|
|
|
|
সিটিসেন্টারে ফের লুঠপাট, নিরাপত্তা বাড়ানোর দাবি |
নিজস্ব সংবাদদাতা • দুর্গাপুর |
সাতসকালে আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে লুঠপাট চালিয়ে চম্পট দিল দুষ্কৃতীরা। রবিবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে সিটি সেন্টারের মৌলানা আজাদ সরণির একটি বেসরকারি খাদ্য ও ঠান্ডা পানীয় সংস্থায়। এডিসিপি (পূর্ব) সুনীল যাদব জানান, সংস্থার কর্মীদের জিজ্ঞাসাবাদ করে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। দুষ্কৃতীদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকাল ৭টা নাগাদ মোটরবাইকে চড়ে মোট চার জন দুষ্কৃতী ওই সংস্থাটির অফিসে ঢোকে। তখন ভিতরে ছিলেন রাতের পালিতে কর্মরত জনা ছয়েক কর্মী। প্রথমে দুই দুষ্কৃতী আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে সকলকে একটি ঘরে নিয়ে গিয়ে আঠকে দেয়। বাকি দু’জন আলমারির তালা ভেঙে লুঠপাট চালায়। সংস্থার আধিকারিক চিরঞ্জীব সিংহ দাবি করেন, দিনে আদায় করা অর্থ রাতে আলমারিতে রাখা হয়। পরের দিন সকালে তা পাঠানো হয় সংস্থার প্রধান কার্যালয়ে। কিন্তু এ দিন তার আগেই দুষ্কৃতীরা তা লুঠ করে পালায়।
সংস্থার এক কর্মীর দাবি করেন, আবাসিক এলাকা। সকালে রাস্তাঘাটে লোকজন বেরিয়ে পড়েছেন। তার মধ্যে এ ভাবে দুষ্কৃতীরা ‘অপারেশন’ চালিয়ে বেরিয়ে যেতে পারে তা কল্পনাও করা যায়নি। সকালের পালিতে কাজে যোগ দিতে এসে তিনি বুঝতেও পারেননি, ভিতরে কী চলছে। সামনে দিয়েই মোটরবাইকে চড়ে দ্রুতবেগে বেরিয়ে যায় চার দুষ্কৃতী। ভিতরে ঢুকে বুঝতে পারেন, ডাকাতি হয়েছে। |
|
নিজস্ব চিত্র। |
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় সিটি সেন্টার ফাঁড়ির পুলিশ। পৌঁছন এডিসিপি (পূর্ব) সুনীল যাদব। কর্মীদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরে চিরঞ্জীববাবুকে সিটি সেন্টার ফাঁড়িতেও ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। দুর্গাপুর ও আশপাশের থানাগুলিকে সতর্ক করে দেওয়া হয়। পরে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দু’জনকে আটক করে পুলিশ। এডিসিপি সুনীলবাবুর দাবি, “দুষ্কৃতীরা হয় আগে থেকেই ওই সংস্থার উপর নজর রাখত। তা না হলে ওই সংস্থার কারও দুষ্কৃতীদের সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে। দুষ্কৃতীরা আগে থেকেই জানত, আগের দিনের সংগৃহীত অর্থ রাতে জমা থাকে। সকালে তা অন্যত্র স্থানান্তর করা হয়। কাজেই ডাকাতি করতে গেলে সকালেই ‘কাজ’ সারতে হবে।” এডিসিপি (পূর্ব) বলেন, “সম্ভাব্য সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। দ্রুত দুষ্কৃতীদের গ্রেফতার করা হবে।
শহরের জনবহুল এলাকায় আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে ডাকাতির ঘটনায় আতঙ্কিত এলাকাবাসী। বুধবার রাতেই বাঘাযতীন পথের একটি বাড়িতে গৃহকর্তার অনুপস্থিতে দুষ্কৃতীরা দরজার তালা ভেঙে নগদ টাকা, গয়না লুঠ করে পালায়। গৃহকর্তা, দক্ষিণবঙ্গ রাজ্য পরিবহণ সংস্থার কর্মী অসিত সাহা অভিযোগ করেন, সন্ধ্যায় তাঁর স্ত্রী বাইরে ছিলেন। তিনি কর্মস্থল থেকে বাড়ি ফিরে দেখেন, বাড়ির দরজার তালা ভেঙে লুঠপাট চালিয়েছে দুষ্কৃতীরা। খোয়া গিয়েছে নগদ টাকা, সোনার গয়না। দিন পনেরো আগে সিটি সেন্টারের সেল কো-অপারেটিভ এলাকার জসিমউদ্দিন পথের একটি বাড়িতেও চুরির ঘটনা ঘটে। গৃহকর্ত্রী প্রতিবেশীদের সঙ্গে বেরিয়েছিলেন। রাত ৮টা নাগাদ ফিরে দেখেন, গ্রিলের তালা ভেঙে চুরি গিয়েছে নগদ টাকা, গয়না, ল্যাপটপ। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, সিটি সেন্টারের মতো গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় পুলিশি নিরাপত্তা ব্যবস্থায় ফাঁক রয়েছে। তা না হলে এভাবে একের পর এক চুরি-ডাকাতির ঘটনা ঘটত না।
মেয়র তথা বিধায়ক অপূর্ব মুখোপাধ্যায় বলেন, “কমিশনারেটে পুলিশের সংখ্যা অপ্রতুল। সেটা নিশ্চয়ই একটা সমস্যা। কিন্তু নিরাপত্তার বিষয়টি যে ভাবে হোক সুনিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি, সাধারণ মানুষকেও যে কোনও অপরিচিতের ব্যাপারে সচেতন থাকতে হবে।” |
|
|
|
|
|