বিশ্বকর্মা পুজোর চাঁদা আদায়কে কেন্দ্র করে দু’দল ছাত্রের মধ্যে সংঘর্ষ বাধল আসানসোলের একটি বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে। পরিস্থিতি সামাল দিতে কলেজে র্যাফ নামানো হয়। ঘটনাস্থলে যান কমিশনারেটের এডিসিপি (সেন্ট্রাল) সুরেশ কুমার। তার জেরে অনির্দিষ্ট কালের জন্য কলেজে পঠনপাঠন বন্ধ রাখার বিজ্ঞপ্তি দেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। বুধবার বিকেলের মধ্যে কলেজের পুরুষ ও মহিলা হস্টেল খালি করে দেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছেন কর্তৃপক্ষ।
ঘটনার সূত্রপাত মঙ্গলবার বিকেলে। এ দিন কলেজের একদল আবাসিক ছাত্র বিশ্বকর্মা পুজোর চাঁদা তুলছিলেন। তাঁরা কয়েক জন অনাবাসিক ছাত্রের কাছ থেকে অনেক বেশি টাকা চাঁদা চান বলে অভিযোগ। ওই অনাবাসিক ছাত্রেরা চাঁদা দিতে অস্বীকার করেন। তখনই ওই দু’দল ছাত্রের মধ্যে বচসা বাধে। তা থেকে শুরু হয় মারামারি। কলেজ কর্তৃপক্ষ বিষয়টি মেটানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যাওয়ায় তাঁরা পুলিশে খবর দেন। রাত ৮টা নাগাদ তখনকার মতো পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হয়। |
পুলিশের তাড়ায় ছত্রভঙ্গ ছাত্রেরা। বুধবার শৈলেন সরকারের তোলা ছবি। |
ফের বুধবার সকাল থেকে অগ্নিগর্ভ হতে শুরু করে কলেজ। অনাবাসিক ছাত্রেরা ওই ঘটনার প্রতিবাদে বুধবার ক্লাস বয়কটের ডাক দেন। আবাসিক ছাত্রেরা পঠনপাঠন চালু রাখতে চাইলে ফের মারামারি বেঁধে যায়। দুপুর ১টা পর্যন্ত দফায় দফায় মারামারি হয়।
বুধবার কলেজে গিয়ে দেখা যায়, দু’দল ছাত্র একে অপরের দিকে তেড়ে যাচ্ছে। কলেজ কর্তৃপক্ষ পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমসিম খাচ্ছেন। খবর পেয়ে কলেজে আসে আসানসোল উত্তর থানার পুলিশ। তাতে পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত র্যাফ নামানো হয়। ঘটনাস্থলে যান আসানসোল-দুর্গাপুর কমিশনারেটের এডিসিপি (সেন্ট্রাল) সুরেশ কুমার। তিনি বৈঠক করেন কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে। সুরেশ কুমার বলেন, “কলেজের দু’দল ছাত্র বচসায় জড়িয়ে পড়েছিল। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি আয়ত্তে আনে।”
পরিস্থিতি সামাল দিতে মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার দুপুর পর্যন্ত দফায় দফায় বৈঠকে করেন কলেজের শৃঙ্খলা রক্ষা কমিটির সদস্যেরা। এ দিন দুপুরে বৈঠকের শেষে কলেজের অধ্যক্ষ পিকে প্রসাদ বলেন, “কলেজের পরিস্থিতি শান্ত করতে আমরা অনির্দিষ্ট কালের জন্য কলেজের পঠনপাঠন বন্ধ করে দিয়েছি। বুধবার বিকেলের মধ্যে আবাসিক ছাত্রছাত্রীদের হস্টেল খালি করতে বলা হয়েছে।” কলেজের উপদেষ্টা অতীন চৌধুরী জানান, ছাত্রেরা কেন বচসা ও মারামারিতে জড়িয়ে পড়েন তা জানতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। দোষী ছাত্রদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। |
আসানসোলে একটি বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে গোলমাল। কলেজ বন্ধের নোটিস। |
কলেজ কর্তৃপক্ষ বিজ্ঞপ্তি জারি করার পরেই অনাবাসিক ছাত্রছাত্রীরা কলেজ ছেড়ে বেড়িয়ে যান। বিকেলের দিকে আবাসিক ছাত্রছাত্রীরাও হস্টেল খালি করতে শুরু করেন। কলেজ কর্তৃপক্ষের অনুরোধে কলেজ চত্বরে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। |