শহরের সৌন্দর্যায়নে আসানসোল পুরসভার তরফে কয়েক লক্ষ টাকা ব্যয়ে লাগানো হয়েছিল ত্রিফলা বাতি। মাত্র মাস তিনেকের মধ্যেই সেগুলির ভগ্নদশা। ইতিমধ্যেই ভেঙে পড়ছে সেগুলি। পুরসভার বিরোধী তথা বাম কাউন্সিলরদের অভিযোগ, নিম্ন মানের সামগ্রী দিয়ে তৈরি হয়েছে বাতিগুলি। যদিও বিরোধীদের এই অভিযোগ মানতে চাননি বিদ্যুৎ দফতরের মেয়র পারিষদ।
বিধানসভা নির্বাচনে জয়ের পরেই পুর এলাকার সৌন্দর্যায়নের কাজে হাত লাগায় কংগ্রেস-তৃণমূল জোট পরিচালিত আসানসোল পুরসভা। পুরসভার বোর্ড বৈঠকে কলকাতার মতো আসানসোলের বিভিন্ন রাস্তায় ত্রিফলা বাতি বসানোর প্রস্তাব দেন ক্ষমতাসীন কাউন্সিলরেরা। সিদ্ধান্ত কার্যকরী হয়। আসানসোল পুরসভার বিদ্যুৎ দফতরের মেয়র পারিষদ রবিউল ইসলাম জানান, প্রাথমিক ভাবে আসানসোলের রবীন্দ্রভবন ও বার্নপুরের সম্প্রীতি প্রেক্ষাগৃহের সামনে এই ত্রিফলা বাতি লাগানোর সিদ্ধান্ত হয়। রবিউলবাবুর দাবি, “এর জন্য ব্যয় হয় প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা।” মে মাসে এই ত্রিফলা বাতির উদ্বোধন করেন আসানসোলের মেয়র তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়। |
কিন্তু তিন মাসের মধ্যেই তিন অবস্থা বাতিগুলির। রবীন্দ্র ভবন ও সম্প্রীতি ভবন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, অধিকাংশ বাতি ভেঙে পড়ে আছে। প্রচুর টাকা খরচ করে লাগানো এই ত্রিফলা বাতির ভগ্নদশায় সরব হয়েছেন পুরসভার বিরোধী কাউন্সিলররা। পুরসভার বিরোধী দলনেতা তথা প্রাক্তন মেয়র সিপিএমের তাপস রায়ের ক্ষোভ, “আসলে শহরের সৌন্দর্যায়নের নামে এই বোর্ডের ক্ষমতাসীনরা জনগণের টাকা নিয়ে দূর্নীতি করছেন।” তাঁর দাবি, “এর থেকে অনেক কম টাকা খরচ করে শহরকে অনেক বেশি আলোকিত ও সুন্দর করে সাজানো যেত। পরবর্তী বোর্ড সভায় এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দফতরের মেয়র পারিষদের কাছে বিস্তারিত জানতে চাইব আমরা।”
শহরের এই ত্রিফলা বাতিগুলির ভগ্নদশার কথা জানেন এই দফতরের মেয়র পারিষদ কংগ্রেসের রবিউল ইসলাম। তিনি বলেন, “আমরা খবর পেয়েছি কয়েকটি বাতি ভেঙেছে। সেগুলি আমরা ঠিক করে দেব।” নিম্ন মানের সামগ্রী দিয়ে বাতি তৈরির ব্যাপারে তাঁর বক্তব্য, এ বিষয়ে বিস্তারিত খোঁজখবর নেওয়া হবে। তবে তাঁর সাফাই, “সম্প্রতি ঝড়বৃষ্টির জন্য বাতিগুলি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।” বিরোধীদের তোলা দূর্নীতির অভিযোগ অস্বীকার করেন রবিউল ইসলাম। তাঁর দাবি, “প্রায় ৪০ বছর পুরসভার ক্ষমতায় থাকার পরেও শহরের সৌন্দর্যায়নে বাম কাউন্সিলররা আগ্রহ দেখাননি। আমরা ক্ষমতায় আসার পরেই এ বিষয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু করেছি। এই সাফল্য মেনে নিতে পারছেন না বিরোধীরা।” |