ম্যাচ রিপোর্টের শুরুতেই জুড়ে দেওয়া যাক একটা পরিসংখ্যান। ছোট্ট কিন্তু অর্থবহ!
এ বছর প্রিমিয়ার লিগে চার ম্যাচে প্রয়াগ ইউনাইটেড গোল করেছে ন’টা। যার মধ্যে আটটাই র্যান্টি মার্টিন্স এবং কার্লোস হার্নান্ডেজের পা থেকে। র্যান্টি পাঁচ, কার্লোস তিন। প্রয়াগের সাফল্যে এই নাইজিরিয়ান-কোস্টারিকান জুটির অবদান বোঝা যাচ্ছে। কয়েকটা সংখ্যা থেকে যা বোঝা যাচ্ছে না, তা হল এই দুই বিদেশির মধ্যে বোঝাপড়া। যা ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে।
ফেড কাপের মঞ্চে নামার আগে বুধবারের ম্যাচটাই ছিল সঞ্জয় সেনের দলের শেষ রিহার্সাল। সব বিভাগে যে প্রয়াগ ফুটবলাররা লেটার মার্কস পাচ্ছেন তা নয়। বরং বেগুনি জার্সিতে প্রথমবার মাঠে নামা গৌরমাঙ্গীর সঙ্গে বেলো রজাকের এক-দুই মিলছে না। মাঝমাঠও অতটা জমাট নয়। ডেনসন মোহনবাগানে। লালকমল এ দিন রিজার্ভ বেঞ্চে। ফলে জমকটা আরও কম। |
গোলের পথে র্যান্টি। বুধবার যুবভারতীতে। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস |
তবু বিপক্ষের ভয় পাওয়ার যথেষ্ট কারণ থাকছে। কারণ, র্যান্টির গোল চেনার ক্ষমতা। কারণ, বিশ্বকাপার কার্লোসের অসামান্য পাসিং এবং দূরপাল্লার শটে দক্ষতা। বক্সের বাইরে কার্লোসের পায়ে বল পৌঁছলেই যুবভারতীর গ্যালারিতে সবাই নড়েচড়ে বসছে। এই বুঝি জাল ছিড়ে দেবে শট! এ দিনের গোলটাও এল ও রকমই শটে। র্যান্টির গোল আবার একজন নিখুঁত স্ট্রাইকারের। মাঝমাঠ থেকে তুলুঙ্গার বাড়ানো উঁচু বল ধরা। বল নাগালের বাইরে যাওয়ার মুহূর্তে ছোট্ট টাচে গোলকিপারকে ডজ। তার পর স্রেফ ফাঁকা গোল পর্যন্ত বলটা ঠেলে নিয়ে যাওয়া। এ ছাড়া র্যান্টির একটা জোরালো শট লাগে পোস্টে। একই রকম খারাপ ভাগ্য ছিল কার্লোস এবং মিডিও আসিফেরও। লাল-হলুদ কোচ ট্রেভর মর্গ্যান যে ভারতে র্যান্টিকেই এক নম্বর বলছেন, সে কথা শুনেছেন নাইজেরীয় স্ট্রাইকারও। বলছিলেন, “বড় কোচের মুখে প্রশংসা শুনতে তো ভাল লাগেই।” র্যান্টি মেনে নেন, এই মরসুমে ইস্টবেঙ্গলে খেলার ইচ্ছে তাঁর ছিল।
২৫ মিনিটে র্যান্টিদের দলের প্রথম গোলটা ছিল রফিকের দুর্দান্ত শটে। বারবারই কার্লোস নিখুঁত পাস বাড়িয়েছেন সামনে। শেষ দিকে পেনাল্টি থেকে ব্যবধান কমান ওয়াহিদ। গৌরমাঙ্গী বল বাইরে পাঠাতে গিয়ে ওয়াহিদের পায়ে ফেলেন। পিয়ারলেসের বিদেশি স্ট্রাইকার বল নিয়ে সুব্রত পালকে কাটানোর সময় তাঁকে ফেলেন জাতীয় দলের গোলকিপার। তাতেই পেনাল্টি।
সুব্রত-গৌরমাঙ্গীর মতোই প্রয়াগ জার্সিতে অভিষেক হল লেস্টার ফার্নান্ডেজ ও জাকির মুন্ডাম্পারা-র। সব মিলিয়ে ফেড কাপের আগে তূণের সব অস্ত্রে শান দেওয়া সম্পূর্ণ দেশের সবচেয়ে তারকাখচিত ফুটবল দলের। |