পুরসভায় পার্কিং ফি বিতর্ক
ঠিকাদারকে ধরার দাবি
র্থিক নয়ছয় এবং পুরসভার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ জানানোর ৩ দিন পরেও পুলিশ অভিযুক্ত রাকেশ পালকে গ্রেফতার করতে না পারায় পুর কর্তৃপক্ষ ক্ষুব্ধ। পুরসভা সূত্রের খবর, পার্কিংয়ের বরাত পেয়ে টাকা সংগ্রহের পরে পুরসভার প্রাপ্য প্রায় ১২ লক্ষ টাকা না মেটানোয় রাকেশবাবুর বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করা হয়। ২০১১-২০১২ সালে সেবক মোড় থেকে পানিট্যাঙ্কি মোড় পর্যন্ত পার্কিংয়ের ফি সংগ্রহের বরাত পেয়েছিলেন তিনি। এ বছর বরাত না পেলেও স্লিপ ছাপিয়ে তাঁর লোকজন ফি সংগ্রহ করছে বলে পুর কর্তৃপক্ষ পুলিশে অভিযোগ করেন। গত সোমবার শিলিগুড়ি পুরসভার তরফে পুলিশে অভিযোগ জানানো হলেও এখনও তাকে কেন ধরা হয়নি তা নিয়ে পুরসভার আধিকারিকদের একাংশ ক্ষুব্ধ।
পুর কমিশনার প্রভুদত্ত ডেভিড প্রধান বলেন, “পুলিশে রাকেশ পালের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানানো হয়েছে। কেন পুলিশ তাকে এখনও ধরেনি বুঝছি না। আশা করি পুলিশ শীঘ্রই ধরবে।” পুর কর্তৃপক্ষ রাকেশবাবুর বিরুদ্ধে আর্থিক তছরুপ, প্রতারণার অভিযোগে ৪০৬, ৪২০-এর মতো জামিন অযোগ্য ধারায় মামলাও করে। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ৪৬৮ ধারাতে জালিয়াতির মামলাও হয়েছে। অরবিন্দপল্লির বাসিন্দা রাকেশবাবু পুরসভার এক আধিকারিকের ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত। রাকেশবাবু আগেই দাবি করেছিলেন, তার কাছে পুর কর্তৃপক্ষ টাকা পান না। তার বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ তোলায় তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগ পেয়ে রাকেশবাবুর বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা হয়েছে। দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পুরসভা সূত্রেই জানা গিয়েছে, রাকেশ পাল-সহ ওই আর্থিক বছরে শহরের বিভিন্ন এলাকায় পার্কিং ফি সংগ্রহের বরাত পাওয়া ৬ জনের কাছে পুরসভার পাওনা প্রায় ২২ লক্ষ টাকা বকেয়া পড়ে আছে। তাঁদের মধ্যে মেয়র-সহ কংগ্রেসের কিছু নেতার ঘনিষ্ট লোকজনও রয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছে বামেরা। তাঁদের দাবি, সে কারণেই ওই ব্যক্তিদের কাছ থেকে বকেয়া তুলতে সচেষ্ট নয় পুর কর্তৃপক্ষ। খোদ উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী এ ব্যাপারে ক্ষোভ প্রকাশ করে জানিয়েছিলেন দলের পরিচিত কিছু লোককে সুযোগ পাইয়ে দিতে এ ভাবে অগ্রিম না নিয়ে বরাত দেওয়া হয়েছিল বলে। চিরঞ্জিৎ ঘোষ এবং মোহন শর্মা নামে দুই ব্যক্তি রয়েছেন সেই তালিকায়। চিরঞ্জিৎবাবু মেয়রের ওয়ার্ডেই থাকেন। মোহনবাবু এবং চিরঞ্জিতবাবু দু’ জনেই কংগ্রেসের ঘনিষ্ঠ বলে অভিযোগ। ২০১১-২০১২ আর্থিক বছরে পুরসভার ১ নম্বর এবং ২ নম্বর পার্কিং জোনে ফি সংগ্রহের বরাত পেয়েছিলেন তারা। মোহনবাবুর কাছে ২ লক্ষ ২১ হাজার টাকা এবং চিরঞ্জিৎবাবুর কাছে পুরসভার প্রায় ১ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা বকেয়া পাওনা আছে। ওই দুই ব্যক্তি-সহ বাকিদের বিরুদ্ধে পুর কর্তৃপক্ষ এখনও কোনও ব্যবস্থা নিতে পারেননি। মেয়র গঙ্গোত্রী দত্ত বলেন, “ওয়ার্ডের বাসিন্দা বলে আমার বা দলের পরিচিত লোককে বরাত পাইয়ে দেওয়া হয়েছিল এমন কিছু ভাবার আবকাশ নেই। টেন্ডার ডেকেই বরাত দেওয়া হয়। যারা টাকা মেটাননি তাঁদের এক জনের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ হয়েছে। টাকা না-মিটিয়েও পুরসভার কাছে কোনও বকেয়া নেই বলে তিনি দাবি করছেন। টাকা আত্মসাতের চেষ্টা করছেন।” মেয়র জানান, বাকিদের কয়েকজন টাকা ফেরত দেবেন বলে যোগাযোগ করেছেন। তাদের কত টাকা বাকি তা নিয়ে আলোচনা করছেন। যারা বকেয়া টাকা ফেরত দেবেন না তাদের বিরুদ্ধে পুরসভা ব্যবস্থা নেবে। চিরঞ্জিৎবাবু এবং মোহনবাবু অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। চিরঞ্জিৎবাবু বলেন, “মেয়রের ওয়ার্ডে থাকি। তাঁকে চিনি। তবে দলের ঘনিষ্ঠ বলে বরাত পেয়েছিলাম বা টাকা মেটাইনি এমন ব্যাপার নেই। পুরসভায় যোগাযোগ করেছি। যে টাকা বাকি আছে বলা হচ্ছে তা ঠিক নয়। কত বাকি আছে তা জানতে চেয়েছি। সামান্য কিছু টাকা বাকি থাকতে পারে। মিটিয়ে দেব।” মোহনবাবুর দাবি, তাঁর বকেয়া পড়ে নেই। পুরসভার বিরোধী দলনেতা মুন্সি নুরুল ইসলামের অভিযোগ, অনিয়মে মেয়র জড়িত। দলের লোকদের সুবিধা পাইয়ে দিতে এ ভাবে বরাত দেওয়া হয়েছিল।” হকার উচ্ছেদ এবং পার্কিংয়ের ফি আদায় নিয়ে পুর কর্তৃপক্ষ জুলুমবাজি করছে বলে সরব বামপন্থী ট্রেড ইউনিয়নগুলি। বুধবার ওই অভিযোগে শিলিগুড়ি পুর কমিশনারকে স্মারকলিপি দেয় তারা। সংগঠনগুলির তরফে সিপিআই নেতা উজ্জ্বল চৌধুরী বলেন, “অগ্রিম টাকা নিয়েই বরাত দেওয়ার নিয়ম মানা হয়নি। পার্কিংয়ের নাম করে বাস, হকারদের থেকে তোলা আদায় করা হচ্ছে পুরসভার নাম করে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.