চার চাপেই অবশেষে ধুন্ধুমার ব্যাটিং বর্ষার
ষাঢ় বা শ্রাবণ যা পারেনি, সেটাই করে দেখাল ভাদ্র।
ভাদ্রের একেবারে শেষ পর্যায়ে এসে অবশেষে যেন ‘বর্ষা’ এল দক্ষিণবঙ্গে! মঙ্গলবার বিকেল থেকে থেকে বুধবার বিকেল পর্যন্ত কলকাতায় ৭৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। একটানা ২৪ ঘণ্টা বৃষ্টির হিসেবে যেটা চলতি মরসুমের সর্বোচ্চ। উপকূলবর্তী এলাকায় ওই একই সময়ে ২০০ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টি হয়েছে। আবহবিদেরা বলছেন, বৃষ্টির এমন অনুকূল পরিবেশ এ বার গোটা বর্ষাকালে এই প্রথম। এবং সেটার জন্য অপেক্ষা করতে হল ভাদ্রের শেষার্ধ পর্যন্ত। যার জন্য এত বেশি বৃষ্টি, সেই নিম্নচাপ ওড়িশা হয়ে চলে গিয়েছে মধ্যপ্রদেশে। তাতে অবশ্য বৃষ্টির আপাতত কিছু যাচ্ছে-আসছে না। কারণ, ওই নিম্নচাপ যে-পরিস্থিতির সৃষ্টি করে গিয়েছে, তাতে আজ, বৃহস্পতিবারেও কলকাতা ও সংলগ্ন এলাকায় ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়ে রেখেছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর।
অঝোর বর্ষণের মাঝেও রোজকার মতোই কর্মব্যস্ত হাওড়া সেতু। বুধবার রণজিৎ নন্দীর তোলা ছবি।
ঠিক কেমন পরিস্থিতির সৃষ্টি করে গিয়েছে নিম্নচাপ? আলিপুর আবহাওয়া দফতরের ডিরেক্টর গোকুলচন্দ্র দেবনাথ জানান, ওড়িশা উপকূলের নিম্নচাপটি দক্ষিণবঙ্গের মৌসুমি বায়ুকে অতি সক্রিয় করে দিয়ে গিয়েছে। মৌসুমি বায়ুর প্রবাহ মাটি থেকে আট কিলোমিটার উপর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। সেই সঙ্গে দক্ষিণবঙ্গ সংলগ্ন এলাকাতেই অবস্থান করছে একটি নিম্নচাপ অক্ষরেখা। এর পাশাপাশি মধ্যপ্রদেশের নিম্নচাপটি তো রয়েছেই। তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে গুজরাত উপকূলে থাকা অন্য একটি নিম্নচাপও। এই চার ফলার দাপটে বৃহস্পতিবারেও ভাল বৃষ্টি পাবে দক্ষিণবঙ্গ। আবহবিদদের ব্যাখ্যা, গুজরাতের নিম্নচাপটি শক্তিশালী করে রেখেছে মধ্যপ্রদেশের নিম্নচাপটিকে। যার প্রভাবে দক্ষিণবঙ্গ সংলগ্ন এলাকায় থাকা নিম্নচাপ অক্ষরেখাটি সক্রিয় হচ্ছে। অতি সক্রিয় হয়েছে মৌসুমি বায়ুও। মরসুমের প্রথম ভাগ জুড়ে কোথাও অল্প বৃষ্টি আবার কোথাও অতিবর্ষণে বর্ষার খামখেয়ালিপনা এ বার চরমে উঠেছে। চাষ ও চাষির যা ক্ষতি হওয়ার হয়েও গিয়েছে। এই অবস্থায় ভাদ্রের শেষার্ধের এই অতিবর্ষণে আবাদের কী লাভ হবে?
ধান বা অন্য ফসলের খুব একটা লাভ হবে বলে মনে করছেন না কৃষি দফতরের আধিকারিকেরা।
সেপ্টেম্বরে বাজিমাত
এলাকা বৃষ্টি*
কলাইকুন্ডা ২০৩
কাঁথি ২০০
দিঘা ১৯০
মেদিনীপুর ১৩২
কলকাতা ৭৫
ক্যানিং ৯৪

(*হিসেব মিলিমিটারে)
অতিবর্ষণে জল দ্রুত বয়ে যাওয়ায় ভূগর্ভে জলের স্তরও তেমন উঠবে না বলে জানাচ্ছেন ভূবিজ্ঞানীরা। তবে সেচ দফতরের ইঞ্জিনিয়ারেরা জানাচ্ছেন, রাজের জলাধারগুলি এই বৃষ্টিতে টইটম্বুর হয়ে উঠবে। ফলে বোরো চাষে জল পেতে কৃষকদের সমস্যা হবে না। ঘাটতি-বৃষ্টির জন্য এ বার জুন, জুলাই ও অগস্টে বিভিন্ন জেলায় পাম্প চালিয়ে সেচের জল সংগ্রহ করতে হয়েছে তাঁদের। সেপ্টেম্বরেও পর্যাপ্ত বৃষ্টি না-হলে বোরো ধানের জল কোথা থেকে আসবে, তা নিয়ে কৃষি আধিকারিকদের সংশয় ছিল। তাঁদের সেই চিন্তা আপাতত কেটেছে। সেই সঙ্গে পাট পচানোর জন্য পর্যাপ্ত জল দিয়েছে এই বৃষ্টি। এই অতিবৃষ্টির আরও একটি ভাল দিক রয়েছে। প্রবল বৃষ্টির জলস্রোত মশার আঁতুড়ঘর নষ্ট করে দেবে বলে জানাচ্ছেন পতঙ্গবিদেরা। মরবে মশার ডিম, শুককীট। ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়ার বিরুদ্ধে এটাই প্রকৃতির দাওয়াই। মশক-রাজের অবসান ঘটাতে যেটার দরকার ছিল।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.