বাঁকুড়া গার্লস স্কুল
ভোটে যুযুধান তৃণমূলের দুই গোষ্ঠী
সিপিএম নেই। তবু ফাঁকা মাঠে গোল করার আনন্দে কিছুটা চোনা ফেলেছে দলেরই অন্তর্দ্বন্দ্ব! ‘বাঁকুড়া গার্লস স্কুল’-এর পরিচালন সমিতির অভিভাবক প্রতিনিধি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের গোষ্ঠী-কোন্দল ফের প্রকাশ্যে এসেছে।
সিপিএম এ বার প্রার্থী দেয়নি। কিন্তু, বাঁকুড়া পুর তৃণমূল কংগ্রেস এবং বাঁকুড়া শহর যুব তৃণমূল অভিভাবক প্রতিনিধির ৬টি আসনেই পরস্পরের বিরুদ্ধে প্রার্থী দিয়েছে। দু’পক্ষই নিজেদের সমর্থিত প্রার্থীদের প্রচারে ‘হ্যান্ডবিল’ ছড়িয়েছে শহর জুড়ে। জেলা তৃণমূলের একাংশের দাবি, এই দ্বন্দ্ব আদতে বাঁকুড়ার বিধায়ক মিনতি মিশ্র এবং জেলা মহিলা তৃণমূলের সভানেত্রী শম্পা দরিপার গোষ্ঠীর লড়াই। বাঁকুড়া পুর-তৃণমূল কংগ্রেসের লাগাম রয়েছে মিনতিদেবীর হাতে। অন্য দিকে যুব তৃণমূলের কর্তৃত্ব শম্পাদেবীর হাতে।
বাঁকুড়া পুর-তৃণমূলের ছাপানো হ্যন্ডবিলের তলায় প্রকাশক হিসাবে যে ব্যক্তির নাম রয়েছে, সেই সিন্টু রজক বাঁকুড়ার প্রয়াত তৃণমূল বিধায়ক কাশীনাথ মিশ্রের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত। আর শহর যুব তৃণমূলের হ্যান্ডবিলের নীচে নাম রয়েছে সংগঠনের সভাপতি তথা বাঁকুড়া পুরসভার কাউন্সিলর দেবদাস দাসের। দেবদাসবাবু শম্পাদেবীর অনুগামী হিসেবে পরিচিত। যদিও মিনতিদেবী বা শম্পাদেবী, কেউই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কথা মানতে রাজি নন। তাঁদের দাবি, ওই স্কুল নির্বাচনে তৃণমূলের বিরুদ্ধে তৃণমূলই প্রার্থী দিচ্ছে বলে তাঁদের অন্তত জানা নেই। হ্যান্ডবিল ছাপানো হয়েছে বলেও কোনও খবর নেই তাঁদের কাছে।
দুই গোষ্ঠীর ছাপানো দুই হ্যান্ডবিল। ছবি: অভিজিৎ সিংহ।
আগামী ২৩ সেপ্টেম্বর ওই স্কুলের অভিভাবক প্রতিনিধি নির্বাচন। মনোনয়নপত্র বাতিল করার শেষ দিন ১৯ সেপ্টেম্বর। গতবার অভিভাবক প্রতিনিধি নির্বাচনে সিপিএম সমর্থিত ছয় প্রার্থীকে হারিয়ে পরিচালন সমিতি দখল করেছিল তৃণমূল। তখন রাজ্যে ক্ষমতায় ছিল সিপিএম। শম্পাদেবীই ওই স্কুল পরিচালন কমিটির সম্পাদিকা হন। সিপিএম সূত্রের খবর, ওই স্কুল নির্বাচনে এ বার তারা অংশ নিচ্ছে না। বাঁকুড়া শহর যুব তৃণমূলের সভাপতি দেবদাস দাস বলেন, “আমরা চেয়েছিলাম ওই স্কুলের বর্তমান অভিভাবক প্রতিনিধিরাই ফের ভোটে অংশ নিন। কিন্তু তা হল না। পুর-তৃণমূল তাদের ছ’জন প্রার্থীকে আমাদের প্রার্থীদের বিরুদ্ধে দাঁড় করিয়েছে।”
দেবদাসবাবুর দাবি, জেলা নেতৃত্বের দলের প্রতি ‘নিয়ন্ত্রণ’ না থাকাতেই এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। পুর-তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে সিন্টু রজক অবশ্য বলেন, “আমরা জেলা নেতৃত্বের অনুমতি নিয়েই প্রার্থী দিয়েছি। শম্পা দরিপার উস্কানিতে বাঁকুড়া শহর যুব তৃণমূল আমাদের বিরুদ্ধে প্রার্থী দিয়েছে।”
পঞ্চায়েত ভোটের আগে জেলায় জেলায় দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব মেটাতে তৎপর হয়েছেন প্রদেশ তৃণমূল নেতৃত্ব। কয়েক সপ্তাহ আগে দুর্গাপুরে একটি বৈঠক করে বাঁকুড়ায় দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা রেলমন্ত্রী মুকুল রায়। বিধায়ক ও জেলা নেতৃত্বকে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব মেটানোর ভারও দিয়েছেন তিনি। তাতে যে বিশেষ কাজ হয়নি, ‘বাঁকুড়া গার্লস হাইস্কুল’-এর অভিভাবক প্রতিনিধি নির্বাচনকে ঘিরে দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব তাই প্রমাণ করল বলে দাবি জেলা তৃণমূলের একাংশের।
বাঁকুড়া জেলা তৃণমূল সভাপতি অরূপ খাঁ বলেন, “বাঁকুড়া গার্লস স্কুলের অভিভাবক প্রতিনিধি নির্বাচনকে ঘিরে শহর যুব তৃণমূল এবং পুর-তৃণমূলের মধ্যে একটা সমস্যা দানা বেঁধেছে। তবে আমরা আলোচনার মধ্যে দিয়ে তা মিটিয়ে নেব।” তাঁর আরও দাবি, “এই নির্বাচনে কোনও গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব থাকবে না। তৃণমূলের যে কোনও ছ’জন প্রার্থীই থাকবেন। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনের আগেই ঠিক হয়ে যাবে, কারা ভোটে দাঁড়াবেন।”
যা শুনে সিপিএমের জেলা সম্পাদক অমিয় পাত্রের কটাক্ষ, “আমাদের ওরা আর বিরোধিতা করার সুযোগ দিচ্ছে না। বর্তমান পরিস্থিতিতে ওরা নিজেরাই নিজেদের প্রতিপক্ষ!”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.