নিজস্ব সংবাদদাতা • দুবরাজপুর |
ধসা রোগে দুবরাজপুরের পারুলিয়া পঞ্চায়েত এলাকার বিভিন্ন গ্রামে বহু বীজতলা নষ্ট হয়ে যাওয়ায় মাথায় হাত পড়ে গিয়েছিল চাষিদের। কৃষি দফতরের পরামর্শ অনুযায়ী আক্রান্ত বীজতলায় ওষুধ ছিটিয়ে রোগ নিয়ন্ত্রণে এনে কিছু জমিতে ধান রোয়ার কাজ করছেন চাষিরা। তবে বেশ কিছু জমি এ বার অনাবাদি থেকে গিয়েছে। মূলত চাষ করার সময় অতিক্রান্ত ধরে নিয়েই টাকা খরচ করে নতুন বীজতলা তৈরির ঝুঁকির পথে হাটতে চাননি আনেক চাষিই। আর এই পরিস্থিতিতেই কৃষিদফতরের পরামর্শে মেনে ‘শ্রী’ পদ্ধতিতে ধান চাষ করাকে ঘিরে নতুন আশায় বুক বেঁধেছেন কেন্দ্রীয় জল বিভাজিকা প্রকল্পের আওতাভুক্ত এলাকার বেশ কিছু চাষি।
যে পরিমাণ জমিতে এই পদ্ধতিতে ধান চাষ হচ্ছে সেটা অবশ্য খুব একটা বেশি নয়। মাত্র ৬০ বিঘা জমি। তবে কৃষকদের ধারনা ওই পদ্ধতি যদি কার্যকর হয় তাহলে পারুলিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতর মতো খরা প্রবণ এলাকার কৃষকদের আমন চাষ নিয়ে দুর্ভাবনা কিছুটা হলেও কমবে এবং ওঁরাই এ ব্যপারে পথ পদর্শক হবেন। একই আশা ব্লক কৃষি বিভাগেরও।
কী ভাবে? |
স্থানীয় ও কৃষিদফতর সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় সরকারের ৯০ শতাংশ ও রাজ্য সরকারের ১০ শতাংশ টাকায় গঠিত গোষ্ঠী যাদের কাজ নির্দিষ্ট এলাকার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া বৃষ্টির জলকে চাষের কাজে লাগানো বা সংশ্লিষ্ট এলাকায় মূলত চাষ উপযোগী বিভিন্ন কাজ করা। এরকমই ‘হাজরাপুর ওয়াটার সেড’ (জলবিভাজিকা) নামে একটি রেজিস্ট্রার গোষ্ঠী পারুলিয়ায় গঠিত হয় ২০০৮ সালে। সদস্য সংখ্যা ১০০ জন। ধসা রোগে বীজতলা নষ্ট হয়ে যাওয়ার পরে ওই সব চাষিদের একটা অংশ কৃষিদফতরের পরামর্শে ‘শ্রী’ পদ্ধতিতে ধান চাষ করছেন। ওই গোষ্ঠীর সদস্য তথা চাষি দুলাল বাগদি, বিমলাপ্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায়, মহম্মদ মুশা ও শেখ হাসিবুলদের বক্তব্য, “এমনিতেই আর কোনও উপায় ছিল না আমন চাষ করার। যোগাযোগ করা হলে কৃষিদফতর থেকে নতুন বীজ দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে দফতর থেকে দেখানো হয় ‘শ্রী’ পদ্ধতি কী রকম।
দুবরাজপুরের কৃষি সম্প্রসারণ আধিকারিক গোঁসাইদাস বিশ্বাস বলেন, “এটি পদ্ধতিতে খুব কম বৃষ্টিপাতে এবং কম সময়ে চাষ করা সম্ভব। বীজতলা থেকে মাত্র ১২ দিনের মাথায় ধানের চারা জমিতে রোপণ করা যায়।” গোঁসাইবাবু আরও বলেন, “স্বাভাবিক ক্ষেত্রে বীজতলা তৈরিতে যেখানে বিঘা প্রতি ৭-৮ কেজি বীজের প্রয়োজন সেখানে এই পদ্ধতিতে চাষ করলে বীজ লাগবে দেড় থেকে দুই কেজি। ফলনও ২০-৩০ শতাংশ বেশি পাওয়া যায়।” |