চলন্ত ট্রেনে যাত্রীদের মারধর করে লুঠপাটের অভিযোগে এক জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। মঙ্গলবার রাতে ঘটনাটি ঘটে বর্ধমান লুপলাইনে ভেদিয়া ও পিচকুড়ির ঢাল স্টেশনের মাঝে। পুলিশ জানায়, ধৃতের নাম বাবলু মণ্ডল। গুসকরার ১১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা বাবলু এর আগেও ট্রেনে ডাকাতির ঘটনায় অভিযুক্ত ছিল বলে জানিয়েছে রেলপুলিশ।
রেল পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার রাত ৮টা নাগাদ ডাউন বারহাওড়া লোকালের একটি কামরায় লুঠপাটের ঘটনাটি ঘটে। ওই কামরার যাত্রীদের অভিযোগ, ভেদিয়ে থেকে ট্রেনে ওঠে জনা চার-পাঁচ দুষ্কৃতী। ট্রেনটি স্টেশন ছাড়ার পরেই তারা স্বমূর্তি ধরে। ভোজালি, তলোয়ার বের করে লুঠপাট শুরু করে তারা। কেউ জিনিসপত্র দিতে অস্বীকার করলে মারধরও করে তারা। |
বর্ধমানের রেলপুলিশ জানিয়েছে, ওই কামরায় ছিলেন একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের ভেদিয়া শাখার কর্মী পীযূষ সাহা। ডাকাতেরা সঙ্গে থাকা জিনিসপত্র দিতে বললে তিনি প্রতিবাদ করেন। তখন তাঁকে কামরাতেই প্রচণ্ড মারধর করে দুষ্কৃতীরা। যাত্রীরা চিৎকার-চেঁচামেচি শুরু করলে ডাকাত দলটি পিচকুড়ির ঢাল স্টেশনের আগেই কামরা থেকে লাফ দিয়ে নেমে পালিয়ে যায়।
ওই কামরার যাত্রীরা রেলপুলিশকে জানিয়েছেন, ট্রেন পিচকুড়ির ঢালে পৌঁছলে তাঁরা সেখানকার স্টেশন কর্তৃপক্ষের কাছে গিয়ে ঘটনার কথা জানান। কিন্তু স্টেশন কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেন, সেখানে কোনও পুলিশ ফাঁড়ি নেই। তাই অভিযোগ জানাতে হলে বোলপুর অথবা বর্ধমানে যেতে হবে যাত্রীদের। এর পরে ট্রেন গুসকরায় পৌঁছলে যাত্রীরা স্টেশনে বিক্ষোভ দেখান। গুসকরার পুরপ্রধান চঞ্চল গড়াই সেখানে যান। আহত জনা পাঁচ যাত্রীকে গুসকরা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে গিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা করানো হয়।
বর্ধমান রেলপুলিশের ওসি আশিসকুমার মজুমদার রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ গুসকরা স্টেশনে যান। তিনিও বিক্ষোভের মুখে পড়েন। পরে তিনি গুসকরা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়ে আহতদের সঙ্গে কথা বলেন। তাঁদের কাছেই ডাকাতিতে জড়িতদের মধ্যে এক জনের বিবরণ শোনেন। পরে গুসকরা ফাঁড়ি ও আউশগ্রাম থানার পুলিশের সাহায্যে গুসকরা থেকেই এক জনকে গ্রেফতার করে রেলপুলিশ। বর্ধমানের পুলিশ সুপার সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মির্জা জানান, অন্য দুষ্কৃতীদের খোঁজে জেলা পুলিশ ও রেলপুলিশ তল্লাশি শুরু করেছে। বুধবার ধৃতকে সিজেএম আদালতে তোলা হলে চার দিন রেল পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। |