যশোহর রোড
বিমানবন্দরের পাশেই অপেক্ষা খন্দে ভরা পথের
যেন একেবারে গ্রাম ও শহরের সহাবস্থান। এক দিকে বিমানবন্দরের নির্মীয়মাণ ঝাঁ-চকচকে নতুন টার্মিনাল ভবন, আর তার পাশেই ভাঙাচোরা রাস্তাটার সঙ্গে গ্রামের মেঠো খন্দপথের তেমন ফারাক নেই। আর ভাঙাচোরা, গর্তে ভরা সেই রাস্তা ধরে এগোতে গিয়েই তুমুল যানজটে থমকে যাচ্ছে গাড়ি।
রাস্তার নাম যশোহর রোড। রাস্তাটি জাতীয় সড়ক। বিমানবন্দরের এক নম্বর গেট থেকে একটু এগোলেই দু’নম্বর গেট। খন্দপথের শুরু সেখান থেকেই। ভাঙা রাস্তায় চলতে গিয়ে গাড়ি খারাপ হয়ে যাচ্ছে। আবার বেহাল রাস্তার কারণে যানজট এতটাই বেশি যে, এক দিকে ভিআইপি রোডে তেঘরিয়া হয়ে বাগুইআটি পর্যন্ত, অন্য দিকে বিরাটি মোড় পর্যন্ত সার দিয়ে গাড়ি দাঁড়িয়ে পড়ছে। অভিযোগ, সকাল-সন্ধ্যায় অফিসের ব্যস্ত সময়ে রোজকার যানজটে এক দিকে যেমন সমস্যায় পড়ছেন নিত্যযাত্রীরা, তেমনই বিমানবন্দরগামী যাত্রীরাও সময়ে গন্তব্যে পৌঁছতে পারছেন না। সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিল্লি সফরে গিয়ে রাজ্যের জাতীয় সড়কগুলির বেহাল দশা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের সঙ্গে আলোচনা করেন।

গর্তে ভরা যশোহর রোড। এই পথ ধরেই নিত্য যাতায়াত করেন উত্তর শহরতলির এক বিরাট অংশের বাসিন্দারা।
এর পাশাপাশি, রাজ্যের সড়কগুলির খানাখন্দ নিয়েও উদ্বিগ্ন মুখ্যমন্ত্রী। পূর্ত দফতর, কেএমডিএ, পুরসভা যে সব রাস্তা রক্ষণাবেক্ষণ করে, সেগুলি পুজোর আগেই মেরামত করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সংশ্লিষ্ট দফতরগুলিকে তাঁর নির্দেশের কথা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
বর্ষাকালে যশোহর রোডের খানাখন্দ বেরিয়ে পড়ার ঘটনা অবশ্য নতুন নয়। যেটুকু তাপ্পি মেরে সারানো হয়, তা ফের কিছু দিনের মধ্যেই আগের অবস্থায় ফিরে আসে। বিশেষজ্ঞেরা জানিয়েছেন, যে রাস্তার আশপাশের নিকাশি ব্যবস্থা ভাল নয় কিংবা যে রাস্তায় জল জমে, সেই রাস্তা বেশি ভাঙে। কারণ, বিটুমিনের ভিতরে জল চুঁইয়ে ঢুকে রাস্তা ভেঙে যায়। বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, বর্ষার আগে থেকেই ব্যবস্থা নেওয়া হলে কিছুটা হলেও রাস্তা ভাল অবস্থায় থাকে।
কী সেই ব্যবস্থা?
ইঞ্জিনিয়ারদের মতে, সাধারণত বর্ষার আগে শহরের প্রধান প্রধান রাস্তাগুলোয় ‘কন্ডিশন সার্ভে’ করা দরকার। ওই সমীক্ষায় রাস্তার রেটিং করে প্রয়োজনীয় মেরামতি করা জরুরি।

জোড়াতাপ্পি দিয়ে গর্ত ঢাকার চেষ্টা।
যশোহর রোডের মতো গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় ‘কন্ডিশন সার্ভে’ যে জরুরি, তা এক কথায় মেনে নিয়েছেন বিশেষজ্ঞেরা। বিমানবন্দরের দু’নম্বর গেট থেকে বিরাটি মোড় পর্যন্ত অংশে এক-দেড় ফুটের বড় বড় গর্ত। সকালে ও বিকেলে ওই রাস্তায় এতটাই ধুলো ওড়ে যে, একটু দূরের গাড়িও দেখা যায় না বলে অভিযোগ। দিন কয়েক আগে ওই রাস্তার হাল দেখতে এসে বিধাননগর কমিশনারেটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) সমরেন্দ্রনাথ দাস নিজেই রাস্তা মেরামতির কাজে হাত লাগিয়েছিলেন। তাঁর উদ্যোগে কয়েকটি গতর্র্ মাটি দিয়ে বোজানো হয়।
কিন্তু যাঁরা এই রাস্তার মেরামতির দায়িত্বে, কী বলছেন তাঁরা?
যশোহর রোডের এই অংশের মেরামতির ভার ‘ন্যাশনাল হাইওয়ে অথরিটি অফ ইন্ডিয়া’র কৃষ্ণনগর শাখার। দফতরের এক প্রোজেক্ট ম্যানেজার বলেন, “ওই রাস্তার অবস্থা সত্যিই খারাপ। আমরা মেরামতির কাজ শুরু করেছিলাম। প্রথম পর্যায়ের কাজ শেষ হয়েছিল। কিন্তু পরের পর্যায়ের কাজ শুরু হওয়ার আগেই বর্ষা এসে গেল। বৃষ্টি একটু কমলেই ফের কাজে হাত দেওয়া হবে।” তবে প্রথম পর্যায়ের কাজে কেন দেরিতে হাত দেওয়া হল, তার কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি ‘ন্যাশনাল হাইওয়ে অথরিটি অফ ইন্ডিয়া’র আধিকারিকেরা।

ছবি: শৌভিক দে
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.