সারা দিনে ছোটবড় মিলিয়ে ৫৭টি বেসরকারি বাস যাতায়াত করে। এনবিএসটিসি-র বাস চলে ৪টি। তার মধ্যে একটি যান্ত্রিক কারণে এ দিন চলাচল করেনি। এতে যাত্রীদের দুর্ভোগ আরও বেড়েছে। গত বুধবার রাত থেকে ৩১-ডি জাতীয় সড়কে যে যানজট চলছে সোমবারেও তা কাটেনি। এ দিন বেসরকারি বাস চলাচল না করলেও রাস্তা জুড়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে ছিল পণ্য বোঝাই ট্রাক। একই অবস্থা অন্য জাতীয় সড়কগুলির। এই যানজটের কারণে কারখানায় কাঁচা পাতা পৌছে দিতে না পেরে মাথায় হাত পড়েছে ক্ষুদ্র চা চাষিদের। জলপাইগুড়ি জেলা ক্ষুদ্র চা চাষি সমিতির সাধারণ সম্পাদক বিজয়গোপাল চক্রবর্তী বলেন, “জাতীয় সড়কে যানজটের কারণে কোনও এলাকা থেকে চা পাতা কারখানায় নিয়ে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না। মাঝরাস্তায় ট্রাক আটকে পাতা ভিজে নষ্ট হচ্ছে।” ভোগান্তি বেড়ে চললেও জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ রাস্তা মেরামতের বিষয়ে কথা বলতে অস্বীকার করেছেন। তবে জলপাইগুড়ির জেলাশাসক স্মারকী মহাপাত্র বলেন, “জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা হয়েছে। পুজোর আগে ওঁরা মেরামতি করবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন।” উত্তর দিনাজপুরের জেলাশাসক পাসাং নরবু ভুটিয়া বলেন, “রায়গঞ্জ থেকে ডালখোলা ৫০ কিমি ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক সংস্কার শুরু করেছেন জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ।” তবে যাত্রী পরিষেবার কথা মাথায় রেখে অনির্দিষ্ট কালের বাস ধর্মঘটে সামিল হল না আলিপুরদুয়ারের ম্যাক্সি ট্যাঙ্কি মালিক ও শ্রমিক সংগঠনগুলি।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.