নবম শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষার দায়িত্ব এখন যেমন স্কুলের হাতে রয়েছে, তেমনই রেখে দিতে চান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মধ্যশিক্ষা পর্ষদকে তিনি অনুরোধ করেছেন, তারা যেন ওই পরীক্ষার দায়িত্ব না-নেয়। বুধবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে রাজ্যের স্কুলশিক্ষা দফতর আয়োজিত শিক্ষক দিবসের অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী তাঁর এই ইচ্ছার কথা জানিয়ে দেন।
স্কুলশিক্ষা দফতরের পরিকল্পনা ছিল, নবম শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষার প্রশ্ন তৈরি করবে পর্ষদ। ছাত্রছাত্রীরা নিজেদের স্কুলে বসে পরীক্ষা দিলেও খাতা দেখবেন অন্য স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা। গত ১৩ অগস্ট শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু এই ঘোষণা করেন। এই ব্যবস্থায় জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষা মাধ্যমিকের আগেই ছাত্রছাত্রীরা কার্যত ‘মিনি মাধ্যমিক’-এর চাপে পড়ে যাবে বলে শিক্ষকদের একাংশের আশঙ্কা ছিল। অভিজ্ঞ শিক্ষকদের অনেকেই সরকারের এই সিদ্ধান্তের সঙ্গে সহমত হতে পারেননি। তাঁদের বক্তব্য, ছাত্রছাত্রীদের চাপ কমানোর জন্যই দেশের অন্যান্য অংশের সঙ্গে এ রাজ্যেও নবম ও দশম শ্রেণির পাঠ্যক্রম বিভাজন করা হয়। মাধ্যমিক পরীক্ষা হয় কেবল দশম শ্রেণির পাঠ্যক্রমের উপরে। এখন নবম শ্রেণির পরীক্ষাকেও যদি কমবেশি ‘এক্সটার্নাল’ বা বহিঃপরীক্ষার চেহারা দেওয়া হয়, তাতে পড়ুয়াদের চাপ কমার বদলে বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা।
এর পরে গত মঙ্গলবার পর্ষদ-কর্তৃপক্ষ জানান, অনেক স্কুল নতুন ব্যবস্থা মেনে নবম শ্রেণির পরীক্ষা নেওয়ার জন্য তৈরি নয়। প্রস্তুত নয় অনেক পড়ুয়াও। তাই এ বছর নয়, আগামী বছর থেকে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ ওই পরীক্ষার প্রশ্ন করবে এবং খাতা দেখবেন অন্য স্কুলের শিক্ষকেরা। ঠিক তার পরের দিন, বুধবারের অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “শিক্ষামন্ত্রীকে বলেছি, নবম শ্রেণির পরীক্ষার দায়িত্ব পর্ষদকে দেওয়া যাবে না। এতে বাচ্চারা ভয় পেয়ে যাচ্ছে। পর্ষদকে অনুরোধ জানাচ্ছি, তাঁরা যেন নবম শ্রেণির প্রশ্ন না-করেন। এই দায়িত্ব স্কুলের হাতেই ছেড়ে দিতে হবে।” তাতে পড়ুয়াদের উপরে চাপ কমবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী জানান, বিষয়টি নিয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকে আলোচনা হবে। |