দম্পতিকে বেঁধে অত্যাচার
প্রথম পক্ষের স্ত্রী-সহ চার জন গ্রেফতার
স্বামী ও তাঁর দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রীকে শিকলে বেঁধে মহিলারা চুল কেটে, গালে ও পিঠে গরম তেল ঢেলে, খুন্তির ছেঁকা দেওয়ার অভিযোগে প্রথম পক্ষের স্ত্রী সহ ৪ জনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। রবিবার ঘটনাটি ঘটেছে ডুয়ার্সের ফালাকাটা থানা এলাকার চুয়াখোলা গ্রামে। পুলিশ জানায়, জখম দম্পতির নাম লিটন দাস ও মুকুলবালা। তাঁদের দুজনকে ফালাকাটা হাসপাতালে চিকিৎসা করানো হয়েছে। গরম ছেঁকায় মুকুলবালার গাল, পিঠের মাংস অনেকটা খসে পড়েছে বলে হাসপাতাল সূত্রের খবর।
জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার অমিত জাভালগি বলেন, “গ্রাম থেকে খবর পেয়ে ঠিক সময়ে পুলিশ সেখানে না পৌঁছলে ওই মহিলার উপর আরও বড় ধরণের অঘটন ঘটত। ছেলের এক দাদা পলাতক। তাঁকে খোঁজা হচ্ছে। ধৃতদের বিরুদ্ধে হত্যার চেষ্টার অভিযোগে মামলা করা হয়েছে।” পুলিশ জানায়, চুয়াখোলা গ্রামের পেশায় কাঠ মিশ্রী লিটন দাসের সঙ্গে আট বছর আগে মাথাভাঙার বাসন্তী দাসের বিয়ে হয়। তাঁদের ছয় বছরের ছেলে রয়েছে। দেড় বছর আগে আগে দু’মাইল গ্রামে বিবাহ-বিচ্ছিন্না মুকুলবালা দাসের প্রেমে পড়েন লিটন। তাঁরা বিয়েও করেন। বছরখানেক ধরে দ্বিতীয় স্ত্রীর সঙ্গে ভাড়া বাড়িতে থাকছিলেন লিটন। চুড়াখোলা গ্রামে তার প্রথম পক্ষের স্ত্রী তার এক মাত্র সন্তান নিয়ে শ্বশুরবাড়িতে থাকতেন। ছমাস আগে দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রীকে বাড়িতে নিয়ে যান লিটন। তবে সতীনের সঙ্গে মনোমালিন্যের কারণে ফের মুকুলবালাকে নিয়ে পাশের গ্রামের ভাড়া বাড়িতে থাকতেন তিনি। বাড়ি না থাকায় অশান্তির জেরে মাস তিনেক আগে লিটনের প্রথম পক্ষের স্ত্রী মাথাভাঙায় বাপের বাড়ি চলে যান।
মুকুলবালা দাস বাসন্তী দাস
তিন দিন আগে তার শ্বশুর হরেন্দ্র দাস মাথাভাঙা গিয়ে পুত্রবধূকে কথা দেন, যে করে হোক ছেলেকে প্রথম স্ত্রীর কাছে ফিরিয়ে দেবেন। সেই মতো এ দিন হরেন্দ্রবাবু ও তাঁর বড় ছেলে এবং মেয়ে-জামাই ভাড়া বাড়িতে গিয়ে লিটন ও তার দ্বিতীয় স্ত্রীকে জোর করে নিজেদের বাড়িতে নিয়ে যান। সকাল ৮টা থেকে দুজনকে শিকলে বেঁধে শুরু হয় অত্যাচার। মুকুলবালা দেবীর অভিযোগ, “শ্বশুরবাড়িতে আমাদের তুলে নিয়ে গিয়ে আমার চুল প্রথমে কেটে দেন সতীন-শ্বশুর-শাশুড়ি। গরম তেলে খুন্তি ডুবিয়ে আমার মুখে ছ্যাঁকা দেন ওঁরা। চিৎকার করলেও কেউ আমাকে বাঁচাতে আসেনি। সেই সময় আমাকে জ্বালিয়ে খুনের হুমকি দেয়। পুলিশ ঠিক সময় না এলে মরে যেতাম।”
বাড়ির লোকজন যে ভাবে অত্যাচার চালিয়েছে তাতে স্তম্ভিত লিটনবাবু। তিনি বলেন, “মুকুলবালাকে আমার ভাল লেগেছিল বলে বিয়ে করেছি। বাড়ির কাউকে বিরক্ত করিনি। দূরে থাকতাম। আমাদের তুলে এনে এমন ভাবে মারার চেষ্টা হবে তা ভাবিনি।” লিটনবাবুর প্রথম পক্ষের স্ত্রী বাসন্তীদেবী গ্রেফতার হয়েছেন। তিনি বলেন,“আমাকে ছেড়ে যে ভাবে স্বামী অন্য মহিলার সঙ্গে থাকত তা মানতে পারিনি। সকলের কথা শুনে গরম তেলে খুন্তি ডুবিয়ে সতীনের গালে ছ্যাঁকা দিয়েছি। আর কোনও অত্যাচার করিনি।”
ফালাকাটা দুই নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের ওই গ্রামের পঞ্চায়েত সদস্য এলাহি বকস আহমেদ ঘটনার কথা শুনেছেন। তিনি বলেন, “ঘটনার সময়ে বাড়ির বাইরে ছিলাম। দীর্ঘ দিন ধরে ওই পরিবারে অশান্তি চলছিল। তা বলে এমন ভয়ঙ্কর অত্যাচার হবে তা ভাবিনি।”

ছবি: রাজকুমার মোদক।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.