এশীয় ট্যুরে চোদ্দোটি খেতাবের রেকর্ড গড়া তাই মহাতারকার সঙ্গে লড়াইটা চলছিল তাঁর। টুর্নামেন্টের শেষ রাউন্ডে উঠে আসেন আরও এক চ্যালেঞ্জার। কিন্তু স্নায়ু হিমশীতল আর লক্ষ্য স্থির রেখে জোড়া আক্রমণ সামলে চার শটে ইয়াংদর টুর্নামেন্ট প্লেয়ার্স চ্যাম্পিয়নশিপ জিতে নিলেন গগনজিৎ ভুল্লার। এশীয় ট্যুরে ভারতীয় তারকার তৃতীয় খেতাব!
গগনজিতের শেষ এশীয় ট্রফি আসে ২০১০-এর ফেব্রুয়ারিতে। মাঝে বত্রিশ মাসের খরা। সেটা কাটিয়ে ওঠার উচ্ছ্বাস আর স্বস্তি মিলিয়ে চ্যাম্পিয়নের মুখে এ দিন চওড়া হাসি। ট্রফি ও ৭৯,২৫০ মার্কিন ডলারের চেক হাতে জানালেন, এই সাফল্যে নায়ক তাঁর হার না মানা মানসিকতাই। ২০০৯ ইন্দোনেশিয়া প্রেসিডেন্টস কাপ, ২০১০-এ এশিয়া ট্যুর ইন্টারন্যাশনাল জয়ী অমৃতসরের ছেলে তাইপের জয় সম্পর্কে বলেছেন, “লড়াকু মানসিকতাই আজ আমাকে ট্রফি দিল। নিজেকে বলেছিলাম, ভাল ছন্দে আছ। যা-ই হয়ে যাক, এই টুর্নামেন্টটা জিততেই হবে।” |
গগনজিৎ যে লড়াইয়ের কথা বলছেন, সেটা শুরু দিন দশেক আগে, মালয়েশিয়ার সেলাঙ্গর মাস্টার্সে। থাওর্ন উইরাটচান্তের কাছে হেরে দ্বিতীয় স্থানে সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছিল চব্বিশের তরুণকে। কিন্তু অভিজ্ঞ তাই গল্ফারের বিরুদ্ধে এখানে যে কোনও মূল্যে জিততে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ ছিলেন। যেখানে আক্ষরিক অর্থেই ঝড়ের ঝাপটা সামলে জয়ের মঞ্চ গড়তে হল তাঁকে। উইরাটচান্তের পাশে সামলাতে হল শেষ দুই রাউন্ডে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেওয়া মার্কিন জেসন কনুৎজনকেও।
টাইফুন ‘সানবা’য় দ্বিতীয় দিনের খেলা পণ্ড হয়ে তিন রাউন্ডে নেমে আসা টুর্নামেন্টে মাত্র এক শটে এগিয়ে থাকার পুঁজি হাতে আজ শেষ রাউন্ডে নেমেছিলেন গগনজিৎ। শুরুতে এগিয়ে গেলেও তেরো হোল-এর মধ্যে চার বার্ডির পাশে তিনটি বোগি দুই চ্যালেঞ্জারের সঙ্গে ব্যবধান কমিয়ে আনে এক শটে। “এমন চাপে আগেও পড়েছি। নিজেকে বলি, কম করে আরও একটা বার্ডি চাই।” নিজেকে তাতানো কাজে লেগে যায়। আরও দু’টি বার্ডি-সহ শেষ করেন বারো-আন্ডার ২০৪ স্কোরে। মোট চার শটের লিড। উইরাটচান্ত আর কনুৎজন যা অতিক্রম করতে না পেরে শেষ করলেন যুগ্ম দ্বিতীয় হয়ে। নবম হিম্মত রাই। অনির্বাণ লিহিড়ি শেষ করলেন ২৭ তম স্থানে।
মালয়েশিয়ার পর আজকের সাফল্যে বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ে গগনজিৎ ৩১১ থেকে এক লাফে ১৬৫ নম্বরে। আগেই জানিয়েছিলেন, তাঁর স্বপ্ন অলিম্পিক পদক। রিও অলিম্পিকে ফিরছে গল্ফ। সেই লক্ষ্যে নিজের র্যাঙ্কিং দ্রুত বাড়াতে চান, সেটাও বলেছিলেন। আজকের জয় গগনকে তাঁর অলিম্পিক স্বপ্নের খানিকটা কাছে নিয়ে গেল। |