একটি আবাসনের ফ্ল্যাটে এক মহিলাকে নলি কেটে খুন করা হল। বুধবার দুপুরে রিষড়ার সুভাষনগর হাউসিং কমপ্লেক্সের এ-১০ আবাসনের একটি ফ্ল্যাট থেকে রুক্মিনী সিংহ (৪৫) নামে ওই মহিলার মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তবে কে বা কারা ওই মহিলাকে খুন করল সে ব্যাপারে অন্ধকারে পুলিশ। ঘটনায় দিশাহারা তাঁর পরিবারের লোকজনও। তবে, পুলিশের অনুমান, পরিচিত কেউ ঘটনার পিছনে রয়েছে। কোনও আক্রোশের জেরেই এই খুন। কেননা, ঘর থেকে কোনও জিনিস খোয়া যায়নি বা কিছু তছনছ করা হয়নি বলে পুলিশ জানিয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রুক্মিনীরদেবীর স্বামী রামপুকার সিংহ সাহাগঞ্জের ডানলপ স্কুলের প্রধান শিক্ষক। দম্পতির ছেলে বিনীত ইঞ্জিনিয়ার। দু’জনের কেউই দুপুরে ফ্ল্যাটে ছিলেন না। একাই ছিলেন রুক্মিনীদেবী। পাঁচতলা আবাসনটির তিন তলায় তাঁদের দু’কামরার ফ্ল্যাট (ফ্ল্যাট নম্বর ৩০২)। তিন তলায় আরও তিনটি ফ্ল্যাট রয়েছে। এ দিন দুপুরে অন্য ফ্ল্যাটের এক জন রুক্মিনীদেবীর ফ্ল্যাটের দরজা দীর্ঘ ক্ষণ ধরে খোলা দেখে সন্দেহ হওয়ায় আরও কয়েক জনকে ডেকে ঢোকেন। রক্তাক্ত দেহটি শোওয়ার ঘরে বিছানায় পড়ে থাকতে দেখে তাঁরা পুলিশে খবর দেন। |
শ্রীরামপুরের আইসি তথাগত পাণ্ডে বাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থলে আসেন। আসেন হুগলির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (শিল্পাঞ্চল) অমিতাভ বর্মাও। অন্য ফ্ল্যাটের লোকজন পুলিশকে জানান, তাঁরা কোনও রকম আওয়াজ পাননি রুক্মিনীদেবীর ফ্ল্যাট থেকে। পুলিশ জানায়, রুক্মিনীদেবীর গলার নলিকাটা ছিল। পেটেও ধারাল অস্ত্র দিয়ে কোপ মারা হয়েছিল। এই কাজ কোনও পেশাদার খুনির বলে মনে করছে পুলিশ। ওই আবাসনের পাশেই একটি নির্মীয়মাণ ফ্ল্যাট রয়েছে। সেখানে রক্তের ছিটে পেয়েছেন তদন্তকারীরা। তাঁদের অনুমান, দুষ্কৃতীরা ওই পথ ধরে পালায়। তাদের কারও গায়ে লেগে থাকা রক্ত ওই ফ্ল্যাটের দেওয়ালে লাগে। খুনে ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। নিহতের স্বামী পুলিশকে জানিয়েছেন, তাঁর স্ত্রীর বাপেরবাড়ি বিহারের টাটায়। বাপেরবাড়ির সম্পত্তি নিয়ে আত্মীয়দের মধ্যে বিবাদ চলছে। এ ব্যাপারে ছোট ভাইয়ের বিরুদ্ধে মামলাও করেছেন রুক্মিনী। সেই বিবাদের সঙ্গে খুনের কোনও যোগ রয়েছে কি না, পুলিশ তা-ও খতিয়ে দেখছে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (শিল্পাঞ্চল) বলেন, “তদন্ত এখনও প্রাথমিক অবস্থায় রয়েছে। সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এখনই বিশদে কিছু বলা যাবে না।” |