প্রায় এক বছর আগে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে মিলেছে সচিত্র পরিচয় পত্র। সরকারি সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করতে রাজ্য সরকারের তরফেও প্রায় দু’বছর আগে পরিচয় পত্র দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বছর গড়িয়ে গেলেও সরকারি সুযোগ সুবিধা না-মেলায় ক্ষুব্ধ রায়গঞ্জের কুমোরটুলি এলাকার মৃৎশিল্পীরা। অভিযোগ উঠেছে, সচিত্র পরিচয়পত্র নিয়ে তাঁরা কয়েকবার বিডিও অফিস এবং কর্ণজোড়ায় উত্তর দিনাজপুরের জেলাশাসকের দফতরে প্রশাসনিক আধিকারিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। কিন্তু সরকারি সুবিধা মেলেনি। উত্তর দিনাজপুরের জেলাশাসক পাসাং নরবু ভুটিয়া অবশ্য বলেন, “জেলা তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের কর্তাদের মৃৎ শিল্পীদের সঙ্গে কথা বলে অভিযোগ খতিয়ে দেখে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে শিল্পীদের সরকারি পরিচয়পত্র নিয়ে সরাসরি আমার সঙ্গে যোগাযোগ করতে অনুরোধ করছি।” রায়গঞ্জ শহরে কাঞ্চনপল্লি ও লাগোয়া সুভাষগঞ্জ এলাকা কুমোরটুলি বলে পরিচিত। সেখানে রয়েছেন প্রায় ৩০০ জন মৃৎ শিল্পী। |
প্রতিমা তৈরি করে তাঁরা জীবিকা নির্বাহ করেন। প্রত্যেকে বিপিএল তালিকাভুক্ত। শিল্পীরা জানান, ২০১১ সালের জুন মাসে আবেদনের ভিত্তিতে ওই বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর কেন্দ্রীয় বস্ত্র মন্ত্রক কুমোরটুলির প্রায় ৫০ জন শিল্পীকে সচিত্র পরিচয়পত্র দেয়। বিডিও অফিস থেকে ওই পরিচয়পত্র বিলি করা হয়। তার আগে ২০১০ সালের অক্টোবর মাসে রাজ্য সরকারের তরফে মৃৎ শিল্পীদের আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতি সমীক্ষা করে ১০ জনকে পরিচয় পত্র দেওয়া হয়। রাজ্য তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের তরফে দেওয়া সচিত্র পরিচয় পত্রের নাম ‘লোকশিল্পী পরিচয়পত্র’। মৃৎশিল্পীদের অভিযোগ, পরিচয় পত্র দেওয়ার সময় জেলা প্রশাসনের তরফে জানানো হয় তাঁরা সরকারি ঋণ, পেনশন, সরকারি বাসভাড়ায় ছাড়, দুর্ঘটনায় ক্ষতিপূরণ, চিকিৎসা বিমার সুবিধা পাবেন। পরিচয়পত্র দেখালেই হবে। শিল্পী গোবিন্দ পাল বলেন, “কেন্দ্রীয় সরকার এক বছর আগে সচিত্র পরিচয়পত্র দিলেও কাজে লাগেনি। জেলা ও ব্লক প্রশাসনের বিভিন্ন দফতরে ওই পরিচয়পত্র নিয়ে গিয়ে ঋণ, পেনশনের বিষয়ে আশ্বাস মেলেনি। সরকারি বাসের কন্ডাক্টরদের পরিচয়পত্র দেখিয়ে ভাড়া ছাড় পাওয়া যায়নি।” প্রবীণ শিল্পী ভানু পাল বলেন, “রাজ্য তথ্য ও সংস্কৃতি দফতর দু’বছর আগে পরিচয় পত্র দিয়েছে। দেওয়ার সময় আধিকারিকরা জানিয়েছিলেন সেটি দেখিয়ে ঋণ, পেনশন, চিকিৎসা, বিমার সুবিধা পাব। দুর্ঘটনায় ক্ষতিপূরণ ও সরকারি অনুদানে বিভিন্ন সরকারি মেলায় অংশগ্রহণ করে সামগ্রী বিক্রির সুযোগ মিলবে। দেড় বছর ধরে পরিচয়পত্র নিয়ে বহু বার প্রশাসনিক কর্তাদের দফতরে ঘুরেও লাভ হয়নি।” |