দক্ষিণ কলকাতা: বেহালা
ট্রমা কেয়ার সেন্টার
আপৎকালে অমিল
কাছেই জাতীয় সড়ক। প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে। কিন্তু আশপাশের হাসপাতালে ট্রমা কেয়ার ইউনিট নেই। ফলে গুরুতর জখম হলে কলকাতায় নিয়ে যেতে হয়। এতে নষ্ট হয় সময়। ফলে আহতদের সঙ্কট বাড়ে। এমনই অভিযোগ ডায়মন্ড হারবার রোড সংলগ্ন আমতলা গ্রামীণ হাসপাতাল, লক্ষ্মীবালা দত্ত গ্রামীণ হাসপাতাল কিংবা বিদ্যাসাগর স্টেট জেনারেল হাসপাতাল নিয়ে।
লক্ষ্মীবালা
দুর্ঘটনায় গুরুতর জখম রোগীদের দ্রুত চিকিৎসার জন্য আলাদা করে ট্রমা কেয়ার ইউনিট তৈরি হয়। অভিযোগ, ডায়মন্ড হারবার রোড সংলগ্ন হাসপাতালগুলিতে সেই ব্যবস্থা নেই। জখমদের পাঠাতে হয় কলকাতায়। ফলে জরুরি সময় নষ্ট হয়। এতে আহতদের সঙ্কট বাড়ে। যেমন, ডায়মন্ড হারবার রোডের উপরে আমতলা গ্রামীণ হাসপাতাল। আমতলা মোড় থেকে মাত্র পাঁচ মিনিটের রাস্তা। বসতি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এলাকার আর্থসামাজিক পরিবর্তন ঘটলেও হাসপাতালটি এখনও গ্রামীণ।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, প্রতি দিন দুর্ঘটনায় গুরুতর জখম তিন-চার জন রোগী আসেন। সামান্য প্রাথমিক চিকিৎসা ছাড়া বিশেষ কিছু করা যায় না। মাথায় চোট কিংবা অর্থোপেডিক সমস্যা হলে পাঠানো হয় বাঙুর হাসপাতালে। গুরুতর জখম হলে এসএসকেএম কিংবা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে রেফার করা হয়।
আমতলা সংলগ্ন বিষ্ণুপুর ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি রব্বেল শেখ বললেন, “আমাদের এখানে ট্রমা কেয়ার ইউনিট চালু করা খুবই দরকার। আমরা এ ব্যাপারে উপর মহলে আবেদন করেছি।”
আমতলা
লক্ষ্মীবালা দত্ত হাসপাতালেও জখমদের প্রাথমিক চিকিৎসা করা ছাড়া কোনও ব্যবস্থা নেই বলে অভিযোগ। ফলে এখানেও গুরুতর জখমদের রেফার করে দেওয়া হয়। বেহালা ট্রাম ডিপোর কাছে বিদ্যাসাগর স্টেট জেনারেল হাসপাতাল। হাসপাতাল সূত্রে খবর, এখানে দুর্ঘটনায় আহত কেউ এলে শুধু অর্থোপেডিক সমস্যার চিকিৎসা করা যায়। নিউরোসার্জারির কোনও আলাদা ইউনিট না থাকায়, মাথায় আঘাত নিয়ে কোনও রোগী এলে তাঁকে এসএসকেএম-এ রেফার করা হয়।
বাঙুর হাসপাতালেও কোনও ট্রমা সেন্টার নেই বলে অভিযোগ। বাঙুর হাসপাতাল সূত্রের খবর, বর্তমানে আইটিইউ স্টেপ ডাউন ইউনিটের সঙ্গেই ট্রমা কেয়ার ইউনিটটি জুড়ে দেওয়ার প্রস্তাব উঠেছে। খুব শীঘ্রই এটি চালু হবে। তার আগে সিটি স্ক্যানের ইউনিট চালু করে দেওয়া হবে।
স্বাস্থ্য দফতরের জনসংযোগ আধিকারিক অসিত বিশ্বাস বলেন, “সরকারি নীতি অনুযায়ী সাধারণত কোনও গ্রামীণ হাসপাতালে ট্রমা কেয়ার ইউনিট থাকে না। তবে ছোটখাটো অস্ত্রোপচারের ব্যবস্থা থাকেই। সেই ব্যবস্থাও না থাকলে ওই সব হাসপাতালের আধিকারিকেরা জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে জানাবেন। তিনি স্বাস্থ্য দফতরকে জানালে আমরা ব্যবস্থা নিতে পারি।” তবে এই মুহূর্তে রাজ্যে নিউরোসার্জেনের সংখ্যা কম রয়েছে বলে তিনি স্বীকার করে নিয়েছেন।
বিদ্যাসাগর
ট্রমা কেয়ার ইউনিট চালু করার জন্য গ্রামীণ হাসপাতালগুলিকে তার পরের স্তরে উন্নতি করা সম্ভব কি?
অসিতবাবু বলেন, “হুট করে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় না। আর্থসামাজিক অবস্থা, স্থানীয় বাসিন্দাদের প্রয়োজন ইত্যাদি বিবেচনা করে সরকারই এই সিদ্ধান্ত নেবে।”

ছবি: পিন্টু মণ্ডল




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.