দক্ষিণ কলকাতা: গড়িয়া, সোনারপুর
রাজপুর-সোনারপুর
জল-পথ
শুধু এক পশলা বৃষ্টির অপেক্ষা। সঙ্গে সঙ্গে বানভাসি। রাজপুর পুরসভার অধিকাংশ এলাকার জলমগ্ন রাস্তায় তখন যাতায়াতের জন্য ভ্যান ও রিকশাই ভরসা। সেই সুযোগে ভ্যান ও রিকশা-চালকেরাও ইচ্ছেমতো ভাড়া চাইতে শুরু করেন বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের।
সাম্প্রতিক বৃষ্টির পরে এলাকা ঘুরে দেখা গেল, শ্রীখণ্ডা, গড়িয়া স্টেশন-সংলগ্ন এলাকা, বিবেকানন্দ নগর, কামরাবাদ, শরৎ সরণি, চণ্ডীতলা, বৈকুণ্ঠপুর, সুভাষগ্রাম, মালঞ্চের মাহিনগর, বিবেকানন্দপল্লি, ঘাসিয়ারা, মিশনপল্লি, শ্রীপুর, রেনিয়ায় জলে টইটম্বুর রাস্তায় কোথাও হাঁস চরে বেড়াচ্ছে, কোথাও পথচারীরা ভ্যানে চেপে রাস্তা পার হচ্ছেন। অধিকাংশ এলাকাতেই হাঁটু-জল।
রাজপুর-সোনারপুরের পুর-কর্তৃপক্ষ জানালেন, ওই এলাকায় জল নিকাশির প্রধান পথ আদিগঙ্গা এবং টলিনালা। কিন্তু দু’টিরই সংস্কার শেষ করা যায়নি বলেই স্থানীয় বাসিন্দাদের এই দুর্ভোগ। যদিও বাসিন্দাদের অভিযোগ, রাজপুর-সোনারপুর পুর-এলাকার নিকাশি ব্যবস্থাও অত্যন্ত দুর্বল। নর্দমাগুলো নিয়মিত পরিষ্কার করা হয় না। তাই দু’দিনের বৃষ্টিতেই অধিকাংশ এলাকায় নর্দমা উপচে পড়ে। পুরসভার বিরোধী দলের কাউন্সিলর সিপিআইয়ের তড়িৎ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘বর্ষার আগে সেচ দফতরের সঙ্গে কোনও বৈঠকই করেনি পুর-বোর্ড। তাদের সচেতনতার অভাবেই আজ এই দুর্গতি।”
টলিনালা ও আদিগঙ্গার যে সব অংশের সংস্কার হয়েছে, সেগুলিও আবার আবর্জনায় আটকে গিয়েছে। মাছ-চাষের জন্য আদিগঙ্গার বিভিন্ন অংশ বেড়া দিয়ে আটকে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ। নরেন্দ্রপুর-সংলগ্ন একটি খালের উপরে এই পুরসভার একটা বড় অংশের নিকাশি নির্ভরশীল। তার উপরে অনেক বাড়ি গজিয়েছে। পাঁকে আটকে রয়েছে জলের গতি।
রাজপুর-সোনারপুর পুরসভার নিকাশি ইনস্পেক্টর অমল ভট্টাচার্য অবশ্য এ সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘‘আমাদের এলাকা মোটামুটি ঠিকই আছে। কিছু অঞ্চলে সমস্যা থাকতে পারে।” উপ-পুরপ্রধান এবং সোনারপুর উত্তরের বিধায়ক তৃণমূলের ফিরদৌসি বেগম সমস্যা স্বীকার করে নিয়ে বলেন, “এই সমস্যা দীর্ঘ দিনের। দখলদারির জন্য টলিনালা এবং আদিগঙ্গা সংস্কারের কাজ এখনও শেষ করা যায়নি। তাই দু’দিনের হাল্কা বৃষ্টিতেই এই হাল। আমরা বৈঠক করেছি। পরিস্থিতির উন্নতি করার চেষ্টা করছি।”
সেচ দফতরের প্রতিমন্ত্রী তৃণমূলের শ্যামল মণ্ডলের কথায়: “খাল সংস্কারের কাজ সেচ দফতর ঠিকই শেষ করবে। তবে সংশ্লিষ্ট পুরসভাকে নিকাশি উন্নত করার পরিকল্পনা করতে হবে।” তবে এ বছর সময়ে খাল সংস্কার হয়নি কেন? এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি শ্যামলবাবু।

ছবি: পিন্টু মণ্ডল




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.