ব্যাঙ্কে ঢুকে ম্যানেজারের গালে চড় মারার অভিযোগ উঠল এক তৃণমূল নেতার শ্যালকের বিরুদ্ধে। প্রতিবাদে শুক্রবার থেকে ব্যাঙ্ক অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দিয়েছেন অফিসার ও কর্মীরা। বৃহস্পতিবার বিকেলে মালদহের সুজাপুরে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের ঘটনা।
স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার সুজাপুর শাখার ম্যানেজার দিবাকর সিংহ এবং কয়েক জন কর্মী ওই তৃণমূল নেতার শ্যালকের বিরুদ্ধে কালিয়াচক থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযুক্ত বিল্লা শেখকে পুলিশ এখনও ধরতে পারেনি। ব্যাঙ্কের অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সব্যসাচী বাগচি এবং ‘স্টেট ব্যাঙ্ক স্টাফ অ্যাসোসিয়েশন’-এর ডেপুটি জেনারেল সেক্রেটারি কানাই সরকার বলেন, “এই নিয়ে তিন বার সুজাপুর শাখায় হামলার ঘটনা ঘটেছে। ওই শাখায় পুলিশ পিকেট বসিয়ে কর্মী-অফিসারদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত না করা পর্যন্ত ওই শাখা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকবে।”
ব্যাঙ্কের মালদহ ও দক্ষিণ দিনাজপুরের রিজিওনাল ম্যানেজার জয়প্রকাশ মিশ্রের আশ্বাস, “পুলিশ পিকেট বসিয়ে নিরাপত্তা নিশ্চিত করে দ্রুত ব্যাঙ্ক খোলার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।” বিল্লা শেখের দাবিমতো তাঁর ‘পছন্দের’ লোকেদের ঋণ না দেওয়ার জন্য ম্যানেজারের উপরে হামলা হতে পারে বলে তাঁর অভিযোগ।
বিল্লা সম্পর্কে তৃণমূলের সুজাপুর অঞ্চল সভাপতি সহরুল বিশ্বাসের শ্যালক। ব্যাঙ্ক ম্যানেজারের অভিযোগ, “বৃহস্পতিবার বিকেল পৌনে ৫টা নাগাদ বিল্লা ও তার এক সহযোগী ব্যাঙ্কে ঢুকে আমার খোঁজ করতে থাকে। ব্যাঙ্কের এক কর্মীকে ম্যানেজার ভেবে গালাগাল দেয়। এর পরে আমাকে দেখেই বিল্লা গালে সপাটে চড় মারে। জামার কলার ধরে গালিগালাজ করতে করতে আমাকে টেনে বাইরে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। ব্যাঙ্কের অন্য কর্মী-অফিসাররা ছুটে এসে আমাকে ছাড়িয়ে নেন। ওরা ব্যাঙ্ক থেকে চলে যায়।”
পুলিশের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ ব্যাঙ্কের কর্মী-অফিসারেরা। সব্যসাচীবাবু ব্যাঙ্কের ম্যানেজারকে নিয়ে কালিয়াচক থানায় গিয়েছিলেন। তিনি বলেন, “থানায় অভিযোগ জানানোর পর পুলিশের কাছে নিরাপত্তা চেয়েছিলাম। কিন্তু কালিয়াচক থানার পুলিশ পর্যাপ্ত বাহিনী নেই বলেছে।” মালদহের পুলিশ সুপার জয়ন্ত পাল অবশ্য বলেন, “ব্যাঙ্ক ম্যানেজারের অভিযোগের ভিত্তি মামলা শুরু হয়েছে। অভিযুক্তকে ধরতে পুলিশ তল্লাশি চালাচ্ছে। ফের যাতে হামলা না হয়, সে জন্য সুজাপুর ব্যাঙ্কের সামনে পুলিশ পিকেট বসানো হচ্ছে।”
তৃণমূল নেতা সহরুল বিশ্বাসের দাবি, “ওই ব্যাঙ্কের ম্যানেজারের কিছু এজেন্ট টাকা নিয়ে সমাজবিরোধীদের ঋণ দিয়েছে। সেই রাগেই আমার শ্যালক ব্যাঙ্কে গিয়ে প্রতিবাদ করেছে। এতে একটু ধাক্কাধাক্কি হয়েছে। আর ও মারধর করে থাকলে পুলিশ ব্যবস্থা নিক। এর সঙ্গে তৃণমূলের কোনও সম্পর্ক নেই।” মালদহ জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা নারী ও সমাজকল্যাণমন্ত্রী সাবিত্রী মিত্র কিন্তু বলেছেন, “যে অন্যায় করেছে, তাকে পুলিশ গ্রেফতার করুক। দলের নাম ভাঙিয়ে কেউ কাউকে মারবে, ভয় দেখাবে, এটা দল বরদাস্ত করবে না।” |