তৃণমূল কংগ্রেসের শিক্ষা সেলের আন্দোলনের চাপে শিক্ষক নিয়োগে অনিয়ম মেনে প্যানেল বাতিল করলেন সহকারী স্কুল পরিদর্শক (এডিআই)। বৃহস্পতিবার বুনিয়াদপুরে অফিসের মধ্যে বিকেল থেকে রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত ঘেরাও হয়ে থাকার পরে তৃণমূল শিক্ষা সেলের নেতৃত্বের কাছে ভুলস্বীকার করে নেন পঙ্কজ সরকার। ত্রুটি-বিচ্যুতির কারণে দ্বিতীয় প্যানেল বাতিল করা হল বলে লিখিত জানালে উত্তেজনা কমে। দক্ষিণ দিনাজপুরে গঙ্গারামপুরের রাজীবপুর সেন্ট যোসেফ হাই স্কুলে জীববিদ্যার শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে ঘটনার শুরু। সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত হলেও স্কুল কর্তৃপক্ষ নিজেরাই শিক্ষক নিয়োগ করে। তৃণমূলের শিক্ষা সেলের অভিযোগ, মে মাসে ইন্টারভিউ হয়। প্যানেলের উপরে ছিল গঙ্গারামপুরের সমীর সাহার নাম। কিন্তু কিছুদিন পর সহকারী স্কুল পরিদর্শক ওই প্যানেল বাতিল করে ফের ইন্টারভিউ নিতে নির্দেশ দেন বলে অভিযোগ। এর পরে অগস্ট মাসে দ্বিতীয়বার ইন্টারভিউ নেওয়া হলে দেখা যায়, প্যানেলের এক নম্বরে বুনিয়াদপুরের এক সিপিএম নেতার ছেলের নাম। প্রথম প্যানেলে এক নম্বরে থাকা সমীরবাবু কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। দ্বিতীয় বারের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্থগিতাদেশ দেয় আদালত। ওই নির্দেশ ১১ সেপ্টেম্বর হাতে পান সহকারী স্কুল পরিদর্শক। তৃণমূল শিক্ষা সেল জেলা সভাপতি উজ্জ্বল বসাকের অভিযোগ, স্থগিতাদেশ হাতে পেয়ে ১০ সেপ্টেম্বর ‘ব্যাক ডেটে’ ওই সিপিএম নেতার ছেলেকে নিয়োগপত্র ছেড়ে দেন সহকারী স্কুল পরিদর্শক। পরদিন ১১ সেপ্টেম্বর নিয়োগপত্র নিয়ে ওই নেতার ছেলে কাজে যোগ দিলে শোরগোল পড়ে যায়। বুনিয়াদপুরে তৃণমূলের জেলা পরিষদের সদস্য অখিল বর্মনের অভিযোগ, কোনও কারণ না দেখিয়ে প্রথম প্যানেল বাতিল করার ঘটনা স্বীকার করেন সহকারী স্কুল পরিদর্শক। ফলে প্রথম প্যানেলটিকে কার্যকর করতে হবে। প্রথম প্যানেল বাতিল প্রসঙ্গে সহকারী স্কুল পরিদর্শক পঙ্কজ সরকার বলেন, “স্কুল প্রথম প্যানেল পাঠাতে দেরি করায় তা বাতিল করে দ্বিতীয় বার ইন্টারভিউ নিতে বলা হয়েছিল। প্যানেল বাতিল করার সিদ্ধান্ত চাকরি প্রার্থী এবং স্কুল কর্তৃপক্ষকে জানানো উচিত ছিল বলে তিনি স্বীকার করেন। তাঁর বক্তব্য, “পদ্ধতিগত ত্রুটিতে দ্বিতীয় প্যানেল বাতিল করা হয়েছে। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।” রাজীবপুর সেন্ট যোসেফ হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক জুয়েল টেটে দাবি করেন, সমস্ত নিয়ম মেনে প্রথম প্যানেল পাঠানো হয়। ওই প্যানেল কেন বাতিল হল, তা জানা নেই। এডিআইয়ের নির্দেশে দ্বিতীয় বার ইন্টারভিউ হয়েছিল। জেলা স্কুল পরিদর্শক দীপঙ্কর রায় বলেন, “প্রথম প্যানেল বাতিলের ব্যাপারে বুনিয়াদপুরের ওই এ ডি আই দফতর থেকে কিছুই জানানো হয়নি।” |