সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের পর বাংলা থেকে আর কেউ তাঁর মতো জাতীয় আলোচনার বিষয়বস্তু হয়ে ওঠেননি। সৌরভের পরে যে দুই বাঙালি দেশের হয়ে বিশ্বকাপে ফের প্রতিনিধিত্ব করতে যাচ্ছেন তার মধ্যে তিনি একজন শুধু নন, প্রচারের স্পটলাইট থেকে শুরু করে প্রত্যাশার উর্ধ্বমুখী সেনসেক্সের বেশিটাই তাঁকে ঘিরে। তাঁর ব্যাটকে ঘিরে।
এবং মনোজ তিওয়ারি ঠিক করে ফেলেছেন, শ্রীলঙ্কায় আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বোলারদের জন্য তাঁর দাওয়াই কী হবে। আজ পর্যন্ত যে শট তাঁকে কেউ মারতে দেখেনি, বিশ্বকাপে বাংলা অধিনায়কের ব্যাট থেকে সেটাই বেরোতে চলেছে। দাওয়াইয়ের নাম ‘দিলস্কুপ’!
“টি-টোয়েন্টিতে রোজই আপনাকে নতুন কিছু না কিছু বার করতে হবে। আর বিশ্বকাপ হলে তো কথাই নেই। আমি সুইচ হিট মেরেছি। কিন্তু দিলস্কুপ কখনও নয়। ফাইন লেগের উপর দিয়ে পেসারকে ও ভাবে তুলে মারাটা খুব সহজ নয়। নেটে তার জন্য আমাকে খাটতে হয়েছে দিনের পর দিন। অবশ্য এখন আয়ত্তে চলে এসেছে। বিশ্বকাপে পেসারদের জন্য আমার নতুন টোটকা ওটাই হবে,” আনন্দবাজারকে বললেন মনোজ। |
কলম্বোর টিম হোটেলে ঢুকছেন মনোজ। ছবি: এএফপি |
বুধবার বাকি টিমের সঙ্গে মনোজও শ্রীলঙ্কা রওনা হয়ে গেলেন। সইদ আজমল থেকে লাসিথ মালিঙ্গাসবার জন্য আলাদা আলাদা স্ট্র্যাটেজি ঠিক করাও শেষ। হালফিলে অস্ট্রেলিয়াকে স্পিনের বিষে রীতিমতো কাঁদিয়ে ছেড়েছেন আজমল। পাকিস্তান ভারতের গ্রুপে নেই বটে, কিন্তু বিশ্বকাপের আগে প্রস্তুতি ম্যাচেই আজমলকে সামলাতে হবে ভারতীয়দের। “ওকে ভয় পেলেই আর কিছু করা যাবে না। আজমল বড় স্পিনার ঠিক কথা। কিন্তু ওকে নিয়ে মিডিয়া হাইপটাও বাড়াবাড়ি রকমের হচ্ছে। দুসরা, তিসরা, কত কিছুই তো শুনছি,” বলে সামান্য একটু দম নেওয়া। তার পর সংযোজন, “একটা কথা বলব। আজমল হোক বা মালিঙ্গাই হোক, আমি কাউকে ভয় পাই না। আজমল যত বড় স্পিনারই হোক না কেন, একটা নির্দিষ্ট দিনে ও কেমন বল করছে তার উপরই সব নির্ভর করবে। দরকারে ওকে স্টেপ আউট করে ফেলতে দু’বার ভাবব না।” বাংলা অধিনায়কের মনে হচ্ছে, পাকিস্তানের চেয়েও বিশ্বকাপে বড় কাঁটা হতে পারে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তার পর একে একে আসবে অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড।
কিন্তু তাঁর টিমে থাকার সম্ভাবনা কতটা? যুবরাজের প্রত্যাবর্তনে বিশ্বকাপে ধোনির দলের প্রথম এগারোয় জায়গা পাওয়াটা কি একটু কঠিন হয়ে গেল না? বাংলা ক্রিকেটের ‘নতুন আইকন’ মানছেন, কঠিন হয়ে গেল। কিন্তু একই সঙ্গে এটাও জানিয়ে দিচ্ছেন যে, বড় স্বপ্নের পিছনে ছোটাও থামাবেন না। “কেন করব? আমি জানি যুবরাজ খেললে ও-ই অটোমেটিক চয়েস। আমি নই। কিন্তু তাই বলে যদি ভাবি, কোনও সম্ভাবনাই আমার নেই তা হলে তো কিছুই করা যাবে না। বরং আমি রোজ রাতে ঘুমোতে যাব, পরের দিন মাঠে নামব ভেবে। বিশ্বকাপে সেরা টিমটাই তো মাঠে নামবে। আর দাদির পর এই যে আমি আর দিন্দা বাংলা থেকে বিশ্বকাপে যাচ্ছি, সেই পাওনাটাও বা কম কী?” |