‘টেন্ডার’ বিলিকে কেন্দ্র করে বুধবার তৃণমূলের দু’টি গোষ্ঠীর মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটল নানুরের থুপসড়া পঞ্চায়েতে। একে অন্যের বিরুদ্ধে ভাঙচুর এবং কর্মীদের মারধরের আভিযোগ তুলেছে।
২০০৩ সালে পঞ্চায়েতে এসেছিল তৃণমূল-বিজেপি জোট। বছর খানেকের মাথায় উপপ্রধান-সহ ১৩ জন দলীয় সদস্য সিপিএমে যোগ দেওয়ায় পঞ্চায়েতে নিয়ন্ত্রণ হারাতে হয় তৃণমূল-বিজেপি জোটকে। ২০০৮ সালে নির্বাচনে সিপিএম একক ভাবে ক্ষমতা দখল করলেও তা বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। মাস কয়েক পরেই প্রধান-সহ ৮ সদস্য তৃণমূলে যোগ দেয়। ঘন ঘন রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের জন্য প্রাণ হারাতে হয়েছে বহু সিপিএম ও তৃণমূল নেতা-কর্মীকে। থমকে যায় পঞ্চায়েতের উন্নয়নের কাজও। তাতেও বিবাদ মেটেনি। পঞ্চায়েতের ক্ষমতা দখলকে কেন্দ্র করে এবার তৃণমূল বিধায়ক গদাধর হাজরা এবং দলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত আব্দুল কেরিম খানের গোষ্ঠীর বিবাদ লেগেই রয়েছে বলে অভিযোগ।
বুধবার দুপুরে মোরামের টেন্ডার বিলিকে কেন্দ্র করে সেই বিরোধ ফের দেখা দেয়। পঞ্চায়েত সংলগ্ন এলাকায় দু’টি গোষ্ঠীর মধ্যে গোলাগুলি চলে। পরিস্থতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশকে শূণ্যে গুলি চালাতে হয় বলে দাবি এলাকাবাসীর। জেলা পুলিশ সুপার হৃষিকেষ মিনা বলেন, “ওই পঞ্চায়েতে একটা গণ্ডগোল হয়েছে। উত্তেজনা থাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” কেরিম খানের দাবি, “আর্থিক বোঝাপড়ার ভিত্তিতে নিজের পছন্দের ঠিকাদারকে মোরামের বরাত পাইয়ে দেওয়ার জন্য বিধায়ক গদাধর হাজরার মদতে সিপিএম আশ্রিত দুষ্কৃতীরা পঞ্চায়েতে ভাঙচুর চালিয়েছে এবং এক পঞ্চায়েত কর্মীকে মারধর করেছে।” গদাধর হাজরার পাল্টা অভিযোগ, “কেরিম খান অশ্রিত সিপিএম দুষ্কৃতীদের টাকা আদায়ের জন্য ওই এলাকায় কোনও ঠিকাদার কাজ করতে পাচ্ছেন না। বিধায়ক হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পরে উন্নয়ন করতে উদ্যোগী হতেই মিথ্যা অভিযোগ করছে ওরা।”
তৃণমূলের ব্লক কার্যকরি সভাপতি অশোক ঘোষ বলেন, “কেরিম খানের মদতে সিপিএম আশ্রিত দুষ্কৃতীরা তফসিলি আদিবাসী সেলের ব্লক সভাপতি ভরত মাঝির বাড়িতে ভাঙচুর এবং লুঠপাট চালায়। খুজুটি পাড়ায় দুই তৃণমূল কর্মীকে মারধর করেছে ওরা।” অভিযোগ অস্বীকার করেছেন কেরিম খান। সিপিএমের নানুর জোনাল কমিটির সম্পাদক হাসিবুর রহমান বলেন, “তৃণমূলেরই দু’টি গোষ্ঠীর বিবাদের জেরেই এই ঘটনা ঘটেছে।” |