সমবায় সমিতির পরিচালন পর্ষদের ভোটে মিশ্র ফল হল পূর্বস্থলী ২ ব্লকে। রবিবার ওই ব্লকের চারটি সমবায়ে ভোট ছিল। দু’টি করে সমবায়ে জয়ী হয় সিপিএম এবং তৃণমূল।
উখুরা সমবায় সমিতির পরিচালন কমিটি নিজেদের দখলেই রাখল সিপিএম। এখানকার মোট ৫১টি আসনের সব ক’টিতেই এ বার সিপিএম এবং তৃণমূল সমর্থিত প্রার্থীরা মনোনয়ন জমা দেন। রবিবার রাতে ফল বেরোনোর পরে দেখা যায়, ৩২টিতে জয়ী হয়েছেন সিপিএম সমর্থিত প্রার্থীরা। বাকি ১৯টি গিয়েছে তৃণমূল সমর্থিতদের দখলে।
বড়েয়া-মাজিদা কৃষি উন্নয়ন সমিতির ভোট চলাকালীন রবিবার সকাল ১০টা নাগাদ গণ্ডগোল বেধেছিল। তৃণমূলের অভিযোগ, ভোটগ্রহণ শুরুর পর থেকেই ভোটারদের ভয় দেখাতে শুরু করে সিপিএমের লোরজন। তাতে দুই তৃণমূল কর্মী বাধা দিলে তাঁদের মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। জখমদের এক জনকে কালনা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। রাতেই তৃণমূলের তরফে ভোটারদের ভয় দেখানো ও মারধরের ঘটনায় দশ জনের নামে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করা হয়। সিপিএমের পাল্টা অভিযোগ, ভোটারদের ভয় দেখাতে রাস্তায় নেমেছিল তৃণমূলই। সে জন্য অনেক ভোটদাতাই বুথে যাননি। রাতে ফল বেরোয়। ৬টি আসনের সব ক’টিতেই জেতেন তৃণমূল সমর্থিত প্রার্থীরা। আগে এখানে ক্ষমতায় ছিল সিপিএম।
কমলনগর সমবায় সমিতির ৬টি আসনেই প্রার্থী দিয়েছিল সিপিএম এবং তৃণমূল। এই সমিতিতেও ক্ষমতা ধরে রেখেছে সিপিএম। ৫টি আসনেই জয়ী হয়েছেন সিপিএম সমর্থিত প্রার্থীরা। সাংঘোষপাড়া সমবায় সমিতির ভোটে অবশ্য সিপিএম প্রার্থী দেয়নি। ৫৫টি আসনের মধ্যে ১৫টিতে প্রার্থী দেয় বিজেপি। বাকি ৪০টিতে আগেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতে গিয়েছিলেন তৃণমূলের প্রার্থীরা। রবিবার ১৫টি আসনে ভোট হয়। দশটিতে জেতেন বিজেপি-র প্রার্থীরা। বাকি পাঁচটি যায় তৃণমূলের দখলে।
সামগ্রিক ফলাফলে অবশ্য খুশি পূর্বস্থলীর সিপিএম এবং তৃণমূল, দু’পক্ষই। পূর্বস্থলী উত্তর কেন্দ্রের তৃণমূল বিধায়ক তপন চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, “কয়েক দিন আগে পারুলিয়া কুলকামিনী উচ্চ বিদ্যালয়ের ভোটে জিতে সিপিএম মনে করছিল, তারা আবার শক্তি ফিরে পাচ্ছে। সেই ধারণা যে ভ্রান্ত, আশা করি সমবায়ের ফলেই তারা তা বুঝতে পারবে।”
সিপিএমের পূর্বস্থলী ২ জোনাল কমিটির সম্পাদক সুব্রত ভাওয়াল সোমবার বলেন, “যে চারটি সমবায়ে ভোট হয়েছে তার তিনটির পরিচাল সমিতি আগে আমাদের দখলে ছিল। দু’টিতে আমরা ক্ষমতা ধরে রেখেছি। সামগ্রিক ফলে আমরা অখুশি নই।” তাঁর দাবি, বড়েয়া-মাজিদা কৃষি উন্নয়ন সমিতির ভোটে তৃণমূল তাঁদের ভোটারদের ভয় দেখায়। না হলে ফল অন্য রকম হতে পারত। তৃণমূল অবশ্য সুব্রতবাবুর এই অভিযাগ উড়িয়ে দিয়েছে।
রবিবারই কালনা ১ ব্লকের বাঘনাপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়েও পরিচালন সমিতির অভিভাবক প্রতিনিধি নির্বাচন হয়। সেখানে ৬টি আসনের সব ক’টিতেই জয়ী হন তৃণমূল সমর্থিত প্রার্থীরা। আগে এই পরিচালন সমিতি সিপিএমের দখলে ছিল। প্রহৃত নেতা। সিপিএম প্রভাবিত অসংগঠিত শ্রমিক সংগঠনের নেতা পূর্ণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠল এক তৃণমূল কর্মীর বিরুদ্ধে। পূর্ণবাবুকে রানিগঞ্জের অলুগড়িয়া প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করানো হয়েছে। তিনি রানিগঞ্জের নিমচা ফাঁড়িতে লিখিত অভিযোগে জানান, রবিবার সন্ধ্যায় জে কে নগর বাজারের কাছে তৃণমূল কর্মী দীনু দে তাঁকে বেধড়ক মারধর করেন। দীনুবাবুর অবশ্য দাবি, এই অভিযোগ মিথ্যা। পুলিশ জানায়, তদন্ত চলছে। |