উদ্বেগে কুমোরপাড়া
অগ্নিমূল্য প্রতিমার খড় মাটি
তবছর এক ট্রাক মাটির দাম ছিল ২ হাজার টাকা। প্রতিমা গড়তে প্রায় তিনশো টাকার খড় লেগেছে। এ বার মাটির দাম বেড়ে আড়াই হাজার টাকা ট্রাক হয়েছে। খড়ের খরচ দাঁড়িয়েছে পাঁচশো টাকায়। দাম বেড়েছে রং, কাঠ, বাঁশ, প্রতিমার সজ্জা সামগ্রীর। এ ভাবে উপকরণের মূল্যবৃদ্ধির কোপে পড়ে কোচবিহার কুমোরটুলির মৃৎশিল্পীরা বিপাকে পড়েছেন। নিরুপায় হয়ে অনেকে কম প্রতিমা তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। শহরের পালপাড়া এলাকাকে ঘিরে গড়ে উঠেছে কোচবিহার কুমোরটুলি। এখানকার শিল্পীদের চোখেমুখে উদ্বেগের ছায়া। এলাকার প্রবীণ শিল্পী বাদল পালের কথাই ধরা যাক। গতবছর পুজোয় বাদলবাবু ৪৮টি দেবী প্রতিমার বরাত নিয়েছিলেন। এ বার নিয়েছেন ৪০টি। শত অনুরোধেও যে তিনি নতুন করে বরাত নেবেন না সেটা জানিয়ে দিতে ভুলছেন না। বাদলবাবু বলেন, “বরাত বাড়ানোর প্রশ্ন নেই। কারণ উদ্যোক্তারা গত বছরের দামে প্রতিমা চাচ্ছেন। এটা সম্ভব নয়। নিরুপায় হয়ে কিছু বরাত নিয়েছি। বাড়তি বরাত নিয়ে লোকসান করতে যাব কেন!” মৃৎ শিল্পী পুলক পাল জানান, উদ্যোক্তারা নতুন মডেলের প্রতিমা গড়তে বলছেন।
ছবি: হিমাংশুরঞ্জন দেব
কিন্তু কেউ বাড়তি দাম দিতে রাজি হচ্ছে না। অথচ উপকরণের দাম বেড়েছে। তাই তাঁদের পক্ষে বরাত নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। অনেক পুজো কমিটির লোকজনকে ফিরিয়ে দিতে বাধ্য হচ্ছেন। কুমোরটুলি সূত্রে জানা গিয়েছে, শুধুমাত্র উপকরণের চড়া দাম নয়। ভাল কারিগরের দৈনিক হাজিরা বৃদ্ধিও সমস্যা জটিল করেছে। গত বছর একজন দক্ষ কারিগরকে ৩০০ টাকা মজুরি দেওয়া হত। এ বার সেটা বেড়ে হয়েছে ৪০০ টাকা। মৃৎ শিল্পীদের অভিযোগ, উদ্যোক্তাদের বেশিরভাগ মণ্ডপসজ্জা, আলোকসজ্জা, বিনোদনে খরচ বাড়াতে বাধ্য হয়েছেন। কিন্তু প্রতিমার দাম নিয়ে কেউ ভাবেন না। অথচ উপকরণের দাম বৃদ্ধির বিষয় বোঝাতে হিমসিম খেতে হচ্ছে। শিল্পী সুজিত পাল বলেন, “প্রতি বছর রাস্তার উপরে পলিথিনের শেড দিয়ে প্রতিমা গড়তে হচ্ছে। বিভিন্ন মহলে দরবার করে লাভ হয়নি। স্থায়ী কুমোরটুলি এখনও অধরা। এর পরেও যদি দাম না মেলে তবে তো অন্য কোনও পেশায় চলে যেতে হবে।” মৃৎশিল্পীর সমস্যা মানছেন পুজো উদ্যোক্তাদের অনেকে। যদিও বাসিন্দাদের উপরে চাঁদার চাপ এড়াতে তাঁরাও নিরুপায় বলে জানান। বেলতলা ইউনিটের সভাপতি হীরক রায় বলেন, “শিল্পীদের সমস্যা আমরাও বুঝি। কিন্তু মূল্যবৃদ্ধির বাজারে চাঁদার হার বাড়িয়ে বাসিন্দাদের উপরে চাপ বাড়াতে পারছি না। তাই বাজেট বাড়ানো সম্ভব নয়।” পুরাতন পোস্ট অফিসপাড়া পুজো কমিটির রাকেশ চৌধুরী বলেন, “জানি প্রতিমা গড়ার খরচ বেড়েছে। বাড়তি দাম দেওয়া হচ্ছে না এটা ঠিক নয়।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.