দক্ষিণ কলকাতা: গড়িয়া, সোনারপুর
রুদ্ধ নিকাশি
মরসুমি যন্ত্রণা
বৃষ্টি মানেই দুর্ভোগ। কারণ, কোনও নিকাশি ব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি। যা ছিল তাও বন্ধ, রুদ্ধ। তাই দীর্ঘ তিন দশকেরও বেশি জমা জল এবং খন্দপথের যন্ত্রণা ভোগ করছেন বারুইপুর সংলগ্ন দক্ষিণ কল্যাণপুরের গাজিপাড়া এলাকার কয়েক হাজার বাসিন্দা।
বারুইপুর বাইপাস এবং শহরের সঙ্গে কল্যাণপুর স্টেশনের যোগাযোগ রক্ষা করছে গাজিপাড়ার রাস্তা। ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা জানান, বর্ষার শুরু থেকেই তাঁদের জলবন্দি থাকতে হয়। জল ডিঙিয়েই পড়ুয়া এবং বাসিন্দারা যাতায়াত করেন। জলবাহিত রোগের প্রকোপও লেগেই থাকে।
রাস্তা গর্তে ভরা। ইট আর কাদা মিশে বিপজ্জনক অবস্থা। তার উপরে নানা জায়গায় জল জমে রয়েছে। কেউ অসুস্থ হলে তাঁকে কাঁধে করে হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া ছাড়া অন্য কোনও উপায় নেই। বাসিন্দারা জানান, বর্ষা শেষ না হওয়া পর্যন্ত এই দুর্দশার মধ্যে কাটাতে হয়। বাসিন্দা রমা নস্কর বলেন, “পনেরো বছর এখানে আছি। সেই থেকেই এই হাল। কোনও পরিবর্তন হয়নি।” এলাকার অধিকাংশ বাসিন্দা পেয়ারা চাষের সঙ্গে যুক্ত। এলাকায় প্রচুর পেয়ারার বাগানও রয়েছে। অভিযোগ, একটু বৃষ্টি হলেই বাগানে জল দাঁড়িয়ে যায়। দীর্ঘ ক্ষণ জল দাঁড়িয়ে থাকায় পেয়ারা গাছের ক্ষতি হয়।
বাসিন্দাদের অভিযোগ, সমস্যার সুরাহা চেয়ে তাঁরা পঞ্চায়েতের প্রতিনিধিদের অনেক বার জানিয়েছেন। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা জানান, রাজ্যে ক্ষমতার পরিবর্তন হলেও এই এলাকায় উন্নয়নের কাজ শুরু হয়নি। বাসিন্দাদের সমস্যার কথা স্বীকার করে কল্যাণপুর পঞ্চায়েতের উপপ্রধান তৃণমূলের স্বপন মণ্ডল বলেন, “এই এলাকায় জল বেরনোর জন্য একটি কাঁচা নর্দমা ছিল। সংস্কার না হওয়ায় সে নর্দমা রুদ্ধ হয়ে গিয়েছে। পুজোর পরে এই এলাকার নিকাশি এবং রাস্তার উন্নয়ন নিয়ে চিন্তাভাবনা করা হবে।”
বারুইপুর পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি তৃণমূলের প্রকাশচন্দ্র মণ্ডলের কথায়: “এলাকার বাসিন্দারা আমাদের সমস্যার কথা বললে আমরা পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত করি। তার পরে নির্দিষ্ট কাজের জন্য অর্থ বরাদ্দ করা হয়। তবে এই এলাকার ক্ষেত্রে কী হয়েছে তা বলতে পারছি না।” বিধানসভার অধ্যক্ষ এবং বারুইপুর পশ্চিমের বিধায়ক বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “সমস্যার সুরাহার জন্য কল্যাণপুর পঞ্চায়েতকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেব।”

ছবি: পিন্টু মণ্ডল




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.