সিপিএম দশম পাশ ক্যাডার ঢুকিয়েছে প্রাথমিকে: সিব্বল |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
রাজ্যে মাধ্যমিক মানের লোকজনও যে শিক্ষকতা করছেন, তার জন্য পূর্বতন বাম সরকারের প্রধান শরিক সিপিএম-কেই দায়ী করলেন কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী কপিল সিব্বল। তাঁর অভিযোগ, ক্যাডারদের চাকরি দিতে সিপিএম মাধ্যমিক পাশ ছেলেমেয়েদেরও প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক-পদে নিয়োগ করেছিল।
বুধবার ‘ইন্ডিয়ান চেম্বার অফ কমার্স’ আয়োজিত আলোচনাসভায় কার্যত এ রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষার মান নিয়ে কটাক্ষ করেন সিব্বল। এর জন্য বামফ্রন্টের প্রধান শরিক সিপিএম-কেই সরাসরি দায়ী করেন তিনি। বলেন, “এ রাজ্যে দশম শ্রেণি পাশ করা লোকজনও শিক্ষকতা করছেন। এ ভাবে নিজেদের ক্যাডার ঢুকিয়েছে সিপিএম।” যদিও একই সঙ্গে তিনি জানিয়ে দেন, ওই শিক্ষকদের কাউকে চাকরি ছাড়তে বলা হচ্ছে না। তাঁদের শুধু শিক্ষাগত যোগ্যতা বাড়িয়ে নিতে বলা হচ্ছে।
এটি কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর ‘আজব’ অভিযোগ বলে মন্তব্য করেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র। তিনি বলেন, “এই অভিযোগ ভিত্তিহীন।” তার পরেই সিব্বলের কোর্টে বল ঠেলে দিয়ে সূর্যবাবু বলেন, “আমরা যখন সরকারে ছিলাম, তখন উনি মৌনী ছিলেন কেন?”
এ রাজ্যে মাধ্যমিক পাশ করলেই প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক হওয়া যেত। ১৯৯৫ সালে জাতীয় স্তরে ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর টিচার এডুকেশন (এনসিটিই) গঠিত হয়। তাদের বেঁধে দেওয়া নিয়ম অনুযায়ী প্রাথমিক শিক্ষকের ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা অন্তত ৫০ শতাংশ নম্বর পেয়ে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ। কেন্দ্রীয় সরকার সম্প্রতি জানিয়েছে, কর্মরত সব শিক্ষক-শিক্ষিকাকেই ২০১৫-র ৩১ মার্চের মধ্যে প্রশিক্ষণ শেষ করে ডিগ্রি নিতে হবে। অন্যথায় তাঁদের শিক্ষকজীবনের ভবিষ্যৎই অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। যে-সব শিক্ষক বা শিক্ষিকা উচ্চ মাধ্যমিক পাশ নন, তাঁদের তা পাশ করে নিতে হবে। আর যাঁরা উচ্চ মাধ্যমিকে ৫০ শতাংশের কম নম্বর পেয়েছেন, তাঁদের নতুন করে পরীক্ষা দিয়ে ন্যূনতম ৫০ শতাংশ নম্বর পেতে হবে। কেন্দ্রের এই নতুন নিয়মে কর্মরত প্রাথমিক শিক্ষক-শিক্ষিকারা বিপাকে পড়েছেন। কী ভাবে তাঁদের প্রশিক্ষণ হবে, তা-ও এখনও পর্যন্ত স্পষ্ট নয়। উচ্চ মাধ্যমিক দিয়ে ৫০ শতাংশ নম্বর না-পেলে কর্মরত শিক্ষকদের ভবিষ্যৎ কী হবে, তা নিয়েও তাঁদের মধ্যে উদ্বেগ রয়েছে। সিব্বল অবশ্য এই পরিস্থিতির দায় পুরোপুরি চাপিয়ে দিয়েছেন সিপিএমের উপরেই। |