একমাত্র ছেলেকে নিজের কাছে ফেরত পাবেন কি না, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সির আদালতে সে শুনানি শুক্রবার। কিন্তু ‘আর্থিক সমস্যা’য় রবিবার পর্যন্ত আইনজীবী জোগাড় করতে না পারায় উদ্বেগ কমছে না প্রবাসী ইঞ্জিনিয়ার দেবাশিস সাহার। আদালতের নির্দেশে দেবাশিসবাবুর এক বছরের ছেলে ইন্দ্রাশিস ওরফে তোজো আপাতত বাবা-মা’র কোলছাড়া হয়ে রয়েছে একটি রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টারে।
|
ইন্দ্রাশিস সাহা |
দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাটের বাসিন্দা দেবাশিস বহুজাতিক তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার চাকরি নিয়ে জুলাই মাসে পৌঁছন নিউ জার্সির পার্সিপ্যানি শহরে। তাঁর দাবি, ৯ অগস্ট তিন ফুট উঁচু খাট থেকে খেলতে খেলতে বেকায়দায় পড়ে গিয়ে চোট পায় ইন্দ্রাশিস। কিন্তু যে হাসপাতালে শিশুটির চিকিৎসা হয়, সেখানকার ডাক্তারেরা মনে করেন, মারধরে আহত হয়েছে শিশুটি। হাসপাতাল থেকেই খবর যায় ‘নিউ জার্সি চাইল্ড প্রোটেকশন টিম’-এর কাছে। তারা এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করতে শুরু করে দেবাশিস ও তাঁর স্ত্রী পামেলাকে। এখনও এ ব্যাপারে ওই ‘চাইল্ড প্রোটেকশন টিম’ তদন্ত করছে। তাদেরই করা একটি আবেদনের প্রেক্ষিতে ইন্দ্রাশিসকে বাবা-মা’র থেকে আলাদা রাখার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
বালুরঘাটের বাড়িতে এ দিন দেবাশিসবাবুর বাবা নির্মলকৃষ্ণ সাহা ও মা সোনারানিদেবীর সঙ্গে দেখা করেন প্রদেশ কংগ্রেসের মুখপাত্র ওমপ্রকাশ মিশ্র। তাঁর আশ্বাস, আজ, সোমবার দুপুরের মধ্যে বিদেশ মন্ত্রকের সঙ্গে যোগাযোগ করে সমস্যা মেটানোয় উদ্যোগী হবে প্রদেশ কংগ্রেস। ওমপ্রকাশবাবুর কথায়, “প্রয়োজনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিয়োজিত ভারতীয় রাষ্ট্রদূত নিরুপমা রাওয়ের হস্তক্ষেপ চেয়ে যোগাযোগ করা হবে। ওই দুধের শিশু শীঘ্রই যাতে মা-বাবার কোল ফিরে পায় সেই চেষ্টা করব।” আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় কলকাতায় এলে তাঁকেও বিষয়টি জানানো হবে বলে জানান ওই কংগ্রেস নেতা। নির্মলকৃষ্ণবাবু বলেন, “সকলের চেষ্টায় তোজোকে ফিরে পাব আশা করছি।” দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুরের বাসিন্দা পামেলাদেবীর মা প্রগতি বসাক বলেন, “নিউ জার্সিতে গিয়ে নাতির জিম্মা নিতে চাই। কিন্তু আমার পাসপোর্ট বা ভিসা নেই। প্রশাসন সে ব্যাপারে সাহায্য করলে উপকৃত হব।”
দেবাশিস এ দিন টেলিফোনে বলেন, “আর্থিক সমস্যার জন্যই এখনও আইনজীবী ঠিক করতে পারিনি। কয়েক জায়গায় কথাবার্তা বলছি। প্রবাসী ভারতীয়দের সঙ্গে যোগাযোগ করে কিছু একটা করার চেষ্টা করছি। শুক্রবারের মধ্যে আইনজীবী জোগাড় করতে না পারলে কী হবে জানি না!” |