চলন্ত ট্রেনে উঠতে গিয়ে পা পিছলে পড়ে এক যুবকের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে অশান্তি হল বর্ধমান স্টেশনে। যাত্রীদের সঙ্গে রেলকর্মী এবং আরপিএফের গণ্ডগোল বাধে। এক রেলকর্মীকে যাত্রীরা নিগ্রহ করেন বলে অভিযোগ। যাত্রীদের পাল্টা দাবি, আরপিএফ তাঁদের উপরে লাঠি চালিয়েছে। ট্রেন চলাচল বিঘ্নিত করার অভিযোগে চার জনকে গ্রেফতার করা হয়।
এই ঘটনার জেরে ডাউন অগ্নিবীণা এক্সপ্রেস প্রায় এক ঘণ্টা স্টেশনেই আটকে থাকে। বর্ধমান-হাওড়া কর্ড ও মেন লাইনের মোট ৬টি লোকাল ট্রেন ছাড়তেও দেরি হয়। ধৃতদের এ দিন দুপুরে রেল আদালতে তোলা হলে চার দিনের জেল হেফাজত ও তিন হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়।
রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, গণ্ডগোলের সূত্রপাত এ দিন সকাল সওয়া ৭টা নাগাদ বর্ধমানের ৪ নম্বর প্ল্যাটফর্মে। অগ্নিবীণা এক্সপ্রেস প্ল্যাটফর্ম ছেড়ে বেরোনোর সময়ে সায়ন্তন কর্মকার (২৭) নামে শহরের রাজগঞ্জের বাসিন্দা এক যুবক পিছনের কামরায় ওঠার চেষ্টা করেন। কিন্তু পা পিছলে ট্রেনের চাকার তলায় পড়ে গুরুতর জখম হন তিনি। যাত্রীরা চেন টানায় ট্রেন দাঁড়িয়ে পড়ে। |
চেন টানার দরুণ ভ্যাকুয়াম ছিন্ন হয়ে যায়। রেলের এক কর্মী সেই ভ্যাকুয়াম ঠিক করতে গেলে যাত্রীরা তাঁকে নিগ্রহ করেন বলে অভিযোগ। যাত্রীরা প্রশ্ন তোলেন, রেললাইনে এক আহতের দেহ পড়ে থাকা সত্ত্বেও তাঁকে উদ্ধারের ব্যবস্থা না করে ট্রেন ছাড়ার উদ্যোগ হচ্ছে কী ভাবে? ট্রেন ছাড়তে না দেওয়ার জন্য তাঁরা লাইনে অবরোধও করেন।
খবর পেয়ে জিআরপি এবং আরপিএফ যায়। যাত্রীদের সঙ্গে প্রথমে তাদের বচসা, তা থেকে সংঘর্ষ বেধে যায়। যাত্রীদের অভিযোগ, আরপিএফ তাঁদের উপরে লাঠি চালায়। যদিও বর্ধমান জিআরপি-র ওসি আশিসকুমার মজুমদার এবং আরপিএফের আইসি জয়শঙ্কর দ্বিবেদী লাঠি চালানোর কথা অস্বীকার করেন। আশিসবাবু বলেন, “যাত্রীদের রেললাইন থেকে ঠেলে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। চার জনকে গ্রেফতার করা হলেও লাঠি চালানো বা কাউকে মারধর করা হয়নি।” তাঁর পাল্টা দাবি, যাত্রীরাই রেলকর্মীদের মারধর করেছেন।
ঘটনাস্থলে থাকা জেলা পুলিশের এক ইনস্পেক্টরের দাবি, “যাত্রীরা অভিযোগ করছিলেন, দীর্ঘক্ষণ রেললাইনে পড়ে থাকা আহতকে না সরিয়ে কেন ট্রেন ছাড়ার উদ্যোগ হল। আরপিএফ এবং জিআরপি কোনও কথা না শুনে লাঠি চালায়।” মৃতের মামা তপন দাসেরও অভিযোগ, “বাড়ি থেকে বেরোতে দেরি হওয়ায় ভাগ্নে চলন্ত ট্রেন ওঠার চেষ্টা করে। আহত অবস্থায় অনেকক্ষণ লাইনে পড়েছিল। পরে ভ্যানে করে হাসপাতালে পাঠানো হয়। রেলপুলিশ একটু তৎপর হলে ও হয়তো বেঁচে যেত।” স্টেশন ম্যানেজার অসীমকুমার রায় অবশ্য বলেন, “আহত যাত্রীর দেহ দীর্ঘক্ষণ লাইনে পড়ে থাকার অভিযোগ ঠিক নয়। ঘটনাটি ঘটে সকাল ৭টা ১২ মিনিটে। মাত্র দশ মিনিটের মধ্যে আহতকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিল।” বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে অবশ্য জানা যায়, ওই যুবককে নিয়ে হাসপাতালে আনার পরেই সকাল ৮টা ৫ মিনিটে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়।
|
এক ব্যক্তির গুলিবিদ্ধ দেহ উদ্ধার করল বর্ধমান জেলার হিরাপুর থানার পুলিশ। রবিবার গভীর রাতে হিরাপুর থানার নরসিংহবাঁধ এলাকা থেকে পুলিশ দেহটি উদ্ধার করে। পুলিশ জানায়, ওই ব্যক্তির নাম সনাতন দাস (৪৮)। বাড়ি ওই থানা এলাকার নরসিংহবাঁধ সংলগ্ন মিতাই গলিতে। স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছ থেকে খবর পেয়ে দেহটি উদ্ধার করে পুলিশ। পুলিশ জানায়, এই ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। কে বা কারা সনাতনবাবুকে গুলি করে মেরেছে তার খোঁজ শুরু হয়েছে। |