|
|
|
|
|
|
অপ্রচলিত শক্তি |
বিলম্বিত প্রকল্প |
দেবাশিস ঘোষ |
কাজ শুরু করতে দেরি। এর মধ্যেই চলে এসেছে নতুন প্রযুক্তি। তাই আপাতত বন্ধ রয়েছে বেলগাছিয়া ভাগাড়ের জঞ্জাল থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র তৈরির কাজ।
২০০৯-এর নভেম্বরে বেলগাছিয়া ভাগাড়ের জঞ্জাল থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের কথা ঘোষণা করে হাওড়া পুরসভা। প্রধান উপদেষ্টা ছিল ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল গ্রিন এনার্জি ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন’ (ওয়েবরেডা)। কেন্দ্রটি গড়ার জন্য হায়দরাবাদের একটি সংস্থার সঙ্গে হাওড়া পুরসভার চুক্তি হয়েছিল। কথা ছিল, ২০১১-র মধ্যেই বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হবে। চুক্তি অনুযায়ী, ওই সংস্থাকে দশ একর জমি দেয় পুরসভা। ঠিক হয়, প্রতি দিন কেন্দ্রটিতে ৫০০ মেট্রিক টন জঞ্জাল সরবরাহও করবে পুরসভা। বিনিময়ে জমির ভাড়া ছাড়া বিদ্যুৎ বিক্রির লভ্যাংশও পাবে পুরসভা।
|
|
কিন্তু, তিন বছরে শুধুই পাঁচিল দেওয়ার কাজ হয়েছে। অভিযোগ, প্রথমেই জমি হস্তান্তরের প্রক্রিয়ায় বিলম্ব হয়। তত দিনে নতুন প্রযুক্তিও চলে এসেছে। এখন নতুন প্রযুক্তিতে বিদ্যুৎ কেন্দ্র গড়া যায় কি না, তা নিয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু হয়েছে। হায়দরাবাদের সংস্থাটির ভাইস প্রেসিডেন্ট জলজ চতুর্বেদী বলেন, “প্রথমে পুরসভা ২৫ শতাংশ জমি দিয়েছিল। বাকি জমি পেতে এক বছর লেগে যায়। তত দিনে নতুন প্রযুক্তি এসে গিয়েছে। তাই ওয়েবরেডা আপাতত কাজ স্থগিত রাখার নির্দেশ দিয়েছে। তা ছাড়া পুরনো প্রযুক্তিতে ছাড়পত্র পাওয়ায় সমস্যা হয়েছিল।”
হাওড়া শহরকে ‘সৌর শহর’ হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে। এ জন্য মাস্টার প্ল্যান তৈরির কাজ চলছে। এই প্রকল্পের চেয়ারম্যান হাওড়ার মেয়র মমতা জয়সোয়াল। ভাইস চেয়ারম্যানের দায়িত্বে আছেন ওয়েবরেডা-র বোর্ডের সদস্য শান্তিপদ গণচৌধুরী। শান্তিবাবু জানান, নতুন পদ্ধতিতে জঞ্জাল প্লান্টে আসার পরে স্বয়ংক্রিয়-যন্ত্রে ইট, লোহার টুকরো, প্লাস্টিকের মতো অজৈব পদার্থ আলাদা হয়ে যাবে। জৈব অংশ ছোট করে টুুকরো করা হবে। এগুলি শুকিয়ে গেলে রিডিউসড ডিরাইভড ফুয়েল (আরডিএফ) তৈরি হয়। নতুন পাইরোলিসিস পদ্ধতিতে আরডিএফের সঙ্গে বিশেষ রাসায়নিকের স্পর্শে গ্যাস তৈরি হবে। এই গ্যাস সরাসরি টারবাইনে গিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনের কাজে লাগবে। পুণেতে এখন এই পদ্ধতিতেই বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। |
|
পুরসভা সূত্রে খবর, জঞ্জাল থেকে বিদ্যুৎ তৈরি হলে আবর্জনা ফেলার জায়গার সমস্যা কমবে। তা ছাড়া আবর্জনায় জল জমে মিথেন গ্যাসও কম তৈরি হবে। যদিও পরিবেশবিদ সুভাষ দত্ত বলেন, “শহরে প্রতি দিন বর্জ্য জমা হয় প্রায় দেড় হাজার মেট্রিক টনের বেশি। ৫০০ মেট্রিক টন জঞ্জাল বিদ্যুৎ উৎপাদনের কাজে লাগানোর কথা বলা হলেও বাকি জঞ্জাল কিন্তু থেকে যাচ্ছে। যেখানে বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র গড়ার কথা ছিল, সেই পাঁচিল ঘেরা অংশের জঞ্জাল ফেলে স্তূপ হয়ে গিয়েছে। হাওড়া পুরসভা ও রাজ্য সরকারের উচিত আগে জঞ্জাল ফেলার নতুন জায়গার সন্ধান করা।”
মেয়র মমতা জয়সোয়াল বলেন, “নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করে শহরাঞ্চলে অপ্রচলিত বিদ্যুৎ উৎপাদন করার উল্লেখ মাস্টার প্ল্যানে থাকছে। দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের অনুমতি পেলে কাজ শুরু করা যেতে পারে।”
|
ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার |
|
|
|
|
|