একশো দিনের কাজ প্রকল্প থেকে কলা গাছের চারা কেনা নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ উঠল কেতুগ্রাম ২ ব্লকের সীতাহাটি পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে। সম্প্রতি ওই পঞ্চায়েতের বজরাডাঙা গ্রামের বাসিন্দারা একশো দিনের কাজে দুর্নীতির অভিযোগ জানিয়েছেন জেলা সমন্বয় আধিকারিক ও কাটোয়ার মহকুমাশাসক আর অর্জুনের কাছে। বাসিন্দাদের দাবি, কলা গাছের চারা কেনা নিয়ে ‘বিরূপ’ মন্তব্য করেছেন কেতুগ্রাম ২ ব্লকের পঞ্চায়েত সমূহের হিসাব ও নিরীক্ষণ আধিকারিকও (পিএএও)। লিখিত অভিযোগের পর বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করেছেন কেতুগ্রাম ব্লক আধিকারিক হেমন্ত ঘোষ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বজরাডাঙা গ্রামের বাসিন্দা মিহির কুণ্ডু তথ্য জানার অধিকার আইনে সীতাহাটি পঞ্চায়েতের ১০০ দিনের প্রকল্পের কিছু কাগজপত্র তুলেছেন। ওই গ্রামের বাসিন্দারা চিঠিতে দাবি করেন, ওই কাগজপত্র পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, ২০১০ সালে কলা গাছের চারা কেনা নিয়ে দুর্নীতি করেছে পঞ্চায়েত। ওই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, উচ্চমানের মর্তমান কলা গাছের দরপত্র নেওয়া ও দরপত্র খোলার তারিখ ছিল ২০১০ সালের ৪ নভেম্বর। অথচ তার আগেই ২৯ অক্টোবর দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিষ্ণুপুর থানার শ্রীকৃষ্ণপুর গ্রামের এক নার্সারিকে কলা গাছের চারা কেনার বরাত দেওয়া হয়েছে।
ওই চিঠিতে আরও দাবি করা হয়, দরপত্র ডাকার বিজ্ঞপ্তিতে ৫০০০টি চারা গাছ কেনা হবে বলে জানিয়েছিল পঞ্চায়েত। কিন্তু ওই নার্সারিকে বরাত দেওয়া হয় ৮০০০টি গাছের। অভিযোগ, দরপত্র খোলার পর দেখা যায়, নদিয়ার ভাগ্যবন্তপুরের এক নার্সারি চারাগাছ প্রতি ৫ টাকা দর দিয়েছিল। কিন্তু তাদের বরাত না দিয়ে দক্ষিণ ২৪ পরগনার নার্সারিটিকে ১৯ টাকা ৫০ পয়সা দরে চারাগাছ দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। মিহিরবাবুর অভিযোগ, “এর পরেও উচ্চমানের মর্তমান কলার চারা দেওয়া হয়নি। দক্ষিণ ২৪ পরগনার ওই নার্সারি পঞ্চায়েতে যে বিল পেশ করেছে, তাতে তার উল্লেখও রয়েছে।” অন্য দিকে, কেতুগ্রাম ২ ব্লকের পঞ্চায়েত সমূহের হিসাব ও নিরীক্ষণ আধিকারিকের পেশ করা রিপোর্টেও দাবি করা হয়েছে, পঞ্চায়েতে ১ লক্ষ ১৬ হাজার টাকা নয়ছয় করা হয়েছে। সীতাহাটি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান ও নির্বাহী আধিকারিক সে ব্যাপারে কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি বলেও ওই রিপোর্টে উল্লেখ করেন তিনি। পঞ্চায়েত প্রধান বিকাশ বিশ্বাস অবশ্য দাবি করেছেন, “ব্লক প্রশাসনের নির্দেশেই দক্ষিণ ২৪ পরগনার ওই নার্সারির কাছ থেকে কলা গাছ কিনেছিলাম। এর মধ্যে কোনও দুর্নীতি নেই।” |