ঐতিহ্যবাহী গুমগড়ের পাশ থেকে দুষ্কৃতীরা মাটি কেটে নিয়ে গিয়েছে। ফলে বৃষ্টিতে গুমগড় ঘসে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বিষ্ণুপুরের ইতিহাসবিদ চিত্তরঞ্জন দাশগুপ্ত গুমগড় রক্ষা করতে প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন।
মল্লরাজাদের রাজধানী বিষ্ণুপুর দর্শনে আসা পর্যটকদের কাছে এই গুমগড়ের আকর্ষণ রয়েছে। ইতিহাসবিদ তথা আচার্য যোগেশচন্দ্র পুরাকীর্তি সংগ্রহশালার সচিব চিত্তরঞ্জন দাশগুপ্ত বলেন, “ঐতিহাসিক কারণে এই স্থাপত্যটির গুরুত্ব কম নয়। সপ্তদশ শতকে মল্লরাজা বীর সিংহ এটি তৈরি করেছিলেন।” তিনি জানান, লোকমুখে প্রচারিত রাজারা সেই সময় অপরাধীদের ওই মরণকূপে ফেলে দিতেন। তা থেকেই এর নাম ছড়ায় গুমগড়। তাঁর ব্যাখ্যা, “আদপে এটি মল্লরাজবাড়ির জলের ট্যাঙ্ক বা ওই ধরণের কিছু ছিল।” |
আগাছায় ঘিরে থাকা এই গুমগড়ের পাশ থেকে মাটি কেটে নিয়ে যাওয়ায় স্থানীয় বাসিন্দারাও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। খবর পেয়ে সম্প্রতি চিত্তরঞ্জনবাবু এলাকা ঘুরে আসেন। তাঁর আক্ষেপ, “কারা ওই স্থাপত্যের অত্যন্ত কাছ থেকে মাটি কেটে নিয়েছে। ফলে বৃষ্টিতে বাকি সামান্য মাটি ধুয়ে গিয়ে স্থাপত্যটি ধসে পড়তে পারে। প্রশাসনকে দ্রুত মাটি ফেলে এই ঐতিহাসিক নিদর্শন বাঁচানোর আর্জি জানিয়েছি।” মহকুমাশাসক (বিষ্ণুপুর) অদীপকুমার রায় বলেন, “ওই ঐতিহ্যের ক্ষতি মেনে নেব না। চিত্তরঞ্জনবাবুর কাছে খবরটি জেনে মহকুমা ভূমি সংস্কার ও ভূমি রাজস্ব আধিকারিককে খোঁজ নিতে বলেছি।” এলাকাটি বিষ্ণুপুর পুরসভার অধীন। বিষ্ণুপুরের উপ পুরপ্রধান বুদ্ধদেব মুখোপাধ্যায় বলেন, “এলাকার মানুষের কাছ থেকে খবর পেয়ে পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।” বিষ্ণুপুর মহকুমা ভূমি সংস্কার ও ভূমি রাজস্ব আধিকারিক রবীন্দ্রনাথ সরকার বলেন, “মহকুমা শাসকের কাছে খবর পেয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। কারা গুমগড়ের পাশ থেকে মাটি কেটেছে খোঁজ করা হচ্ছে।” পুলিশও ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে বলে জানিয়েছে। |