|
|
|
|
প্রকল্পে সমস্যা, জেলাশাসকের চিঠি |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
সরকারি প্রকল্প রয়েছে। অথচ, তা রূপায়ণে ফাঁক থেকে যাচ্ছে। ভূমিহীন কৃষি শ্রমিকদের ভবিষ্যনিধি প্রকল্প ও আম আদমি বিমা যোজনা নিয়েও সেই এক সমস্যা দেখা দিয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরে। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে বিডিওদের চিঠি পাঠিয়েছেন জেলাশাসক সুরেন্দ্র গুপ্ত। চিঠির প্রতিলিপি পাঠানো হয়েছে জেলা পরিষদ থেকে জেলার ৪ মহকুমাশাসকের দফতরেও। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, “কাজ করতে গিয়ে কিছু সমস্যা দেখা দিচ্ছে। তা সমাধানের জন্য এই চিঠি।”
এই চিঠির গোড়াতেই লেখা রয়েছে, ‘বেশ কিছু ব্লকে ভূমিহীন কৃষি শ্রমিকদের ভবিষ্যনিধি প্রকল্প এবং আম আদমি বিমা যোজনা প্রকল্প দু’টির অগ্রগতি প্রচার না পাওয়ায় থমকে রয়েছে। উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, ত্রুটি-বিচ্যুতিগুলি বারবার হওয়া সত্ত্বেও অনভিজ্ঞতার কারণে ও সম্যক অবগত না থাকার কারণে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই উদাসীনতা দেখা যাচ্ছে।’ জেলাশাসকের এই চিঠি পেয়ে নড়েচড়ে বসেছেন বিডিও’রা। জমি নেই এমন কৃষি-শ্রমিকদের জন্যই ভবিষ্যনিধি প্রকল্প চালু করেছে সরকার। এ ক্ষেত্রে কৃষি-শ্রমিকদের প্রতি মাসে ২০ টাকা করে দিতে হয়, সরকার আরও ২০ টাকা করে দেয়। ৭ বছর পর ওই টাকা ফেরত মেলে। অন্য দিকে, শ্রমিকদের দুর্ঘটনাজনিত কারণে মৃত্যু হলে তাঁদের পরিবার যাতে ক্ষতিপূরণ পায়, সেই জন্য রয়েছে আম আদমি বিমা যোজনা।
প্রকল্প রূপায়ণে ঠিক কী কী সমস্যা হচ্ছে? জেলা প্রশাসনের সূত্রে খবর, ভবিষ্যনিধি প্রকল্পে বেশ কয়েকটি সমস্যা রয়েছে।
১) এখনও ব্লক স্তরে ভূমিহীন কৃষি-শ্রমিকদের গ্রাম পঞ্চায়েত ভিত্তিক সঠিক লক্ষ্যমাত্রা স্থির করা হয়নি বা লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছনো সম্ভব হয়নি।
২) উপভোক্তার টাকা আদায়ে গ্রাম পঞ্চায়েত রসিদ (ফর্ম ৫) প্রদান করছে না এবং পাশ বই বিলি করা হচ্ছে না।
৩) উপভোক্তা নির্দিষ্ট বয়ঃসীমা অতিক্রম করলে অথবা মারা গেলেও যথাসময়ে প্রাপ্য দেওয়া হয়নি।
৪) উপভোক্তার টাকা গ্রাম পঞ্চায়েত আদায় করলেও যথাসময়ে তা পঞ্চায়েত সমিতিতে জমা পড়ছে না। পঞ্চায়েত সমিতিও সময়ে টাকা ট্রেজারিতে জমা করছে না।
৫) উপভোক্তাকে বছরের শেষে তার জমা টাকার অ্যাকাউন্ট স্লিপ দেওয়া হচ্ছে না।
৬) উপভোক্তার নাম ভিত্তিক লেজার ব্লক স্তরে যথাযথ ভাবে রক্ষিত হচ্ছে না।
৭) উপভোক্তার যাবতীয় তথ্যাদি কম্পিউটারে নথিভুক্ত করা হচ্ছে না।
আম আদমি বিমা যোজনায় অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি হচ্ছে। একই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিষয়ক নির্দেশগুলি জেলা স্তর থেকে ছেপে ব্লক স্তরে পাঠানো হলেও প্রকল্পে অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্রে ব্লক স্তরে কোনও উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে জেলাশাসকের পাঠানো চিঠিতে সমস্যা সমাধানে কী কী করণীয়, গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে কী করতে হবে, পঞ্চায়েত সমিতির স্তরেই বা কী করতে হবে, তা জানানো হয়েছে। চিঠির শেষে লেখা হয়েছে, ‘প্রতি মাসের উন্নয়নী সভায় গ্রাম পঞ্চায়েত ভিত্তিক ভূমিহীন কৃষি শ্রমিকদের ভবিষ্যনিধি প্রকল্প এবং আম আদমি বিমা যোজনা প্রকল্প দু’টির অগ্রগতি পর্যালোচনা করা এবং প্রয়োজনীয় তদারকি করা দরকার। গ্রাম পঞ্চায়েত ভিত্তিক প্রচার শিবির অনুষ্ঠিতও করতে হবে।’
জেলাশাসকের এই নির্দেশ মেনে ব্লক স্তরে কতটা কার্যকরী পদক্ষেপ হয়, সেটাই দেখার। |
|
|
|
|
|