দুই জন চিকিৎসক একই সঙ্গে ছুটি নিয়ে স্বাস্থ্য ভবনে গিয়েছেন। তার জেরে বন্ধ রইল শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালের চর্ম রোগের বহির্বিভাগ। বুধবার শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে ঘটনাটি ঘটেছে। তাতে চিকিৎসা করাতে এসে ফিরেও গিয়েছেন কয়েকজন রোগী। হাসপাতালের স্বাস্থ্যকর্মীদেরই একাংশ ‘চিকিৎসক কয়েক দিন ছুটিতে রয়েছেন’ জানিয়ে তাদের পরের সপ্তাহে আসতে বলেছেন।
এ দিন দায়িত্বে থাকা ব্যক্তি সঠিক সময়ে হাসপাতালে না আসায় ওষুধের ‘স্টোর’ সময় মতো খোলা যায়নি। অনেক রোগীকেই ওষুধের জন্য দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে। হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সুপার রঞ্জিত ভগত বেলা ১১ টা নাগাদ স্টোর খোলার ব্যবস্থা করলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। সুপার প্রদীপ সরকার অসুস্থ থাকায় ভারপ্রাপ্ত সুপার হিসাবে দায়িত্ব সমলাচ্ছেন রঞ্জিত ভকত। ভারপ্রাপ্ত সুপার রঞ্জিতবাবু বলেন, “দুই চিকিৎসক ছুটি নিয়ে স্বাস্থ্য ভবনে কোনও ইন্টারভিউ দিতে গিয়েছেন বলে জানি। সে কারণে চর্ম রোগের বহির্বিভাগ ৩ দিন বন্ধ থাকবে। অর্থোপেডিক বিভাগে মাত্র ২ জন চিকিৎসক রয়েছেন। ২ দিন করে তাঁরা চার দিন বহির্বিভাগে চিকিৎসা পরিষেবা দিচ্ছেন। চিকিৎসকের অভাবের জন্য বাকি ২ দিন অর্থোপেডিকের বহির্বিভাগ খোলা রাখা যাচ্ছে না।” রঞ্জিতবাবু জানিয়েছেন, হাসপাতালের স্টোরের দায়িত্বে যিনি ছিলেন তিনি দেরিতে আসায় সমস্যা হয়েছিল।
বৃহস্পতিবার বাদ দিয়ে সপ্তাহে ৫ দিন হাসপাতালে চর্ম রোগের বহির্বিভাগ খোলা থাকে। চর্ম রোগের চিকিৎসক হাসপাতালে দুই জনই রয়েছেন। একই সঙ্গে তাঁরা ছুটি নিয়ে কলকাতায় যাওয়ায় চর্ম রোগের বহির্বিভাগ ৩ দিন বন্ধ থাকবে বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন।
কী করে একই সঙ্গে দুই জন চিকিৎসক ছুটি নিয়েছেন তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। অন্য দিকে অর্থোপেডিকের বহির্বিভাগ সপ্তাহে ৬ দিনের পরিবর্তে মাত্র ৪ দিন খোলা থাকছে। সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক জরুরি বিভাগে দায়িত্ব পালন করলে ওই দিন বন্ধ থাকছে পুরুষ বা মহিলাদের সাধারণ বহির্বিভাগ। বুধবারও পুরুষদের বহির্বিভাগ বন্ধ ছিল। রোগীদের ৩৬ নম্বর ঘরে সাধারণ মেডিসিনের বহির্বিভাগে পাঠানো হয়। দূর থেকে রোগীদের হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে এনে বহির্বিভাগ বন্ধ দেখে অনেক সময়তেই দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে পরিবারের লোকদের।
রবিবার ছাড়া জেলা হাসপাতালের বহির্বিভাগ সপ্তাহের অন্যান্য দিন খোলা থাকার কথা। অথচ অর্থোপেডিক, চর্ম রোগ-সহ পুরুষ এবং মহিলাদের সাধারণ বহির্বিভাগ সপ্তাহে একাধিক দিন বন্ধ থাকছে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, অর্থোপেডিক বিভাগে ২ জন চিকিৎসককে বহির্বিভাগ সামলানো, ওয়ার্ডে ভর্তি থাকা রোগীদের চিকিৎসা, অস্ত্রোপচারের পরিষেবা দিতে হয়। তার উপর রয়েছে ‘অন কল’ পরিষেবা। সে কারণে ২ জন চিকিৎসককে দিয়ে সপ্তাহে ৪ দিন (সোমবার, মঙ্গলবার শুক্রবার এবং শনিবার)-এর বেশি বহির্বিভাগ করানো সম্ভব হচ্ছে না। অথচ মাঝে মধ্যেই সুষ্ঠু পরিষেবা না পেয়ে অনেক রোগীকেই ফিরে যেতে হচ্ছে বলে অভিযোগ। |