চিপকে ভারত-নিউজিল্যান্ড টি-টোয়েন্টি ম্যাচটা দেখতে দেখতে একটা অদ্ভুত অনুভূতি হচ্ছিল। কত দিন বাদে যুবরাজ সিংহকে আবার ক্রিকেট মাঠে দেখলাম। জীবনের কঠিনতম যুদ্ধে জিতে ছেলেটা আবার ফিরে এল। কোনও সন্দেহ নেই যুবরাজের কাছে এই প্রত্যাবর্তনটা অত্যন্ত আবেগময় একটা ঘটনা ছিল। মঙ্গলবার চিপকে যুবরাজ যে কাণ্ডটা ঘটাল, তা তো শুধু ক্রিকেটের গণ্ডিতে আটকে থাকবে না, সেটা জীবনযুদ্ধে উত্তীর্ণ এক যোদ্ধার কাহিনিও।
কী রকম দেখলাম যুবরাজকে? ওকে দেখে মনে হল শারীরিক এবং মানসিক ভাবে একেবারে ঠিক জায়গায় আছে। প্রথম দিকে ওর মধ্যে একটু জড়তা ছিল ঠিকই, কিন্তু যত ম্যাচ এগিয়েছে, সেই জড়তা কেটে গিয়েছে। সব দিক দিয়ে একেবারে নিখুঁত লেগেছে যুবরাজকে।
ফিল্ডিংটা ভাল করেছে, স্বাভাবিক ছন্দে বল করেছে আর পরিস্থিতি অনুযায়ী ব্যাটিং। সেই শক্তি, সেই ব্যাট সুইং, সেই ছয় মারার দক্ষতাসবই দেখা যাচ্ছিল যুবির ওই ইনিংসে। |
অনেকের এখনও প্রশ্ন, যুবির শরীর টানা ম্যাচ খেলার ধকলটা নিতে পারবে কি না। বিশেষ করে বিশ্বকাপের মতো টুর্নামেন্টে। আমার কিন্তু মনে হচ্ছে, ওর শারীরিক কন্ডিশন আরও ভাল জায়গায় পৌঁছবে। এক জন ক্রীড়াবিদের শরীরটা এমন ভাবে তৈরি হয়, যে পরিচিত পরিবেশ পেলেই উন্নতি করতে থাকে। যুবরাজের বেলাতেও মনে হচ্ছে তাই হবে।
যুবি-আবেগের মধ্যেই অবশ্য টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নামার আগে শেষ ম্যাচে হেরে গেল ভারত। অনেকেই এখন বলতে পারেন, টস জিতে ফিল্ডিং নিয়ে ভুল করেছিল ধোনি। আমি কিন্তু বলব, ঠিক সিদ্ধান্তই নিয়েছিল ও। বিশেষ করে যখন ওর দলে আট জন ব্যাটসম্যান ছিল। তা ছাড়া চেন্নাইয়ের পিচ টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের পক্ষে আদর্শ। ভারত ভালই রান তাড়া করছিল। কিন্তু ম্যাচটা থেকে হারিয়ে যায় ১৪ থেকে ১৭ ওভারের মধ্যে। ওই চার ওভারে ওঠে মাত্র ১৭ রান। ধোনি এমনিতে এই ধরনের ক্রিকেটের জন্য একেবারে আদর্শ ফিনিশার। কিন্তু মঙ্গলবারটা ওর জন্য ভাল গেল না। নিউজিল্যান্ডও ওই সময় বুদ্ধি করে গতি হেরফের করে বোলিং করল। ব্যাটসম্যানদের পক্ষে দ্রুত রান তোলাটা বেশ কঠিন হয়ে গিয়েছিল।
নিউজিল্যান্ড অবশ্য আত্মবিশ্বাস বাড়িয়েই বিশ্বকাপ খেলতে যাচ্ছে। বিশেষ করে ব্রেন্ডন ম্যাকালাম। টেস্ট সিরিজের ব্যর্থতা টি-টোয়েন্টিতে পুষিয়ে দিল ও। ভারতীয় বোলাররা প্রথম দিকে ভালই বল করছিল। কিন্তু ম্যাকালামের তাণ্ডবের মুখে খেই হারিয়ে ফেলে। তবে ভারত আট জন ব্যাটসম্যান না খেলিয়ে এক জন বাড়তি বোলার খেলাতে পারত। বিশেষ করে অলরাউন্ডার হিসাবে ইরফান পাঠান যখন দারুণ ফর্মে রয়েছে। আর এক জন স্পিনার খেললে ধোনির টিমের বৈচিত্রটা আরও ভাল হত। |