ডেঙ্গি পরিস্থিতি ক্রমেই জটিল হচ্ছে নদিয়া জেলায়। চাকদহ ও কালীগঞ্জ ব্লকে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে বলে বেসরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে। তবে জেলা প্রশাসন বিষয়টি নিয়ে প্রকাশ্যে মুখ খুলতে রাজি হয়নি। জেলায় ডেঙ্গিতে শতাধিক মানুষ আক্রান্ত বলে জানা গিয়েছে। অস্থায়ী মেডিক্যাল ক্যাম্প করে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছে প্রশাসন। তবে সাধারণ মানুষ থেকে জনপ্রতিনিধি, জেলা প্রশাসনের বিরুদ্ধে সকলেই সরব। জেলাশাসক অভিনব চন্দ্র অবশ্য ডেঙ্গি পরিস্থিতি নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা সাফ জানিয়েছেন, ডেঙ্গি নিয়ে যা কিছু বলার তা রাজ্যস্তরে জানান হয়েছে। তাঁরাই সংবাদ মাধ্যমে বিবৃতি দেবেন।
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত এক সপ্তাহ ধরে নদিয়ার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে জ্বর নিয়ে অনেকেই সদর হাসপাতাল ও শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। অনেকের শরীরে ডেঙ্গির লক্ষণ রয়েছে। কয়েক জনকে কলকাতায় স্থানান্তরিত করা হয়েছে। কালীগঞ্জ ব্লক স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, মিরা ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত অফিস লাগোয়া পাড়ায় একাদশ শ্রেণির এক ছাত্রীর মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। তাঁর শরীরে ডেঙ্গির লক্ষণ রয়েছে। ওই ছাত্রী কলকাতায় পড়াশোনা করতেন। জ্বর নিয়ে তিনি কলকাতা থেকে বাড়ি ফেরেন। কিন্তু সাধারণ জ্বর মনে করে চিকিৎসকের কাছে যাননি পরিবারের সদস্যেরা। পরে ওই ছাত্রী মারা যান। স্থানীয় বিধায়ক নাসিরুদ্দিন আহমেদ এই পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দা। তিনি বলেন, “বিষয়টি শুনেছি। স্বাস্থ্য দফতরকে জানানো হয়েছে। এলাকায় অনেকের জ্বর রয়েছে। জেলাশাসককে জানানো হয়েছে।”
মঙ্গলবার জেলা স্বাস্থ্য দফতরের একটি চিকিৎসক দল কালীগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় গিয়েছেন। তাঁরা রক্তের নমুনা সংগ্রহ করেছেন। শুধু কালীগঞ্জ নয়, চাকদহ ব্লকেও এক জনের ডেঙ্গি মৃত্যু হয়েছে বলে খবর রয়েছে। তবে বিষয়টি নিয়ে প্রশাসন প্রকাশ্যে কিছু বলতে রাজি নয়। চাকদহ এলাকায় একটি চিকিৎসক দল পাঠানো হয়েছে। চাকদহ, কালীগঞ্জ ছাড়াও বেশ কয়েকটি ব্লকে ডেঙ্গি আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে। কলকাতা-সল্টলেক থেকে জ্বর নিয়ে কেউ ফিরলে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। নাম না প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, “আমরা খবর পাওয়া মাত্র ব্যবস্থা নিচ্ছি। তবে ডেঙ্গি নিয়ে প্রকাশ্যে কিছু না বলার নির্দেশ রয়েছে। জেলা শতাধিক মানুষ ডেঙ্গি আক্রান্ত রয়েছেন।” |