বেসরকারি রক্ষীরা নেই, ডিপিএলে সঙ্কট চলছেই
বেসরকারি নিরাপত্তারক্ষীরা কাজে যোগ না দেওয়ায় এখনও সঙ্কটে দুর্গাপুর প্রজেক্টস লিমিটেড (ডিপিএল)। আপাতত সংস্থার নিজস্ব সরকারি নিরাপত্তা রক্ষীদের দিয়েই পরিস্থিতি সামালানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংস্থার মুখ্য নিরাপত্তা আধিকারিক সন্ধ্যাবরণ মুখোপাধ্যায়। বুধবার তিনি বলেন, “দু’টি সংস্থার একটি কাজে যোগ দিতে রাজি হয়েছিল। সকালে সেই সংস্থার কর্মীরা প্রহরার কাজও করেন। পরের দিকে অন্য সংস্থার সঙ্গে মিলে তাঁরাও কাজ করতে অস্বীকার করেন।” ফলে, সংস্থার সম্পত্তি ও টাউনশিপের নিরাপত্তা প্রশ্নের মুখে পড়েছে।
ডিপিএল সূত্রের খবর, দীর্ঘদিন শূন্যপদে নিয়োগ না হওয়ায় সরকারি নিরাপত্তারক্ষীর সংখ্যা কমে গিয়েছে। আপাতত ১০৪ জন রক্ষী আছেন। এ দিকে, কারখানার কাজকর্ম এবং আয়তন আগের তুলনায় বহু গুণ বেড়েছে। মূলত দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলের বিভিন্ন কারখানায় বিদ্যুতের জোগান নিশ্চিত করতেই ১৯৬০ সালে এই সংস্থা গড়া হয়েছিল। ৩০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন দু’টি ইউনিট দিয়ে শুরু। ১৯৬৪ সালে ৭৭ মেগাওয়াটের আরও দু’টি ইউনিট যোগ হয়। দু’বছর পরে ৭৭ মেগাওয়াট ক্ষমতার একটি এবং ১৯৮৫ সালে ১১০ মেগাওয়াটের আরও একটি ইউনিট উৎপাদন শুরু করে। কর্মক্ষমতা কমে যাওয়ায় প্রথম তিনটি ইউনিট বন্ধ করে দিতে হয়েছে। কিন্তু ২০০৮ সালের ৩০ এপ্রিল চালু হয়েছে ৩০০ মেগাওয়াটের সপ্তম ইউনিট। এই অবস্থায় শুধু মাত্র ১০৪ জন সরকারি নিরাপত্তারক্ষী দিয়ে কারখানা ও টাউনশিপের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা কার্যত অসম্ভব। আর সে কারণেই নিরাপত্তার দায়িত্ব আংশিক ভাবে বেসরকারি নিরাপত্তারক্ষীদের হাতে দেওয়া হয়েছে।
বর্তমানে কারখানা ও টাউনশিপ মিলিয়ে বেসরকারি নিরাপত্তারক্ষীর সংখ্যা প্রায় ৪২৫। দু’টি বেসরকারি নিরাপত্তা সংস্থার সঙ্গে ডিপিএলের চুক্তি মোতাবেক এই নিরাপত্তারক্ষীরা কাজ করেন। ৩১ অগস্ট দু’টি সংস্থারই চুক্তির সময়সীমা শেষ হয়েছে। কিন্তু পুরনো রক্ষীরা কাজ ছেড়ে যেতে রাজি হননি। অন্য দিকে, নতুন সংস্থাও কাজে যোগ দিতে আগ্রহ দেখায়নি। দুইয়ে মিলে ডিপিএলের নিরাপত্তা ব্যবস্থা বেসামাল হয়ে পড়ে। পুরনো নিরাপত্তারক্ষীরা কারখানার গেটে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে দেন। তাঁদের সঙ্গে বৈঠকে করে মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন ডিপিএল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু তাতেও সমস্যা মেটেনি।
ক্ষুব্ধ নিরাপত্তারক্ষীদের অভিযোগ, বেসরকারি সংস্থার মাধ্যমে তাঁরা সরকারি সংস্থা ডিপিএলে কাজ করেন। কিন্তু সরকার নির্ধারিত মজুরি বা অন্য সুযোগ-সুবিধা পান না। ডিপিএল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, দুই বেসরকারি নিরাপত্তা সংস্থারই সে সব দেখার কথা। সরাসরি তাঁদের কিছু করার নেই। কিন্তু বেসরকারি রক্ষীরা তা মানতে নারাজ। এ ভাবেই চার দিন কেটে গিয়েছে। এ দিন সংস্থার মুখ্য নিরাপত্তা আধিকারিক জানান, সকালে টাউনশিপের নিরাপত্তারক্ষীরা কাজে যোগ দিলেও কারখানার ভিতরের রক্ষীরা যোগ দেননি। পরে টাউনশিপের রক্ষীরাও সরে দাঁড়ান।
শ্রমিক সংগঠনগুলি অবশ্য এই পরিস্থিতির জন্য কর্তৃপক্ষের ‘দায়সারা’ মনোভাবকেই দায়ী করছে। আইএনটিটিইউসি নেতা তথা তৃণমূল কাউন্সিলর বিশ্বনাথ পাড়িয়ালের প্রশ্ন, “নিরাপত্তা সংস্থা বদলাতে পারে। কিন্তু যাঁরা এত দিন কাজ করছেন, তাঁদের সরতে হবে কেন? ডিপিএল সঠিক পেশাদারিত্ব দেখাতে পারছে কোথায়?” সিটু নেতা নরেন সিকদারের দাবি, “কর্তৃপক্ষ মোটেই ঠিক ভাবে বিষয়টি সামলাচ্ছে না। সেটা ইচ্ছাকৃত না কি পেরে উঠছে না, তা আমাদের অজানা।”
সংস্থার মুখ্য নিরাপত্তা আধিকারিক অবশ্য দাবি করেন, বেসরকারি রক্ষীরা সরে থাকায় নিরাপত্তায় কোনও ফাঁক থাকছে না। তাঁর দাবি, “পরিস্থিতি সামাল দিতে সংস্থার নিজস্ব সরকারি নিরাপত্তারক্ষীরা বেশি সক্রিয় হয়ে কাজ করছেন। বেসরকারি সংস্থা দু’টির সঙ্গে কথা বলে সমস্যা মেটানোর চেষ্টা চলছে।” চেষ্টা করেও সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টর মৃগাঙ্ক মজুমদারের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.