‘প্রতিবাদ করেও কেন ধর্মঘট ভাঙার চেষ্টা’
সরকার দ্বিচারিতা করছে: সূর্যকান্ত
রাজ্য সরকার ‘স্বৈরতান্ত্রিক পথে’ বামেদের ডাকা বৃহস্পতিবারের ‘ধর্মঘট ভাঙার চেষ্টা’ করছে বলে অভিযোগ তুললেন সূর্যকান্ত মিশ্র। ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধি, রান্নার গ্যাসের ভর্তুকি ছাঁটাই এবং খুচরো ব্যবসায় প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের (এফডিআই) প্রতিবাদ করছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। অথচ সেই একই প্রশ্নে ডাকা ধর্মঘট ব্যর্থ করতে সরকারের চেষ্টাকে ‘দ্বিচারিতা’ বলে আখ্যা দিয়েছেন বিরোধী দলনেতা। রাজ্য সরকারের শরিক প্রদেশ কংগ্রেস বৃহস্পতিবারের ধর্মঘট মোকাবিলায় পথে নামবে বলে জানিয়েছে। পাশাপাশি তাদের এক প্রতিনিদল আজ মঙ্গলবার কেন্দ্রের কাছে ডিজেলের দাম কিছুটা কমানো ও ভর্তুকিতে দেওয়া গ্যাস সিলিন্ডারের সংখ্যা (বছরে) ৬টি থেকে বাড়ানোর আর্জি রাখবে।
ধর্মঘট মোকাবিলায় মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় যে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, তার প্রতিক্রিয়াতেই বিরোধী দলনেতা সোমবার বলেন, “যে কোনও ধর্মঘট ভাঙার জন্য সরকার যে প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে, তা স্পষ্টতই স্বৈরতান্ত্রিক। যে ভাষায় মন্ত্রীরা হুমকি দিচ্ছেন, তার পরে মুখ্যমন্ত্রীর ভাষা উদ্ধৃত করেই বলা যেতে পারে, ভাত দেওয়ার মুরোদ নেই, কিল মারার গোঁসাই!” সূর্যবাবুর দাবি, তাঁদের ডাকা ধর্মঘট সফল হবেই। কারও সাধ্য নেই ধর্মঘট ভাঙার!” এই প্রসঙ্গে তৃণমূল ও সরকারের ভূমিকা নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে এ দিন সূর্যবাবুর কটাক্ষ, “নিজেরা প্রতিবাদ করবে, অন্য কেউ প্রতিবাদ করলে তাদের আক্রমণ করবে! এই সরকারের মনোভাব, আমি আমার মতো!” লাক্সারি ট্যাক্সি-মালিকদের একটি ইউনিয়নের প্রতিনিধিরা এ দিন বিরোধী দলনেতার কাছে এসেছিলেন। সরকারের ভাষা এবং মনোভাবের জন্য আলোচনা চালানো যাচ্ছে না বলে তাঁরা বিরোধী দলনেতাকে জানিয়েছেন। সূর্যবাবু এ প্রসঙ্গে বলেন, “সরকারের উচিত আলোচনার পথে যথাসম্ভব সমস্যা মেটানো।” ডিজেলের বাড়তি দাম থেকে যে কর আদায় হয়, তা থেকে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য রাজ্য সরকারের কোর্টে বল পাঠিয়েই বিজ্ঞাপন দিচ্ছে কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম মন্ত্রক। এই নিয়ে সূর্যবাবু বলেন, “রাজ্যের কর ছাড় দিয়ে দাম কিছুটা কমানো যায়। তা হলে বাস বা ট্যাক্সির ধর্মঘট হয়তো এড়াতে পারত রাজ্য সরকার। বামফ্রন্টের আমলে এ ভাবে ছাড় দেওয়া হয়েছিল। তবে আমাদের বক্তব্য, বর্ধিত মূল্য পুরোপুরি প্রত্যাহার করতে হবে। এক পয়সাও দাম বাড়ানো যাবে না! কেন্দ্র-রাজ্য, এ সব প্রশ্ন এখানে উঠছে না। একটা অন্যায় বিষয়কে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য এত খরচা না-করলেও চলত!”
ওই ধর্মঘটের বিরোধিতা করলেও রাজ্য সরকারের শরিক প্রদেশ কংগ্রেস ডিজেলের দাম কমানোর জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে আবেদন করবে। ভর্তুকিপ্রাপ্ত দামে বছরে পরিবারপিছু ছ’টি করে রান্নার গ্যাসের সিলিন্ডার দেওয়ার যে সিদ্ধান্ত কেন্দ্রীয় সরকার নিয়েছে, তা পুনর্বিবেচনা করার জন্যও কেন্দ্রকে অনুরোধ জানাবে। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির কথায়, “সাধারণ মানুষের অসুবিধার কথা ভেবেই প্রধানমন্ত্রীর কাছে সিলিন্ডারের সংখ্যা আরও বাড়ানোর অনুরোধ করা হচ্ছে। ভর্তুকি দেওয়া সিলিন্ডারের সংখ্যা ছয়ের থেকে বাড়ানো হোক, সেটাই চাই।” প্রদীপবাবু জানান, আজ, মঙ্গলবার দিল্লি গিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে তাঁদের এই আবেদন জানাবেন।
রাস্তায় নেমে মিটিং-মিছিল করে বৃহস্পতিবারের ধর্মঘটের বিরোধিতা করার জন্য দলের জেলা সভাপতিদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি। ধর্মঘট ‘ব্যর্থ’ করতে শরিক তৃণমূলকে পদক্ষেপ করার অনুরোধও করেছেন তিনি। প্রদীপবাবু এ দিন বলেন, “বন্ধের রাজনীতি করে মানুষের দুর্ভোগ বাড়ানো ছাড়া আর কিছু হয় না। গত ৩৪ বছরে বন্ধ-রাজনীতি চলেছে এ রাজ্যে। চার বাম দল এবং সিপিআই (এম-এল) লিবারেশনের শ্রমিক সংগঠন-সহ রাজ্যের ৬টি প্রধান ট্রেড ইউনিয়ন এ দিনই বিবৃতি দিয়ে বৃহস্পতিবারের ধর্মঘটের প্রতি ‘পূর্ণ সমর্থন’ জানিয়েছে। লিবারেশনও পৃথক ভাবে বৃহস্পতিবার ১২ ঘণ্টার ভারত বন্ধ ডেকেছে। এনডিএ বন্ধ ডাকার পরে একই দিনে সিপিএমও বন্ধ ডেকে রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে চাইছে বলে মন্তব্য করেন বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ। তাঁর কথায়, “রাজ্যে সিপিএম বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। সে জন্য আলাদা দিনে বন্ধ ডাকার সামর্থ্য ওদের নেই। এনডিএ-র ডাকা বন্ধের দিন সিপিএমও বন্ধ ডেকে রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে চাইছে।” তাই বৃহস্পতিবার এ রাজ্যে বিজেপি ১২ ঘণ্টার বদলে ১০ ঘণ্টা বন্ধ পালন করবে বলে রাহুলবাবু জানান।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.