|
|
|
|
আমতার বিএমওএইচকে বদলির সুপারিশ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • আমতা ও চুঁচুড়া |
হাসপাতালে নিয়মিত না থাকা এবং স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশ ঠিকমতো পালন না করার অভিযোগে হাওড়ার আমতা গ্রামীণ হাসপাতালের সুপার তথা আমতা-১ ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক শৌভিক সরকারকে অন্যত্র বদলি করে দেওয়ার সুপারিশ করলেন বিধানসভার স্বাস্থ্য সংক্রান্ত স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্যরা। একই অভিযোগে ওই হাসপাতালের স্ত্রী-রোগ বিশেষজ্ঞ দেবশঙ্কর মান্নারও বদলির সুপারিশ করা হয়েছে।
কমিটির অন্যতম সদস্য তথা উলুবেড়িয়া উত্তর কেন্দ্রের বিধায়ক নির্মল মাজির দাবি, শনিবার রাতেই বিএমওএইচের বদলি সংক্রান্ত সুপারিশ রাজ্য সরকার মেনে নিয়েছে। একই সঙ্গে তিনি বলেন, “দেবশঙ্করবাবুর বদলির সুপারিশ এখনই কার্যকর করা হচ্ছে না। তাঁকে পর্যবেক্ষণে রাখা হচ্ছে।”
শনিবার চেয়ারম্যান রুদ্রনাথ ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের ওই কমিটি হাসপাতাল পরিদর্শনে এসে বিভিন্ন বিভাগ ঘুরে দেখেন। রোগীদের সঙ্গে তাঁরা কথা বলেন। রোগী এবং তাঁদের আত্মীয়-স্বজনেরা সুপার এবং দেবশঙ্করবাবুর বিরুদ্ধে ওই অভিযোগ তোলায় দু’জনকেই ধমক দেন কমিটির সদস্যেরা। তাঁদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সুপার এবং দেবশঙ্করবাবু।
পরিদর্শন চলাকালীনই স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্যদের শৌভিকবাবু জানান, তাঁকে দিন পনেরো আগেই বদলি করে দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, “আমার বদলে যে চিকিৎসক আসবেন, তিনি জেলা স্বাস্থ্য দফতরে ইতিমধ্যেই রিপোর্ট করেছেন। তবে, আমাকে কোথায় বদলি করা হয়েছে তা এখনও জানি না।” জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক স্বাতী দত্ত বলেন, “আমতা-১ ব্লকের বিএমওএইচ-কে কয়েক দিন আগেই বদলির চিঠি দেওয়া হয়েছে।” |
|
—নিজস্ব চিত্র। |
মাস দুয়েক আগে নির্মল মাজির উদ্যোগে শয্যায় পাতার জন্য স্বাস্থ্য দফতর ৩০টি গদি পাঠিয়েছিল। কিন্তু মাত্র ১৬টি গদি পাতা রয়েছে দেখে কমিটির সদস্যেরা বাকিগুলির ব্যাপারে জানতে চান। বিএমওএইচ তা রেখে দেওয়া হয়েছে জানালে সেগুলি গুণে দেখা হয়। হিসাব অবশ্য মিলে যায়। সব গদি না-পাতার জন্য বিএমওএইচ-কে বকেন কমিটির সদস্যেরা। কয়েক জন রোগী তাঁদের কাছে অভিযোগে জানান, হাসপাতালে ওষুধ থাকা সত্ত্বেও বাইরে থেকে তা কিনতে হচ্ছে।
এ কথায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন কমিটি সদস্যরা। রুদ্রনাথবাবু এবং নির্মলবাবু ছাড়াও কমিটিতে ছিলেন বিধায়ক শশী পাঁজা, সুনীল মণ্ডল ও সুদীপ্ত রায়।
কমিটির কাছে ‘সিজার’ না হওয়ার ব্যাপারে অ্যানাস্থেটিস্ট ও শল্য চিকিৎসক না থাকা এবং পরিকাঠামোগত সমস্যার কথা তোলেন দেবশঙ্করবাবু। এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হবে বলে প্রতিশ্রুতি দেন কমিটির সদস্যেরা। রুদ্রনাথবাবু বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী গ্রামীণ হাসপাতাল এবং স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলির পরিষেবার মান বাড়িয়ে তা সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে চেষ্টা করছেন। কিন্তু তা বানচাল করে দিচ্ছেন এক শ্রেণির চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী। এখানকার বিএমওএইচ এবং স্ত্রী-রোগ বিশেষজ্ঞকে অবিলম্বে বদলির জন্য রাজ্য সরকারের কাছে সুপারিশ করা হবে। কয়েক জন চতুর্থ শ্রেণির স্বাস্থ্যকর্মীর বিরুদ্ধে তদন্তের জন্য সিএমওএইচকে নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে।” এই হাসপাতালকে স্টেট জেনারেলের মর্যাদা দেওয়ার জন্য তাঁরা সুপারিশ করবেন বলেও রুদ্রনাথবাবু জানান।
ওই দিন চুঁচুড়া ইমামবাড়া সদর হাসপাতালেও যান কমিটির সদস্যেরা। রোগীর আত্মীয়দের সঙ্গে তাঁরা কথা বলেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে শয্যা বাড়ানো এবং অবিলম্বে বন্ধ থাকা ‘ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট’ চালু করার প্রস্তাব দেন।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ চিকিৎসকের অভাবের কথা জানালে তা মেটানোর আশ্বাস দেওয়া হয়। কমিটির তরফে চিকিৎসকদের উদ্দেশ্যে জানানো হয়, হাসপাতালের পরিষেবা ব্যাহত করে কেউ বাইরে রোগী দেখতে পারবেন না। হাসপাতাল লাগোয়া জায়গায় তিন তলা ভবন তৈরি করে শয্যা বাড়ানোর প্রস্তাব দেওয়া হয় কমিটির কাছে। ‘লেবার রুম’ এবং ‘প্রসূতি ওয়ার্ড’-এর বেহাল অবস্থা দেখে তা সারানোর নির্দেশ দেয় কমিটি। |
|
|
|
|
|