|
|
|
|
|
|
বৃথা উড়ালপথ |
পা মাটিতেই |
দীক্ষা ভুঁইয়া |
ব্রিজের রেলিংয়ে অধিকাংশ সময়ে আশপাশের বস্তির কাপড়জামা শুকোয়। উড়ালপথটি রাজাবাজার মোড় থেকে বেশ খানিকটা দূরে। তাই সেটি বড় একটা ব্যবহার করেন না স্থানীয় মানুষ। রাজাবাজার মোড়ে লোকজন তাই রাস্তা দিয়েই পারাপার করেন। অভিযোগ উঠেছে, উড়ালপথ দূরে হলেও এই মোড় পারাপারের সময় এলাকার মানুষ সিগন্যালও ঠিকমতো মানেন না। তাই প্রায়ই ওই মোড়ে ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটে। সেই কারণেই দুর্ঘটনা কমানোর জন্য পুরসভা সিদ্ধান্ত নিয়েছে শহরের আরও কয়েকটি মোড়ে উড়ালপথ তৈরি করার।
|
|
বিজনসেতু |
এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এবং কোন কোন জায়গায় উড়ালপথগুলি হবে, সে ব্যাপারে তৈরি হয়েছে পুরসভার স্ট্রিট টেকনিক্যাল কমিটি। কমিটিতে পুরসভার পাশাপাশি কলকাতা ট্রাফিক পুলিশ, পূর্ত দফতর এবং পরিবহণ দফতর যুক্ত থাকছে। পুরসভার সংশ্লিষ্ট দফতর থেকে জানা গিয়েছে, ওই কমিটি ৩২টি নতুন উড়ালপথ তৈরির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে। পুরসভার ওই দফতর থেকে আরও জানা গিয়েছে, এত দিন প্ল্যানিং ডিপার্টমেন্ট থাকলেও, কোনও স্ট্রিট টেকনিক্যাল ডিপার্টমেন্ট কমিটি ছিল না।
সম্প্রতি পুরসভার পক্ষ থেকে এই কমিটি তৈরি হয়েছে উড়ালপথের বিষয়টি দেখভালের জন্য। এর মধ্যে চারটি মোড়ে, যেমন, চিড়িয়াখানার সামনে, এম জি রোড ও চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউর সংযোগস্থল, উত্তরে চিড়িয়ামোড় এবং মধ্য কলকাতায় রাজাবাজার চারমাথার মোড়ে উড়ালপথ তৈরির সিদ্ধান্ত ইতিমধ্যেই নেওয়া হয়েছে বলে পুরসভা সূত্রের খবর। কলকাতা ট্রাফিক পুলিশের পক্ষ থেকে আরও ৩৭টি পয়েন্টে উড়ালপথ তৈরির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, সেগুলি সাধারণ মানুষ কতটা ব্যবহার করবেন? কারণ শহরে ইতিমধ্যেই যে কয়েকটি উড়ালপথ রয়েছে, সেগুলির অধিকাংশই মানুষ ব্যবহার করেন না।
|
|
|
ঢাকুরিয়া |
|
যেমন, ঢাকুরিয়া উড়ালপথ। এখানে উড়ালপথ ফাঁকা পড়ে থাকলেও, সকলেই কোনও না কোনও ভাবে গাড়ির মাঝখান দিয়েই রাস্তা পারাপার করছেন। একই অবস্থা পার্ক সার্কাস চার নম্বর ব্রিজের উড়ালপথের। এখানে উড়ালপথে ওঠার জন্য সিঁড়ির পাশাপাশি লিফ্ট রয়েছে, কিন্তু সেটিও হাতে গোনা মানুষ ব্যবহার করেছেন। এ ছাড়াও রয়েছে বিজনসেতুর আগে একটি উড়ালপথ। সেখানে আবার পথচারীদের সুবিধার জন্য সিঁড়ির পাশাপাশি রয়েছে এসকালেটর। কিন্তু তাতে কী? সাধারণ পথচারী, এমনকী, বয়স্ক মানুষরাও খুব কমই এই উড়ালপথটি ব্যবহার করেন।
শহর কলকাতা জুড়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ মোড় রয়েছে, যেখানে সাধারণ মানুষের রাস্তা পারপার নিরাপদ করতে তৈরি করা হয়েছে উড়ালপথ। কিন্তু অধিকাংশ জায়গাতেই দেখা যায়, কেউই উড়ালপথ ব্যবহার করছেন না। সকলেই বিপজ্জনক ভাবে ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পারাপার করছেন। এর পরেও কলকাতার সৌন্দর্যায়ন এবং উন্নয়নে কলকাতা পুরসভা সম্প্রতি শহরের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে উড়ালপথ তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, যে উড়ালপথগুলি রয়েছে, সেগুলিই কেউ ব্যবহার করেন না, তার উপর আরও উড়ালপথ তৈরি করলে তা কতটা মানুষ ব্যবহার করবেন? |
|
রাজাবাজার |
ডিসি (ট্রাফিক) দিলীপ আদক বলেন, “সাধারণ মানুষকে সচেতন করাটা খুবই দরকার। কিন্তু সেটি খুব তাড়াতাড়ি করা সম্ভব হবে না। আস্তে আস্তে এই সচেতনতা বিভিন্ন মিডিয়ার মাধ্যমে ঘোষণা করে বাড়াতে হবে।” পুরসভার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় বলেন, “উড়ালপথগুলি তৈরি করা হলে যাতে মানুষ উড়ালপথ ব্যবহার করেন, সেই ব্যবস্থাই আমরা নেওয়ার চেষ্টা করব।” তবে কোনও লোক নিয়োগ করা হবে কি না, সে ব্যাপারে পুরসভা এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি বলেই
তিনি জানান।
|
ছবি: পিন্টু মণ্ডল ও স্বাতী চক্রবর্তী |
|
|
|
|
|