বাজার খুশি, তবে সংশয় স্থায়িত্ব নিয়ে
শুধু সংস্কারের সড়কে ফেরার ইঙ্গিতেই আলোর রোশনাই শেয়ার বাজারে। তাই শুক্রবার দীর্ঘ দিনের ইচ্ছেপূরণের পর এখন তাকে ঘিরে ২১ হাজার ছাড়ানোর প্রত্যাশা। কিন্তু এই আনন্দ কতটা দীর্ঘস্থায়ী হবে, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে যথেষ্ট। কারণ, চাপ বজায়ের শরিকি রাজনীতি ফের সংস্কারের কর্মসূচি রূপায়ণের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন অনেকে।
নীতি-পঙ্গুত্বের অভিযোগ মুছে দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া অর্থনীতিকে ঘুরিয়ে দাঁড় করাতে মনমোহন সিংহ যে সংস্কারের ঝোড়ো দ্বিতীয় ইনিংস খেলতে চান, তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল বৃহস্পতিবারই। ঘাটতিতে রাশ টানতে ওই দিনই ডিজেলের দাম লিটারে ৫ টাকা বাড়ানোর কথা ঘোষণা করেছে কেন্দ্র। শুক্রবার মূলত এরই জেরে এক লাফে ৪৪৩ পয়েন্ট উঠে গিয়েছে সেনসেক্স। পৌঁছেছে ১৮,৪৬৪.২৭ অঙ্কে। গত ৭ মাসে যা সর্বোচ্চ।
ডিজেলের দাম বাড়ানোর ফলে শুধু রাজকোষ ঘাটতি কমার সম্ভাবনাতেই বাজার উল্লসিত হয়নি। বরং ওই পদক্ষেপকে হাওয়া-মোরগ হিসেবে মনে করেছে তারা। আশা করেছে, ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধির মতো সংবেদনশীল বিষয়ে যদি এত সাহসী সিদ্ধান্ত কেন্দ্র নিতে পারে, তা হলে এ বার একে একে খুলে যাবে সংস্কারের বাকি দরজাও। বিশেষত যে গুলি আটকে রয়েছে দীর্ঘ দিন ধরে। বহু পণ্যের খুচরো ব্যবসায় বিদেশি লগ্নি, বিমান পরিষেবার দরজা বিদেশি সংস্থাগুলির জন্য খুলে দেওয়ার মতো বিষয়গুলি যে কতটা হাওয়ায় ছিল, তা স্পষ্ট এ দিন ওই সব সংস্থার অধিকাংশেরই শেয়ার দরের উত্থানে। তাই ’৯১-এর ‘ফর্মে ফিরে’ মনমোহন এ দিন প্রায় সব প্রত্যাশাই পূরণ করার পর সেনসেক্স ২১ হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে আশা করছেন অনেকে।
ক্যালকাটা স্টক এক্সচেঞ্জের ডিরেক্টর এস কে কৌশিকের মতে, “বিদেশি বিনিয়োগকে ছাড়পত্র দেওয়ার সিদ্ধান্তগুলি বিশেষ করে উৎসাহ দেবে বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলিকে।” ফলে দ্রুত ২১ হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে সেনসেক্স।
কিন্তু বাজারের এই তেজী ভাব দীর্ঘ মেয়াদে কতটা বজায় থাকবে, তা নিয়ে সন্দিহান অনেক বিশেষজ্ঞই। যেমন, কৌশিক-ই মনে করছেন বাজারের স্থিতিশীলতা বজায় রাখার ক্ষেত্রে বিদেশি আর্থিক সংস্থাগুলির লগ্নি তেমন নির্ভরযোগ্য নয়। অনেকে আবার মনে করছেন, রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সুদ কমানোর আশাতেও দীর্ঘ দিনই প্রহর গুনছে বাজার। কিন্তু সেই আশায় জল ঢেলে দিতে পারে অগস্টে মূল্যবৃদ্ধি ফের ৭.৫৫ শতাংশে উঠে আসা। উল্লেখ্য, জুলাইয়ে তা ছিল ৬.৮৭%। কেউ আবার আঙুল তুলছেন ডিজেলের দাম বৃদ্ধি এবং সংস্কার নিয়ে ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে যাওয়া রাজনৈতিক তরজার দিকে। তাঁদের আশঙ্কা, শরিকি চাপে এ নিয়ে ফের না পিছু হঠে কেন্দ্র।
ব্যাঙ্ক অফ বরোদা পাইওনিয়ার মিউচুয়াল ফান্ডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর জয়দীপ ভট্টাচার্য বলেন, “বাজার এত দিন এই সমস্ত ঘোষণার অপেক্ষাতেই ছিল। ফলে এখন তা তেজী হবে। তবে স্বল্পকালীন মেয়াদে বাজার দ্রুত ওঠানামা করার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।” একই মত পোষণ করেন বাজার বিশেষজ্ঞ অজিত দে। তাঁর মতে, “ভারতের অর্থনীতির ভিত যে যথেষ্ট মজবুত, তাতে সন্দেহ নেই। প্রয়োজন ছিল আর্থিক সংস্কারের ক্ষেত্রে সঠিক সিদ্ধান্ত। দেরিতে হলেও সরকার সেই সিদ্ধান্ত নেওয়ায় বাজার যে চাঙ্গা হবে, তাতে সন্দেহ নেই।” তবে সামলে লগ্নি করার পরামর্শ দিচ্ছেন তিনিও। কৌশিকের আবার আশঙ্কা, “টু-জি, কয়লা ইত্যাদি কেলেঙ্কারির জেরে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ক্রমশ ঘোরালো হচ্ছে। তারও বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে বাজারে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.