মাজদিয়ার সুধীরঞ্জন লাহিড়ি কলেজের ছাত্র সংসদের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক প্রশান্ত অধিকারী এবং প্রাক্তন সভাপতি তন্ময় দে’কে মারধরের অভিযোগ উঠল এসএফআইয়ের বিরুদ্ধে। জানুয়ারিতে এই কলেজে অধ্যক্ষকে নিগ্রহের ঘটনায় অভিযুক্ত তিন এসএফআই সদস্যকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। তাঁদের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য মামলা দায়ের করে পুলিশ। সেই তিন জনেরই অন্যতম বাপ্পা তরফদারের বিরুদ্ধেই অভিযোগের আঙুল তুলেছে টিএমসিপি। কলেজের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক অরূপ বিশ্বাসও এই ঘটনায় অভিযুক্ত। এসএফআই অবশ্য
সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। কলেজের ছাত্র সংসদ এখন এসএফআইয়ের হাতে।
তৃণমূলের দাবি, সোমবার বিকেলে চন্দননগর এলাকায় সংগঠনের বৈঠক করে মোটরবাইকে করে ফিরছিলেন তাঁদের ওই দুই নেতা। কৃষ্ণগঞ্জ সেতুর কাছে তাঁদের মোটরবাইক আটকে প্রশান্তবাবু ও তন্ময়বাবুকে বেধড়ক মারধর করা হয়। দু’জনকেই শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি জয়ন্ত পালের বক্তব্য, “প্রশান্ত ও তন্ময়ের নেতৃত্বে কলেজে আমাদের সংগঠন ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। ওই দু’জনের জন্যই ছাত্রছাত্রীরা এসএফআইয়ের কাছ থেকে সরে আসছে। কলেজ হাতছাড়া হচ্ছে বুঝতে পেরে এসএফআই ওই দু’জনকে মারধর করল।” অভিযোগ করা হয়েছে কলেজের এক অস্থায়ী কর্মী সৌমেন ঘোষের বিরুদ্ধেও। তবে এসএফআইয়ের জেলা সভাপতি কৌশিক দত্তের অবশ্য পাল্টা দাবি, “বাপ্পা সহ আমাদের অনেক কর্মীকে এর আগেও জোর করে ফাঁসিয়ে দেওয়া হয়েছিল। বাপ্পাকে তো জেলও খাটতে হয় মিথ্যা অভিযোগে। এ বারও তাই করা হল, কারণ, বাপ্পা খুবই জনপ্রিয় নেতা।” তিনি বলেন, “কলেজ আমাদেরই হাতে রয়েছে। ছাত্রছাত্রীরাও আমাদের সঙ্গে রয়েছে। জোর করে কলেজ দখল করার জন্য তৃণমূলই বরং সন্ত্রাস করছে।” কিন্তু ওই দু’জনকে কারা মারধর করেছে? কৌশিকবাবুর দাবি, “নিজেদের গোষ্ঠীকোন্দলেরই শিকার হয়েছেন ওই দু’জন।”
দীর্ঘদিন ধরেই এই কলেজে টিএমসিপি এবং এসএফআইয়ের মধ্যে বিবাদ চলছে। রয়েছে চাপা উত্তেজনাও। তারই জেরে শনিবারই অধ্যক্ষের ঘরে চেয়ার টেবিল উল্টে দেওয়ার ঘটনা হয়েছে। দু’পক্ষ সেখানে একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে। ওই দিনই কলেজের এক অস্থায়ী কর্মীকে মারধরের অভিযোগও উঠেছিল এসএফআইয়ের বিরুদ্ধে। সেখানেও অভিযোগের তালিকায় ছিলেন বাপ্পা। অভিযোগ করা হয়েছিল জানুয়ারিতে অধ্যক্ষ নিগ্রহের ঘটনায় ধৃত আরও দু’জন অভিজিৎ হালদার ও পুষ্পেন সরকারও।
অভিযুক্তদের কাউকেই অবশ্য গ্রেফতার করা হয়নি। নদিয়ার জেলা পুলিশ সুপার সব্যসাচী রমণ মিশ্র বলেন, “তৃণমূলের দুই ছাত্র আহত হয়েছেন। অভিযোগ করা হয়েছে এসএফআই কর্মীরাই মারধর করেছেন। অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।” |