হোটেলের ঘর থেকে এক ব্যক্তির মৃতদেহ উদ্ধারের ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। বুধবার সকাল ১০টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটে প্রধানগর থানা লাগোয়া একটি হোটেলে। পুলিশ জানায়, মৃতের নাম সুভাষ দাস (৬৫)। তাঁর বাড়ি কলকাতার খানপুর রোডে। সুভাষবাবুর বা হাঁতের শিরা কাটা ছিল। তাঁর দেহ বিছানায় ছিল। দেহের পাশ থেকে একটি ব্লেড উদ্ধার করেছে পুলিশ।
প্রাথমিক ভাবে পুলিশের সন্দেহ, সুভাষবাবু আত্মহত্যা করেছেন। সেখান থেকে একটি ‘সুইসাইড নোট’ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তাঁর পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, জেসিপি-সহ ওই ধরনের জিনিসপত্র বিক্রির ব্যবসা রয়েছে সুভাষবাবুর। বাজারে ব্যবসার প্রচুর টাকা বাকি পড়ে যাওয়ায় তিনি বেশ কিছুদিন ধরে হতাশায় ভুগছিলেন। শিলিগুড়ির ডেপুটি কমিশার ও জি পাল বলেন, “প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে ওই ব্যক্তি আত্মহত্যা করেছে। একটি ‘সুইসাইড নোট’ উদ্ধার হয়েছে। তাঁর মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয় বলে তিনি ওই নোটে লিখেছেন। একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে।” সুভাষবাবুর ছেলে সুপ্রতিমবাবু বলেন, “ব্যবসা সংক্রান্ত ব্যাপারে বাবা শিলিগুড়িতে যান। ডেসিপি বাবদ বেশ কয়েকজনের কাছে বাবা টাকা পেতেন। দীর্ঘদিন ধরে তাগাদা দিয়েও তা না-পেয়ে বাবা অবসাদে ভুগছিলেন।”
হোটেলের ম্যানেজার অমল পোদ্দার জানান, সুভাষবাবুর জেসিপি সহ বিভিন্ন জিনিসপত্র বিক্রির ব্যবসা রয়েছে। সেই সূত্রে তিনি কালিম্পংয়ে যাতায়াত করতেন। দীর্ঘদিন ধরে ওই হোটেলেই তিনি উঠতেন। সেখান থেকেই কালিম্পংয়ে যাতায়াত করতেন। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ তিনি হোটেলে যান। এ দিন তাঁর কালিম্পং যাওয়ার কথা ছিল। মঙ্গলবার তিনি হোটেল থেকে বেরোননি। রাত ৮টা নাগাদ রাতের খাবার চেয়ে নেন। সেই সময় তিনি হোটেলের এক কর্মীকে জানান, খাবারের বাসন তিনি দরজার বাইরে রেখে দেবেন। এদিন সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ সুভাষবাবুর ছেলে সুপ্রতিমবাবুর ফোন পান হোটেল ম্যানেজার। তিনি সে সময় বাড়িতে ছিলেন। অমলবাবু বলেন, “সুভাষবাবু দীর্ঘদিন ধরেই আমাদের হোটেলে যাতায়াত করতেন। স্বাভাবিক তাঁর বাড়িতেও আমার ফোন নম্বর ছিল। এদিন সকালে সুভাষবাবুর ছেলে আমাকে ফোন করে জানান, তাঁর বাবাকে ফোনে পাওয়া যাচ্ছে না। সঙ্গে সঙ্গে হোটেলে যোগাযোগ করি। হোটেল কর্মীরা ডাকাডাকি করে কোনও সাড়া না পাওয়ায় পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ গিয়ে দরজা ভেঙে বিছানার উপরে তাঁর মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখে।” ঘটনার খবর পেয়ে সেখানে যান প্রধাননগর থানার আইসি রাজীব ভট্টাচার্য, গোয়েন্দা বিভাগের ইন্সপেক্টর রাজেন ছেত্রী। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সুভাষবাবু হৃদযন্ত্রের সমস্যায় ভুগছিলেন। এ ছাড়া তাঁর বার্ধক্যজনিত কিছু রোগও ছিল। কিন্তু কী কারণে তিনি বাড়ি থেকে এতটা দূরে এসে আত্মহত্যা করবেন তা নিয়ে ধন্দে পড়েছেন পুলিশ কর্তারা। |