রাজ্যে আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনের জন্য প্রাথমিক প্রস্তুতি শুরু করে দিল হাওড়া জেলা প্রশাসন। প্রাথমিক ভাবে জেলা প্রশাসন বুথ বা ভোটগ্রহণ কেন্দ্রগুলির সীমানা পুনর্বিন্যাস এবং মহিলা প্রার্থীদের জন্য ৫০ শতাংশ আসন সংরক্ষণের ব্যাপারে জোর দিচ্ছে।
মঙ্গলবার জেলা প্রশাসনের কর্তাদের সঙ্গে জেলার ১৪টি ব্লক প্রশাসনের কর্তাদের এ নিয়ে বৈঠক হয়। বৈঠকে পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রাথমিক প্রস্তুতির বিষয়ে খুঁটিনাটি আলোচনা করা হয়। ওই বৈঠকেই বিডিওদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, ভোটগ্রহণ কেন্দ্রগুলির সীমানা পুনর্বিন্যাস এবং কোন কোন আসন মহিলা প্রার্থীদের জন্য সংরক্ষণ করা যাবে, সে ব্যাপারে বিস্তারিত রিপোর্ট তাঁরা যেন আগামী ১৬ সেপ্টেম্বরের মধ্যে জেলা প্রশাসনের কাছে জমা দেন। রাজ্য নির্বাচন কমিশনের তরফে জেলার রিটার্নিং অফিসার হিসেবে জেলাশাসকই এই সব রিপোর্ট খতিয়ে দেখে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করবেন।
জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানান, নির্বাচনের প্রাথমিক প্রস্তুতি সংক্রান্ত কিছু জরুরি কাজ রয়েছে। সেগুলি যত দ্রুত শেষ হবে, তার উপরেই নির্ভর করছে পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিন ঘোষণা। তাঁর দাবি, রাজ্য সরকারের নির্দেশেই প্রাথমিক প্রস্তুতির কাজ শুরু হয়েছে। সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যেই তা শেষ হয়ে যাবে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সীমানা পুনর্বিন্যাসের ফলে বুথের সংখ্যা যেমন বাড়বে, তেমনই বাড়বে গ্রাম সংসদের সংখ্যাও। রাজ্যে শেষবার বুথের সীমানা পুনর্বিন্যাস হয়েছিল ২০০৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে। এ বারে ঠিক হয়েছে ৯০০-র বেশি ভোটদাতা থাকলে অতিরিক্ত একটি বুথ করতে হবে। সে ক্ষেত্রে মোট ভোটদাতাকে দু’টি ভাগে ভাগ করে দু’টি পৃথক বুথের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। বিডিওদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, সীমানা পুনর্বিন্যাসের ফলে নতুন বুথের সংখ্যার বিস্তারিত বিবরণ দিতে। একই সঙ্গে যেখানে নতুন বুথ হবে, তার যোগাযোগ ব্যবস্থা বা পানীয় জলের ব্যবস্থা রয়েছে কি না, তা-ও জানাতে হবে। ২০০৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনের পরে জনসংখ্যা যেমন বেড়েছে, তেমনই বেড়েছে নতুন ভোটদাতার সংখ্যাও। ফলে, বিভিন্ন পঞ্চায়েতে যতগুলি গ্রাম সংসদ রয়েছে, তার সংখ্যাও বাড়বে। এ বিষয়েও ক্ষেত্র সমীক্ষার ভিত্তিতে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে বিডিওদের।
২০০৮ সাল পর্যন্ত পঞ্চায়েত নির্বাচনে ৩০ শতাংশ আসন সংরক্ষিত ছিল মহিলাদের জন্য। এ বারে তা বাড়িয়ে ৫০ শতাংশ করার উপরে জোর দেওয়া হচ্ছে। তফসিলি জাতি-উপজাতির জন্য সংরক্ষিত আসনগুলিতেও মহিলাদের জন্য ৫০ শতাংশ আসন সংরক্ষণ করার উপরে জোর দেওয়া হচ্ছে। জেলার ১৫৭টি পঞ্চায়েতের কোন কোন আসন মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত করা যাবে সে বিষয়ে বিস্তারিত রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে বিডিওদের। মঙ্গলবারের ওই বৈঠকের পরে বুধবার থেকেই বিডিওরা কাজে নেমে পড়েছেন। একটি ব্লকের বিডিও জানান, তিনি এ দিন থেকেই ব্লক প্রশাসনে এবং গ্রাম পঞ্চায়েতগুলির কর্মচারীদের কাজে লাগিয়ে দিয়েছেন। |