পানমশলা ও গুটখা বিক্রি বন্ধে
রাজ্য কী করছে, প্রশ্ন কোর্টের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
বেশ কয়েকটি রাজ্য ইতিমধ্যেই গুটখা ও পানমশলা উৎপাদন ও বিক্রির উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ সরকার ওই দু’টি নেশার জিনিসের বিক্রি বন্ধে কী ব্যবস্থা নিচ্ছে? এই ব্যাপারে দু’সপ্তাহের মধ্যে রাজ্যের বক্তব্য জানাতে বলল কলকাতা হাইকোর্ট। শুক্রবার প্রধান বিচারপতি জে এন পটেল ও বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চ এই নির্দেশ দিয়েছে।
এ রাজ্যে গুটখা ও পানমশলার আমদানি ও বিক্রি বন্ধের আবেদন জানিয়ে হাইকোর্টে জনস্বার্থের মামলা করেছে ক্যানসার সার্জেন এবং ডাক্তারি পড়ুয়াদের সংগঠন ডক্টরস ফর ইউ (ডিএফওয়াই)। পশ্চিমবঙ্গ সরকার ওই সব নেশার সামগ্রী নিষিদ্ধ না-করায় রাজ্যবাসীর ক্ষতি হচ্ছে
বলে আবেদনকারীর অভিযোগ। ডিএফওয়াই-এর আবেদনে বলা হয়, গুটখা ও পানমশলা মুখ ও গলার ক্যানসারের সঙ্গে সঙ্গে খাদ্যনালি, শ্বাসনালি, অগ্ন্যাশয় ও পাকস্থলীর ক্যানসারের জন্যও অনেকাংশে দায়ী। তাই ওই সব সামগ্রীর বিক্রি নিষিদ্ধ করার সুপারিশ করা হয়েছে। এই ব্যাপারে কেন্দ্রীয় নিষেধাজ্ঞা বলবৎ করতে বলা হয়েছে বিভিন্ন রাজ্য সরকারকে। সেই অনুযায়ী কেরল, বিহার, রাজস্থান, হরিয়ানা, মহারাষ্ট্র, গুজরাতের মতো ১১টি রাজ্য পানমশলা ও গুটখা বিক্রির উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। সুপ্রিম কোর্টও এ ব্যাপারে নির্দেশিকা জারি করেছিল।
রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে এ দিন মামলার শুনানিতে বলা হয়, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ রূপায়ণের ক্ষেত্রে বেশ কয়েকটি প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হয়। সেই সব প্রক্রিয়া চালাতে কিছুটা সময় লাগে। এই অবস্থায় রাজ্য সরকারকে ১৫ দিনের মধ্যে নিজেদের বক্তব্য জানাতে বলেছে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ।
ডিএফওয়াই-এর পক্ষে মুম্বইয়ের টাটা মেমোরিয়াল হাসপাতালের নাক ও মুখের ক্যানসার বিভাগের শল্যচিকিৎসক পঙ্কজ চতুর্বেদী বলেন, “গুটখা ও পানমশলা কী ভাবে দেশের মানুষের সর্বনাশ করছে, নিজের অভিজ্ঞতায় সেটা দেখেছি। যাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন, তাঁদের অনেকেই বয়সে তরুণ। ওই সব রোগীর একটা বড় অংশই পশ্চিমবঙ্গের। আমরা সেটা রাজ্য সরকারকেও জানিয়েছিলাম। কিন্তু কিছু হয়নি। তাই আমাদের আদালতের হস্তক্ষেপ চাইতে হল।”
এমন গুরুত্বপূর্ণ একটা ব্যাপারে কেন আদালতের হস্তক্ষেপ চাইতে হবে, ডিএফওয়াই-এর সদস্যেরা সেই প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁদের প্রশ্ন, বিষয়টির সঙ্গে মানুষের স্বাস্থ্যের সম্পর্ক জড়িত, জীবনহানিরও আশঙ্কা রয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ রয়েছে। তবু রাজ্যে গুটখা ও পানমশলা আমদানি ও বিক্রি বন্ধে আদালতের শরণাপন্ন হতে হবে কেন, সেটাই বুঝতে পারছেন না ডিএফওয়াই-এর সদস্যেরা, যাঁদের অধিকাংশই ক্যানসারের চিকিৎসক। |