হাট থেকে বাড়ি ফেরার পথে এক মাংস বিক্রেতাকে কুপিয়ে খুন করা হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে রায়গঞ্জ থানার মহিপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের লক্ষ্মনীয়া মোড়লটুলি এলাকায়। বুধবার সকালে ওই এলাকা থেকেই তাঁর দেহটি উদ্ধার হয়। পুলিশ জানায়, নিহতের নাম সুপেন্দ্রনাথ বর্মন (৫২)। তিনি স্থানীয় মহারাজা হাটে মাংস বিক্রি করতেন। পাশাপাশি তিনি তাঁর নিজস্ব প্রায় ৩৫ বিঘা জমিতে চাষবাসও করতেন। তাঁর শরীরের একাধিক আঘাতের চিহ্ন মিলেছে। এক বা একাধিক দুষ্কৃতী মিলে তাঁকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে খুন করেছে বলে পুলিশের সন্দেহ। সুপেন্দ্রনাথবাবু তৃণমূল কংগ্রেসের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। তৃণমূলের অভিযোগ, সুপেন্দ্রনাথবাবুর নেতৃত্বে তৃণমূলের প্রভাব বাড়ছিল দেখে সিপিএমের মদতপুষ্ট দুষ্কৃতীরা খুন করে থাকতে পারে। সিপিএমের তরফে ওই ঘটনায় রাজনীতি নেই বলে দাবি করা হয়েছেএলাকার সিপিএম নেতারা সুপেন্দ্রনাথবাবু নির্বিরোধ ও ভালমানুষ ছিলেন বলে জানিয়েছেন। রায়গঞ্জের ডিএসপি জ্যোতিষ রায় বলেন, “ব্যবসা সংক্রান্ত টাকা পয়সা লেনদেন অথবা মদ খাওয়া নিয়ে গোলমালের জেরে ওই ব্যক্তিকে কুপিয়ে খুন করা হয় বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। তবে সমস্ত বিষয়ই তদন্ত করে দেখছি। দুষ্কৃতীদের চিহ্নিত করে তাড়াতাড়ি ধরার চেষ্টা চলছে।” মঙ্গলবার দুপুর ২টো নাগাদ তিনি বাড়ি থেকে সাইকেলেহাটে রওনা হন। সন্ধ্যা নাগাদ দোকান বন্ধ করে বাড়ি ফেরার পেই তিনি নিঁখোজ হয়ে যান। তাঁর ছেলে নন্দলালবাবু বলেন, “বাবাকে হাট থেকে বাড়ি ফেরার পথে স্থানীয় কাঁঠালতলায় কয়েক জন অপরিচিত ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলতে দেখেছি। রাত পর্যন্ত তিনি বাড়িতে না ফেরায় খুঁজেও বাবার হদিস পাইনি। বাবা তৃণমূলের কর্মী হলেও কারও সঙ্গে শত্রুতা ছিল না। সিপিএমের কর্মী সমর্থকদের সঙ্গেও বাবার ভাল সম্পর্ক ছিল। কি কারণে তাঁকে খুন হতে হল বুঝতে পারছি না।” স্থানীয় হাট ব্যবসায়ী রাজেশ বর্মন, মধু সাহা, বাবু ঘোষ জানান, সুপেন্দ্রনাথবাবুর সঙ্গে সব ব্যবসায়ীর ভাল সম্পর্ক ছিল। এ দিন নিহতের বাড়ি যান উত্তর দিনাজপুর জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা দলের উত্তরবঙ্গ কোর কমিটির সদস্য তিলক চৌধুরী সহ জেলা নেতারা। তিলকবাবুর নালিশ, “পঞ্চায়েত ভোটে আগে তৃণমূলকে দুর্বল ও ক্ষমতা ধরে রাখার লক্ষ্যে সিপিএম আশ্রিত দুষ্কৃতীরা সুপেন্দ্রনাথবাবুকে কুপিয়ে খুন করেছে।” সিপিএমের জেলা সম্পাদক বীরেশ্বর লাহিড়ী বলেন, “রাজনৈতিক স্বার্থে মিথ্যা অভিযোগ তোলা হচ্ছে। পুলিশ তদন্ত করলেই সব কিছু স্পষ্ট হয়ে যাবে।” |