বারও তেমন সাড়া মিলল না নদিয়ার কল্যাণী শিল্পাঞ্চলের বিশ্বকর্মা পুজোয়। একের পর এক কারখানা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। অনেক শ্রমিক কাজ হারিয়েছেন। সেই কারণে গত কয়েক বছর মধ্যে একপ্রকার নিঃশব্দে কাটল সোমবার। এলাকার গুটি কয়েক কারখানায় ধুমধাম করে পুজো হলেও, বহু কারখানায় প্রদীপ জ্বলেনি। বন্ধ কারখানার শ্রমিকেরা পুরনো স্মৃতিকেই স্মরণ করেন। তাঁদের এক জন প্রদীপ তরফদার বলেন, “এক দিন এই বিশ্বকর্মা পুজো উপলক্ষে কত কিছুই না হয়েছে এই শিল্পাঞ্চলে। বড় প্যান্ডেল, আলো, মাইক, বাজনা সঙ্গে ছিল সাংস্কৃতিক ও বিচিত্রানুষ্ঠান। এক কথায় ছিল উৎসবের মেজাজ।” তিনি বলেন, “সে দিনগুলির কথা ভাবলে বড় কষ্ট হয়। সারা বছর অপেক্ষা করতাম এই দিনটার জন্য।” তবে এখানকার ইউনাইটেড ব্রুয়ারিজ কারখানা এ দিন ছিল জমজমাট।
পুজো উপলক্ষে বসে আঁকো প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছিল। প্রায় দু’হাজার প্রতিযোগী এতে যোগ দিয়েছিলেন। সারাদিন প্রসাদ বিতরণ করা হয়েছে। বিকেলে ছিল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। কারখানার জেনারেল ম্যানেজার রাকেশ ভট্টাচার্য বলেন, “সাধারণ মানুষের জন্য এ দিন কারখানা খুলে রাখা হয়। তাঁরা বিভিন্ন বিভাগ ঘুরে দেখেন। কারখানার পুজো দেখতে কয়েক হাজার মানুষের সমাবেশ হয়।’’ রাজ্যের প্রয়াত মুখ্যমন্ত্রী বিধানচন্দ্র রায়ের আমলে কল্যাণী শিল্পাঞ্চলের সূচনা হয়। তারপর একের পর এক কারখানা গড়ে ওঠে। বছর ১৫ আগে থেকে এগুলি বন্ধ হতে শুরু করে। একসময়ে ছোট-বড় মিলিয়ে কমপক্ষে ১৫০টি কারখানা ছিল এই অঞ্চলে। এখন ৫০টির মতো চালু আছে। কল্যাণীর মহকুমাশাসক শৈবাল চক্রবর্তী বলেন, “অবশ্যই এক সময়ে বিশ্বকর্মা পুজো খুব ভাল ভাবে হত। কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তার অনেকটাই ভাটা পড়েছে।” তিনি বলেন, “পুরনো সেই দিন ফিরিয়ে আনতে উদ্যোগ শুরু হয়েছে। কয়েকজন শিল্পপতির সঙ্গে উচ্চপর্যায়ে কথা হয়েছে। খুব শীঘ্রই হাল পরিবর্তন হতে শুরু করবে।” |