লালগোলায় অটোর দাপটে থমকে ট্রেকার চলাচল
লালগোলায় অটোর দৌরাত্ম্যে বিপন্ন ট্রেকার মালিকেরা।
ত্রি-চক্রযানের দাপটে তাদের রুটি-রুটি ‘বিপন্ন’ বলে দিন কয়েক আগে ট্রেকার মালিকেরা পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করে।
গত রবিবার দুপুরে লালগোলা-জঙ্গিপুর রাজ্য সড়কে নেতাজি মোড়ের কাছে এক অটো চালক স্থানীয় এক ট্রেকার চালককে ভোজালি নিয়ে তাড়া করেছিল। পুলিশে সে ব্যাপারে অভিযোগ জানানো সত্ত্বেও অটো-রাজের দাপট কমেনি। পুলিশের নিষ্ক্রীয়তা নিয়েও অনুযোগ রয়েছে ট্রেকার মালিকদের। ট্রেকার মালিক সমিতির সম্পাদক প্রণব রায় ও শ্রমিক ইউনিয়ানের সম্পাদক অজয় সিংহের দাবি, পুলিশ একটু সক্রিয় হলে এতটা বেপরোয়া হয়ে উঠত না অটো-চালকেরা। রবিবার দুপুর থেকে সেই দাবিতেই অনির্দিষ্ট কালের জন্য লালগোলার সব রুটে ট্রেকার চালানো আপাতত বন্ধ করে দিয়েছেন তাঁরা।
লালগোলার বিডিও প্রসেনজিৎ ঘোষ বলেন, “ট্রেকার মালিক ও শ্রমিকদের অভিযোগের আইনি প্রতিকারের জন্য পুলিশকে বলেছি। পুলিশ আশা করি ব্যবস্থা নেবে।” মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার হুমায়নু কবীরও বলেন, একই রকম প্রতিশ্রতি দেওয়ার বাইরে বিশেষ কোনও রাস্তা বাতলাতে পারছেন না। তিনি বলেন, “দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে লালগোলা থানার ওসিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।” লালগোলায় তিনটি রুটে অন্তত ৬০টি ট্রেকার চলে। ওই থানা এলাকায় রয়েছে প্রায় ৮০০টি রিকশা। লালগোলা স্টেশন থেকে রিকশাচালকেরা যাত্রীদের এত দিন পৌঁছে দিতেন লালগোলা বাস-টামির্নাসে, অথবা নেতাজি মোড় স্টপে। সেখান থেকে ট্রেকারে করে যাত্রীদের পৌঁছে দেওয়া হত বিভিন্ন গ্রামে। মাস তিনেক আগে চার চাকার প্রায় দেড়শোটি অটো লালগোলার রাস্তায় নামার পর থেকে ওই ব্যবস্থার বদল ঘটে।
চারচাকার অটোগুলি লালগোলা স্টেশন থেকে যাত্রী তুলে তাঁদের প্রত্যন্ত গ্রামে পৌঁছে দিতে শুরু করে। ফলে রিকশা ও ট্রেকারে ভাগ্যে যাত্রী মেলে না। তাই নিয়ে ট্রেকার ও রিকশাচালকদের সঙ্গে অটোচালকদের বিরোধ লেগেই রয়েছে। বিবাদ এমন পর্যায়ে পৌঁছয় যে তৃণমূলের লালগোলা ব্লকের সভাপতি আবুল কাশেমের নেতৃত্ব মাস খানেক আগে দলীয় পতাকা বাঁধা প্রায় ৮০০টি রিকশার প্রতিবাদ মিছিল বের হয়। তার দু’ দিন পর তৃণমূলের লালগোলা ব্লক সভাপতি দিলসাদ আলির নেতৃত্বে দলীয় পতাকা বাঁধা প্রায় ৬০টি অটোর পাল্টা মিছিল হয়। আবুল কাশেম বলেন, “লালগোলার কোনও অটোর কোনও রুট পারমিট নেই। ট্রেকার ও রিকশাচালকদের রুটিরুজিতে অবৈধ ভাবে ভাগ বসাচ্ছে ওই সব অটো। প্রতিবাদে মিছিল করা হয়।” দিলসাদের পাল্টা দাবি, “রুট পারমিট দিয়ে অটো গুলিকে বৈধ ভাবে যাত্রী বহণের অনুমতি দেওয়ার দাবিতে মিছিল করা হয়েছিল।” তৃণমূলের দুই নেতার ওই দ্বন্দের মাঝেই বিডিও এবং ওসি প্রায় পক্ষকে নিয়ে বৈঠকে বসেন। প্রসেনজিৎ বলেন, “যাত্রীদের সুবিধার দিকে তাকিয়ে ওই বৈঠকে ঠিক হয়, রাত ৮টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত অটোগুলি স্টেশন থেকে যাত্রীবহণ করতে পারবে। এ ছাড়া কয়েক জন যাত্রী মিলে অটো ভাড়া করে যেতে পারে। কিন্তু মাসখানেক আগে নেওয়া ওই সিদ্ধান্ত লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠছে। এ কারণে পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।”
ট্রেকার শ্রমিক ইউনিয়নের সম্পাদক অজয় সিংহ অবশ্য বলেন, “কোনও প্রতিশ্রুতিতে আমরা আর ভুলছি না। কারণ, সব পক্ষকে নিয়ে বিডিও এবং ওসির বৈঠকের পরও ট্রেকার স্ট্যান্ডের দু’দিকে ৩০০ গজ দূরে নেতাজি মোড়ে ও ছাগলহাট মোড়ে অটোর দুটি স্ট্যান্ড করে যাত্রী তোলা হচ্ছে। এমনকি রাজারামপুর রুটে ট্রেকার নিয়ে গেলে খুন করবে বলেও অটোর মালিক ও শ্রমিকরা হুমকি দিয়েছে। তার পরই রবিবার প্রকাশ্য ভোজালি নিয়ে তাড়া করার ঘটনা ঘটেছে। ফলে দোষীদের গ্রেফতার না করা পর্যন্ত লালগোলায় ট্রেকার চলবে না।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.