মালিক-ভাড়াটে দ্বন্দ্ব হাতাহাতি, অবরোধ
মালিক-ভাড়াটে বিরোধ গড়িয়েছে আদালত পর্যন্ত। এ বার চুরির অভিযোগ নিয়ে দু-তরফের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনাও ঘটল। বুধবার সকালে ঘটনাটি ঘটে শহরের সেবক মোড় লাগোয়া এলাকায়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শহরের ওই এলাকায় সম্প্রতি একটি হোটেল কিনেছেন ব্যবসায়ী কাজল সরকার। কাজলবাবু হোটেল ভবনের নিচতলায় দীর্ঘদিন ধরে বসবাসকারী ভাড়াটেদের একাংশকে জবরদস্তি সরাতে চাইছেন বলে অভিযোগ নিয়ে বিতর্ক দানা বাধে। এ দিন নিচতলার ভাড়াটে তথা ব্যবসায়ী রাজকুমার বনসালের সঙ্গে গোলমাল বাধে। উভয় তরফেই পরস্পরের বিরুদ্ধে থানায় মারধরের অভিযোগ দায়ের করেছেন। রাজকুমারবাবুর পক্ষ নিয়ে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের একাংশ রাস্তায় নেমে অবরোধ করেন। তাঁরা ওই এলাকায় দোকানপাট বন্ধ রাখার আর্জি জানান। তাতে সাড়া দিয়ে কিছু দোকান বন্ধ হয়ে যায়। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। শিলিগুড়ির অতিরিক্ত ডেপুটি পুলিশ কমিশনার এ রবীন্দ্রনাথ বলেন, “দু’তরফেই অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে।” রাজকুমারবাবুর অভিযোগ, “হোটেলটি নিজের দখলে নেওয়ার পর থেকেই কাজলবাবু তাঁদের সেখান থেকে তুলে দেওয়ার চেষ্টা শুরু করেন। তাঁর হোটেলের ভিতরে একটি মোটর পার্টসের গুদাম ঘর রয়েছে। মঙ্গলবার রাত ১২টা নাগাদ ওই গুদামে ঢুকে চুরির চেষ্টা হয়। সেখানে থাকা নিরাপত্তারক্ষীর কাছে বিষয়টি জেনে রাতে তিনি হোটেলের সামনে যান।
সেবক রোডে উত্তেজনা। ছবি তুলেছেন কার্তিক দাস।
কিন্তু তাঁকে ভিতরে ঢুকতে দেওয়া হয় না বলে অভিযোগ। এদিন সকালে তিনি তাঁর ছেলে অনুপকে নিয়ে ফের হোটেলের সামনে যান। সেই সময় সেখানে কাজলবাবু ছিলেন। তিনি কয়েকজন শ্রমিককে সঙ্গে নিয়ে তাঁদের মারধর করেন।” পক্ষান্তরে, কাজলবাবু ওই অভিযোগ ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করেন। তাঁর অভিযোগ, “রাজকুমারবাবুর গুদামে কোনও চুরির চেষ্টা হয়নি। মিথ্যে অভিযোগ। এ দিন সকালে আমি আমার স্ত্রীকে নিয়ে হোটেলে যাই। সেই সময় হোটেলের সামনে রাজকুমারবাবুরা দাঁড়িয়ে ছিলেন। তাঁরা আচমকা আমাকে মারধর শুরু করেন। পরে শ্রমিকরা বেরিয়ে এলে তাঁরা চলে যান। তাঁরা বহুদিন ধরে হোটেলটি বন্ধ করে দেওয়ার চেষ্টা করছেন। পুলিশকে সব জানিয়ে একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।” তিনি জানান, হোটেল চালানোর সমস্ত বৈধ কাগজপত্র তাঁর রয়েছে। সরাই লাইন্সেস না থাকায় দশ দিন আগে হোটেল বন্ধ করে দিয়েছিল প্রশাসন। মঙ্গলবার তিনি ওই লাইন্সেস পেয়েছেন বলে দাবি করেন। এদিন ঘটনাস্থলে গিয়ে রাজকুমারবাবুদের পাশে দাঁড়ান ১০ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিএম কাউন্সিলর কমল অগ্রবাল। তিনি বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে হোটেলটি নিয়ে গণ্ডগোল চলছে। আদালতে একটি মামলাও চলছে। এই অবস্থায়, হোটেলে পুলিশ পিকেট বসানো উচিত। না হলে বড় ধরনের কোনও ঘটনা ঘটলে সে জন্য প্রশাসন দায়ী থাকবে।” ওই দুই পক্ষের বিরোধ মেটাতে এর আগে কয়েক দফায় সেখানে যান শিলিগুড়ি পুরসভার চেয়ারম্যান নান্টু পাল। তিনি বলেন, “জোর করে ভাড়াটেদের তুলে দেওয়ার চেষ্টা ঠিক নয়। প্রশাসনের তরফে নিরপেক্ষ ভাবে তদন্ত করে বিষয়টি দেখা উচিত।” হোটেল কর্তৃপক্ষ জানান, দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পরে পুজোর মুখে হোটেলটি চালুর প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। এমতাবস্থায়, ঘনঘন গোলমালের জেরে হোটেলটি চালু হওয়া নিয়ে সংশয়ে পড়েছেন কর্মীরা। কর্মীদের তরফে জানানো হয়েছে, হোটেল মালিকের সঙ্গে ভাড়াটের সমস্যা নিয়ে আদালতে মামলা বিচারাধীন। এতদসত্ত্বেও ঘনঘন গোলমালের জেরে হোটেল চালুর প্রক্রিয়া যাতে বন্ধ না-হয়, সে জন্য পুলিশ-প্রশাসনের কাছে আর্জি জানিয়েছেন কর্মীরা।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.